শনিবার রাজধানীতে জঙ্গিবিরোধী এক সমাবেশে তিনি বলেন, “আমরা চাই না বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ হোক, কাউকে আঙুল দিয়ে টার্গেট করে হত্যা করা- এটা ঠিক না। এটাকে জিহাদ বলে না।”
গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “দুই-একটা জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। হয়তো এ রকম দুই-চারটা ঘটনা ঘটতে পারে। একটি ঘটনার কারণে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে সেটা কিন্তু সঠিক না।”
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, “আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই, তাহলে বাংলাদেশে জঙ্গিতো দূরের কথা ‘জ’ শব্দটিও থাকবে না।
“বাংলাদেশে যারা সন্ত্রাস করে তারা ঠিকমত সন্ত্রাসও করতে পারে না। সুতরাং তাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই।”
জঙ্গিদের ‘কাপুরুষ’ আখ্যা দিয়ে সৈয়দ আশরাফ বলেন, “তাদের না আছে কোনো বন্ধু, না আছে কোনো আত্মশক্তি, তারা কাপুরুষ-ভীতু। যারা রাতের অন্ধকারে নিরীহ মানুষকে গুপ্তহত্যা করে তারা কাপুরুষ।
“এ কাপুরুষের দল কোনোভাবেই কোনো সংগ্রামে জয়লাভ করতে পারে না এবং পারবেও না। হয়তো কিছু মায়ের বুক এবং পিতার কোল খালি হতে পারে।”
সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগ।
সমাবেশে বক্তব্যে সব ধর্মের মানুষের প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানিয়ে সৈয়দ আশরাফ বলেন, “কোনো ধর্মকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমরা মুসলমান ধর্ম ঊর্ধ্ব ধর্ম, হিন্দু ধর্ম নিম্ন বর্ণের ধর্ম, আর ইহুদিরা মানুষই না- এভাবে যদি মানুষকে মূল্যায়ন করা হয় তাহলে বিশ্বে বিভাজন আরও বাড়বে।
“আমাদের ধর্মের মানুষ যেমন পয়গম্বরের উম্মত, তেমনি ইহুদিরা পয়গম্বরের উম্মত। তাদের ধর্মের সাথে আমাদের বেশ কিছু মিল রয়েছে। আমরা যদি অন্যের ধর্মকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করি এবং সন্মান না করি, তাহলে তারা আমাদের ধর্মকেও সন্মান করবে না।”
গুলশান হামলার সমালোচনা করে আশরাফ বলেন, “রেস্টুরেন্টে গিয়ে নিরীহ দেশি-বিদেশিকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করলেই জিহাদ প্রতিষ্ঠা হবে না। এখানে জঙ্গিও মারা গেল এবং যারা খেতে আসলো তারও মারা গেল- এতে লাভটা কার হলো? কয়েকজন বিদেশিকে হত্যা করলেই ইসলাম সারা বিশ্বে কায়েম হবে? নিরীহ মুসলমানদের হত্যা করলেই ইসলাম ধর্ম শক্তিশালী হবে না।”
যুবলীগ সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, “ধর্মকে ব্যবহার করে কীভাবে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হয় তার প্রকৃত উদাহরণ কে? জিয়াউর রহমান। নাগরিকত্ব বাতিল করার পরও একাত্তরের শীর্ষ দালাল বাংলাদেশের শত্রু গোলাম আজমকে ফিরিয়ে এনে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছিল কে? জিয়াউর রহমান। তার দখলদারিত্বের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের যে প্রাতিষ্ঠানিক অর্জন ছিল তার সবই ভুলুণ্ঠিত করেছিল।”
জিয়াউর রহমানকে ‘পাকিস্তানি শাসক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “তার দখলদারিত্বের শাসনামলে এক বৈঠকে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন। জিয়াউর রহমান বলেছিলেন- আগে হিন্দু লেখা জাতীয় সংগীত বদলাতে হবে, তারপর জাতীয় পতাকা বদলাব। তাই আজ প্রমাণিত সত্য, আজকের বাংলাদেশে আদর্শিক দুর্দশার ‘মহা ভিলেন’ জিয়াউর রহমান।”
যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাঈনুল হোসেন খাঁন নিখিলের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল বক্তব্য রাখেন।