বদনাম আছে, তৃতীয় দুনিয়ায় সব কিছুই নাকি ঢিমেতালে চলে। আর উন্নত পশ্চিমা বিশ্ব সবকিছুতেই সুপার ফাস্ট। এটা স্রেফ আপ্ত ধারণা। অনেক সময় পশ্চিমা দুনিয়াও যে চলে গদাই লস্করি চালে —সে প্রমাণ মিললো এবার। নইলে কি আর একটা পার্সেল ৪০ বছর পর গিয়ে পৌঁছে প্রাপকের ঠিকানায়! হ্যাঁ, এমন অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে।
গত শতকের ৭০ দশকের মাঝামাঝিতে পাঠানো একটি পার্সেল এর প্রাপকের ঠিকানায় পৌছেঁছে সম্প্রতি। গত শুক্রবার এই খবর চাউড় হয়েছে দেশটির মিডিয়ায়। তবে এ ঘটনায় হতবাক প্রাপক বেশ সুরসিক লোক। ক্ষোভ-অসন্তুষ্টি গোপন রেখে তিনি শুধু একগাল হেসেছেন। কী আর করা! ‘অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর’—বাংলা প্রবাদটাই মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
পার্সেলটার অর্ডার করেছিলেন মেলবোর্ড টেনিস ক্লাবের এক কর্তাব্যক্তি। তো সেটা আর আসে না দেখে তিনি ভেবেছিলেন আর আসবে না। যথারীতি ভুলেও গেছিলেন এর কথা। সাবেক এই কমিটি মেম্বারের নাম আইরিন গ্যারেট। এতোদিন পর তার নামে যখন এটি এলো, তখন তিনি আর ওই ক্লাবেও নেই, নেই কমিটিতেও। তবু কী আর করা! ৪০ বছর পরে যে এসেছে তাতেই তিনি একগাল অট্টহাস্য হাসলেন: ‘…Irene Garrett, who the package was addressed to, said she “had a good laugh” when the item finally arrived.’’
একটি সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, ধারণা করা হচ্ছে পার্সেলটি অজানা কারণে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় মেইল সার্ভিসের সর্টিং সেন্টারের যন্ত্রপাতির আড়ালে চলে গিয়েছিল। এতোদিন তা কারো নজরেই পড়েনি। সম্প্রতি ওই সংস্থা যখন তাদের অফিসের স্থান বদল করলো তখনই পাওয়া গেল এটি অনেক পুরনো মালপত্রের আড়ালে।
প্রাপক আইরিন এ ব্যাপারে তার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন,:‘ আমার বিশ্বাসই হতে চাচ্ছিল না এমনটাও ঘটতে পারে; আমি তো বেমালুম ভুলেই গিয়েছিলাম এর কথা।যদ্দুর মনে পড়ে আমি যখন ওটার জন্য অর্ডার দিয়েছিলাম তখন সেটা ছিল ১৯৭৫ সাল।’
তার ভাষায়, দেরিতে হলেও সেটা যে এসেছে সেটাই বা কম কিসে! আর হ্যাঁ, পোস্টাল কর্মীদের সেজন্য ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি তিনি: ‘…She thanked Australia Post workers for better-late-than-never attitude.’