পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডন প্রাথমিকভাবে ২১ জনের নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে। আর সংখ্যা আহত সংখ্যা অর্ধশতাধিক। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহেরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান এক ফেইসবুক পোস্টে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে ডনের খবরে জানানো হয়েছে।
হামলা শুরুর পর নিরাপত্তাবাহিনীর কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে কিছু শিক্ষার্থীকে সরিয়ে নিলেও প্রায় ঘণ্টা তিনেক সেখানে গোলাগুলি চলে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র অসিম বাজওয়া এক টুইটে জানান, সেনা সদস্যওদের গুলিতে হামলাকারীদের অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ভবন ও ব্লকে তল্লাশি চালানো হয়েছে।
ডন লিখেছে, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পেশোয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিত স্কুলে ঢুকে জঙ্গিরা যে কায়দায় ১৩২ শিক্ষার্থীসহ ১৪১ জনকে হত্যা করেছিল, বাচা খানের হামলাও হয়েছে একই কায়দায়।
স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় আবৃত্তির অনুষ্ঠান চলার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছন দিকের সীমানা প্রাচীর ডিঙিয়ে ভেতরে ঢোকে আট থেকে দশজন বন্দুকধারী। ভেতরে ঢুকেই তারা কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটায় এবং গুলি শুরু করে।
পাখতুন প্রদেশের এক সময়ের জাতীয়তাবাদী নেতা বাচা খানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভেতরে তখন একটি আবৃত্তির অনুষ্ঠান চলছিল। তার নামেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ হয়েছে। গুলি শুরুর পর শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় ছুটোছুটি শুরু করেন। অনেকে পরীক্ষার হল বা টয়লেটের ভেতরেও ঢুকে পড়েন।
হামলার খবর পেয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। দুই পক্ষের গোলাগুলির মধ্যেই অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে সরিয়ে নেন তারা।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে আসা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের গোলাগুলি চলার সময় বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়। বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মীও সেখানে ভিড় করেন। জরুরি পরিস্থিতির জন্য ২০টি অ্যাম্বুলেন্স এনে রাখা হয় সেখানে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, “হামলাকারীরা সবাই বয়সে তরুণ, আমাদের মতোই। তাদের হাতে আমি একে ৪৭ রাইফেল দেখেছি। সেনাবাহিনী যে ধরনের জ্যাকেট পরে, তেমন জ্যাকেট দেখেছি তাদের গায়ে।”
ওই শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থী থাকলেও ছুটির কারণে বুধবার ক্লাস বন্ধ ছিল। ফলে হোস্টেলে শ’ তিনেক শিক্ষার্থী আর আবৃত্তির অনুষ্ঠানে জড়ো হওয়া লোকজন ছাড়া খুব বেশি ভিড় ছিল না।