অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : ‘ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দার’ এমনই অবস্থা সরকারী অর্থায়ণে নির্মিত ব্রিজের। খাল বা রাস্তা কিছুই নেই, আশপাশে নেই কোন জনবসতি, তবুও ধানের জমি নষ্ট করে নির্মাণ করা হয়েছে সাড়ে ২২ লাখ টাকায় ব্রিজ। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এক অফিস সহকারীকে খুশি করতেই তার নিজ এলাকায় এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। সাড়ে ২২ লাখ টাকায় নির্মিত ওই ব্রিজ দিয়ে জনমানব তো দূরের কথা- শিয়াল-কুকুরও যাতায়াত করেনা।
সংশ্লিষ্টসূত্র ও সরেজমিনে জানা গেছে, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী সিরাজুল হক পাইকের নিজ এলাকা উপজেলার যবসেন গ্রামে ৩৩ ফুট দৈর্ঘ্যরে ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে আগৈলঝাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। নির্মিত ব্রীজের জায়গায় খাল বা রাস্তা কোনটি না থাকলেও যুবদল নেতা রহিম মোল্লার বাড়ির পশ্চিমপাশের জমিতে ‘খাল’ দেখিয়ে ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে আগৈলঝাড়া-রাজিহার সড়কে উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী যবসেন গ্রামে ওই ব্রিজ নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয় মেসার্স ইয়াসিন ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। ব্রিজ নির্মাণে ব্যয় হয় সাড়ে ২২ লাখ টাকা। নির্মিত ওই ব্রিজের সাথে চলাচলের নেই কোন রাস্তা। এমনকি পশ্চিমপাশেও নেই কোন বাড়ি। ফলে মানুষের কোন চলাচল নেই ওই ব্রিজ দিয়ে। রহিম মোল্লা অভিযোগে বলেন, খাল বা রাস্তা না থাকলেও মূল রাস্তার সাথে তার ধান চাষের জমি নষ্ট করে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী সিরাজুল হককে সন্তুষ্ট করার জন্য ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। তবে ওই ব্রিজের কোন ব্যবহার এপর্যন্ত হয়নি। জনমানব চলাচল তো দূরের কথা, শিয়াল-কুকুরও পার হয়না ওই ব্রিজ দিয়ে। ধান-পাট আর কাঁথা-কাপড় শুকানো ছাড়া আর কোন কাজে ওই ব্রিজের ব্যবহার হয়না। এলাকাবাসী অভিযোগে বলেন, সরকারী অর্থের ব্রিজটি অন্য কোন জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নির্মিত হলে মানুষ সুফল ভোগ করতে পারত। প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সরকারী অর্থ ব্যয়ে কিছু কিছু এমন প্রকল্প গ্রহণ করে যা অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হানিফ সিকদার জানান, জমি থেকে পাকা ফসল তুলতে উল্লেখিত ব্রিজ ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী সিরাজুল হক পাইক স্পেশালভাবে বরাদ্দ করিয়ে নির্মাণ করান।