বাংলাদেশে মুহররমের প্রাক্কালে শীর্ষ একজন শিয়া মুসলিম নেতা বলেছেন গত বছর তাদের ওপর হামলা হলেও সুন্নি সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্কে কোনো সমস্যা হয়নি। বুধবারের তাজিয়া মিছিলে সুন্নিদেরও স্বতঃ:ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করছেন তিনি।
ঢাকায় শিয়াদের প্রধান ধর্মীয় স্থান হোসাইনী দালান ইমামবাড়ার অন্যতম সংগঠক ফিরোজ হোসাইন বলছেন, গত বছরে তাদের তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার পরিণতিতে শিয়া-সুন্নিদের মধ্যে সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
“শিয়া এবং সুন্নিরা, আমরা প্রতিবেশী হিসেবে আন্তরিকতা নিয়েই বসবাস করছি। আমাদের সম্পর্কে কোনো চিড় ধরেনি।”
বুধবারের তাজিয়া মিছিলে সুন্নিদের স্বতঃ:ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করছেন ঢাকার মিয়া নেতারা।
ঢাকায় শিয়ারা বরাবরের মতো এবারও ১০ই মহররমের কয়েকদিন আগে থেকে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছেন। দু’দিন ধরে তারা তাজিয়া মিছিল করছেন।
দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে এসব অনুষ্ঠানে অংশ নেন পুরনো ঢাকার আব্দুস সালাম। বিবিসিকে তিনি বলেন, এবার তাদের তাজিয়া মিছিলে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহণের মাধ্যমে গত বছরের বোমা হামলার জবাব দেয়া হয়েছে। বুধবারের মুল তাজিয়া মিছিলেও মানুষের ব্যাপক অংশ গ্রহণ হবে বলে তার ধারণা।
গত বছরের বোমা হামলার ঘটনার প্রেক্ষাপটে তাজিয়া মিছিলের সময় এবার ঢাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে।
গত বছরে ঢাকার হোসাইনী দালান ইমামবাড়ায় তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় জঙ্গিদের বোমা হামলায় দুই জন নিহত
হোসাইনী দালান ইমামবাড়াকে ঘিরে পুরো এলাকায় পুলিশ ও র্যাবের ব্যাপক উপস্থিতি চোখে পড়ছে। এমনকি এই ইমামবাড়ার চারপাশে উঁচু ভবনগুলোতেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গেটে পুলিশ র্যাবের তল্লাশির পরই এর চত্বরে যাওয়া
শিয়ারা তাদের প্রথা অনুযায়ী ৯ই মুহররম মধ্যরাতের পর তাদের মুল তাজিয়া মিছিল বের করতেন এবং পরদিন দিনের বেলাতেও তা আবার বের করা হতো।
এবার নিরাপত্তার কারণে রাতে এবং ভোরে কোনো মিছিল করা হচ্ছে না। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর পক্ষ থেকে সকাল দশটা থেকে তাজিয়া মিছিলগুলো করতে বলা হয়েছে।
তাজিয়া মিছিলে শিয়াদের অনেকেই ছুরি বা চাকু দিয়ে নিজের শরীরে আঘাত করে রক্ত বের করতেন।এবার ছুরি-চাকু-ব্লেড নেয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ঐ অঞ্চলের পুলিশের উপ-কমিশনার মো: ইব্রাহিম খান বলছিলেন, শিয়া নেতাদের সাথে আলোচনা করেই তারা কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেন।
শিয়া নেতাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় দুই লাখের মতো শিয়ার বসবাস। আর সারাদেশে শিয়াদের সংখ্যা দশ লাখের মতো।