প্যারিস হামলায় অংশ নেওয়াদের একজন বলকান অঞ্চল দিয়ে পশ্চিম ইউরোপে প্রবেশ করে বলে গোয়েন্দা ও পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। সিরীয় শরণার্থীর বেশে এই হামলাকারী প্রথমে গ্রিসে প্রবেশ করে।
হামলাকারী ধারণার চেয়েও দ্রুত প্যারিসে পৌঁছায় বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ শরণার্থীরা তখন বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশের সীমান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন। খুব সম্ভবত হাঙ্গেরি তার সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার পরই হামলাকারী শরণার্থীদের দলে মেশে। হাঙ্গেরির ওই সিদ্ধান্তের পরপরই অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের সীমান্তে শরণার্থীর স্রোতে জোয়ার পায়।
স্তেদে দ্য ফ্রান্স স্টেডিয়ামের সামনে নিজেকে উড়িয়ে দেওয়া তিন হামলাকারীর একজনের কাছে সিরীয় পাসপোর্ট পেয়েছে ফরাসি পুলিশ। তার বয়স ২৫ বছর। নাম, আহমাদ আল-মোহাম্মদ। পাসপোর্টের তথ্যানুসারে, তিনি সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিবের বাসিন্দা।
এই পাসপোর্ট পাওয়ার পর থেকেই হামলাকারীদের সত্যিকার পরিচায় জানা ফরাসি গোয়েন্দাদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা এখন পাওয়া যাওয়া পাসপোর্টটি আসল কি না, তা যাচাইয়ের চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রটি। পাসপোর্টটি চুরি বা ছিনতাইও করা হয়ে থাকতে পারে, এমন ধারণাও মাথায় রেখেছেন গোয়েন্দারা।
পাসপোর্টধারী গত ৩ অক্টোবর গ্রিক দ্বীপ লেরসে নিবন্ধিত হন। তার সঙ্গে সে সময় আরও ১৯৮ জন শরণার্থী নিবন্ধিত হন সেখানে। হামলাকারীর ফিঙ্গারপ্রিন্টের সঙ্গে লেরসে নিবন্ধন করাদের একজনের ফিঙ্গারপ্রিন্টের সাদৃশ্যতা পেয়েছেন ফরাসি গোয়েন্দারা।
এদিকে, গ্রিক কর্তৃপক্ষ রোববার (১৫ নভেম্বর) জানিয়েছে, আহমাদ আল-মোহাম্মদ একা লেরসে পৌঁছাননি। তার সঙ্গে কেউ না কেউ অবশ্যই ছিলো। মেসিডনিয়ারও একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বলকান অঞ্চল দিয়ে দু’জন সন্ত্রাসী ফ্রান্সে গিয়ে থাকতে পারে।
মেসিডনিয়ার সূত্রটি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, দেশটির গোয়েন্দারা গ্রিসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা জানতে পেরেছেন, আহমাদ আল-মোহাম্মদের একজন সঙ্গি পিরাউস থেকে মূল গ্রিসে পৌঁছাতে ফেরির টিকিট কিনে দিয়েছিলেন।
লেরসের একজন ট্রাভেল এজেন্ট জানিয়েছেন, তিনি ৪ অক্টোবর ৫৪ দশমিক ৯০ ডলার (চার হাজার ২৫২ টাকা) মূল্য মানের দু’টি ফেরি টিকিট ইস্যু করেন। ওই রাতে নিকটবর্তী কালিমনস দ্বীপ থেকে ফেরিটি রওনা হয়। ৬ অক্টোবর পিরাউসে পৌঁছায় ফেরিটি।