২০১৫- ১৬ অর্থবছরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উপর অর্পিত সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রতিবাদে সারাদেশে তিন দিনের ছাত্র ধর্মঘট বিজয় উল্লাসের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। রাজপথ দখল করে শান্তি পূর্ণ ভাবে আন্দোলনের ইতিহাসে এটি অদ্ধিতীয়। বিগত তিন মাস ধরে অর্পিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। আন্দোলন ঠিক রাখার জন্য নো ভ্যাট অন এডুকেশান এর দাবিতে ইস্ট ওয়েস্ট এর শিক্ষার্থীরা নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানব বন্ধন করতে গেলে পুলিশ হঠাৎ তাদের উপর হামলা চালায়। ৩১জন শিক্ষার্থী ও একজন শিক্ষক গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে দাবানলের মত আন্দোলন দিপ্ত হয়ে উঠে সারাদেশে। টানা তিনদিন ঢাকা অচল করে বিজয় উল্লাসে মাতে শিক্ষাথীরা।
এ প্রজন্ম ৫২, ৬২, এর ছাত্র আন্দোলন না দেখলেও ২০১৫ সালের ছাত্র আন্দোলন ইতিহাসকে পুনরাবৃত্তি করেছে। একটি রাজনীতিহীন ছাত্র সমাজ প্রতিবাদের ভাষা খুজে পেয়েছে। শুধু মধ্যবৃত্ত আর নিন্ম মধ্যবৃত্ত নয় এসি গাড়িতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীরাও এ আন্দোলনের সৈনিক এ বিজয়ের উল্লাসি। উচ্চ শিক্ষায় বৈষম্য কারো কাম্য নয়, এ সত্য সবার আগে ছাত্র সমাজকে নাড়া দিয়েছে। অবিভাবক আর বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়ার যে ইতিহাস বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গড়েছে তা পরবর্তী আন্দোলনগুলোর উদাহরণ হয়ে রইলো।
বিজয়ের এ আনন্দ সবার হৃদয় ছুঁয়ে গেল। নো ভ্যাট অন এডুকেশানে প্রকম্পিত অচল ঢাকা আবার সচল হলো। আর কোন প্রকম্প যেন ঢাকাকে আবার অচল করতে না পারে আমাদের সচেতনার পাশপাশি প্রত্যেকের অধিকারের কথা মনে রাখতে হবে পরবর্তী দিনগুলোতে। যে একতা শিক্ষার্থীরা দেখিয়েছে ভবিষ্যতেও যে কোন অন্যায়ে তাদের একতা থাকবে অটুট।
আহতদের সুস্থ্যতা কামনা করি এবং গত কয়েকদিনে পড়াশুনার যে ক্ষতি হয়েছে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমে সেটি পুশিয়ে নেব আমরা। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিজয় আনন্দে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে আগামী দিনেও।
ইঞ্জি: আরিফ চৌধুরী শুভ
উদ্যোগতা ও অন্যতম সংগঠক
নো ভ্যাট অন এডুকেশান