নীলফামারী: শারদীয় দুর্গোৎসব ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে মণ্ডপে মণ্ডপে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কারিগররা। গত বছরের চেয়ে এবারে বেশি সংখ্যক মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের জোর প্রস্তুতি চলছে নীলফামারীতে।
এরইমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করে ফেলেছেন শিল্পিরা। ১৮ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া পাঁচ দিনের শারদীয় উৎসব আয়োজনে তাই যেন দম ফেলার ফুসরত নেই প্রতিমা কারিগর বা শিল্পিদের।
গত বছর জেলায় ৭৭৭টি মণ্ডপে শারদীয় উৎসব হলেও চলতি বছর ৮১২টি মণ্ডপে উৎসব আয়োজন চলছে বলে জানিয়েছেন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা।
নীলফামারী পৌরসভার হাড়োয়া দেবিরডাঙ্গা ত্রি-নয়নী সেবা পূজা মণ্ডপে গিয়ে দেখা গেছে প্রতিমা তৈরিতে শিল্পিদের ব্যস্ততার চিত্র। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যেন দম ফেলার ফুসরত নেই তাদের।
পাঁচজনের দল নিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বরের থেকে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ। যার নেতৃত্বে রয়েছেন দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার রামকলা গ্রামের জয়ন্ত কুমার রায়। দলের প্রধান জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, এরই মধ্যে দেবিদুর্গা, লক্ষ্মী, স্বরস্বত্বী, গণেশ, কার্তিক, অশুর, সিংহ ও ব্রম্মা বামানোর কাজ হয়ে গেছে। চলছে হাত ও মাথা লাগানোর পর্ব। দু’তিনদিনের মধ্যে রং আর সাজ সজ্জার কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
মন্দির কমিটির সভাপতি নরেশ চন্দ্র রায় বলেন, মণ্ডপে এবারে ৬১তম শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নীলফামারী জেলার মধ্যে দেবিরডাঙ্গা ঐতিহ্যবাহী পুরোনো একটি কেন্দ্র। দেশের বিভিন্ন স্থানে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনে সুনাম রয়েছে এখানকার। এবারো শারদীয় দুর্গোৎসবে দেবিরডাঙ্গা সুনাম লাভ করবে বলে জানান তিনি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসের হিসেব মতে গত বছর জেলায় ৭৭৭টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন হয়েছিলো। এরমধ্যে নীলফামারী সদরে ২৫৬টি, সৈয়দপুরে ৭৫টি, ডোমারে ৮৯টি, ডিমলায় ৭৭টি, জলঢাকায় ১৫২টি এবং কিশোরগঞ্জ উপজেলায় মণ্ডপের সংখ্যা ছিলো ১২৮টি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, ৮১২টি মণ্ডপের মধ্যে নীলফামারী সদরে ২৬৮টি, ডোমারে ৯০টি, ডিমলায় ৭৭টি, জলঢাকায় ১৬০টি, কিশোরগঞ্জে ১৩৬টি ও সৈয়দপুরে ৮১টি রয়েছে।
পূজা উদযাপন পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি ও জেলা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট অক্ষ্ময় কুমার রায় বলেন, ইতোমধ্যে শারদীয় দুর্গোৎসব আয়োজনে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উৎসব নির্বিঘ্নে করতে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নীলফামারী নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট রামেন্দ্র বর্ধন বাপ্পী বলেন, প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন শুধু রং আর সাজ সজ্জার কাজ রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে উৎসবে মিলিত হবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।