Menu |||

ঐতিহাসিক বদর দিবস ও বর্তমান বিশ্ব – মোঃ রবিউল ইসলাম রুবেল

উপসম্পাদকীয়: : ১৭ই রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস। এই দিনে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালল্লাম এর নেতৃত্বে পবিত্র মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে ইসলাম তথা মুসলমানদের বিজয়ের ধারা সূচিত হয়েছিল এবং পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্রক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

বদরের যুদ্ধ ছিল মুসলমানদের জন্য প্রথম সমন্বিত এবং যতটুকু সম্ভব পরিকল্পিত যুদ্ধ। যুদ্ধের ময়দানে সুবিধাজনক অবস্থান নেয়া, পানির উৎস নিয়ন্ত্রণে রাখা, সূর্যের আলোর গতিবেগ লক্ষ্য করে সৈন্যদের দাঁড় করানো এবং যুদ্ধের আগে শত্রুদলের চার পাশ পর্যবেক্ষণে রাখা ইত্যাদি।

মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে জনবল ছিল মাত্র ৩১৩ জন। এর মধ্যে ৭০ জন মুহাজির ও বাকিরা আনসার। জেহাদে অংশ নেয়া সাহাবী (রা.) মধ্যে ২ জন ছিলেন উষ্টারোহী, ৮০ জন তলোয়ারধারী এবং অবশিষ্টগন ছিলেন তীর বা বর্শধারী। অন্যদিকে কাফের কুরাইশ বাহিনী বিপুল অস্ত্র সম্ভারসহ সংখ্যায় ছিল এক হাজার ও তন্মধ্যে ১০০ জন অশ্বারোহী, ৭০০ জন উষ্ট্রারোহী ও বাকিরা পদব্রজী ছিল। তাদের সঙ্গে ছিলো নর্তকী দল, যারা মুসলিমদের বদনামি ও বিদ্রূপ করে গান গাইছিলো।

ঐতিহাসিক এ যুদ্ধের সেনাপতি ছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার আগে তিনি দোয়া করেন- ‘হে আল্লাহ! ক্ষুদ্র এ (মুসলিম) দলটি যদি আজ শেষ হয়ে যায়, তবে কিয়ামত পর্যন্ত তোমার নাম নেওয়ার মতো কোনো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না।’

দু’আ শেষে মাথা তুলে বন্ধু আবু বকর (রা.) কে বললেন, সুসংবাদ আবু বকর শুকরিয়া আদায় কর। ইনশাআল্লাহ! আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত।
আল্লাহ সুবহানা ওয়াতাআলা বলেন, “অবশ্যই কাফিররা পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠদেশ দেখিয়ে পলায়ন করবে।” [সূরা আল-কামার: ৪৫]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেনা নায়করূপে সকলের সামনে দাঁড়িয়ে আদেশ করলেন সাবধান! কেউ আগে আক্রমণ করবে না। প্রতিপক্ষ আক্রমণ করলে প্রথমে তীর নিক্ষেপ করে প্রতিহত করবে। এখনই তরবারী বের করবে না। সাবধান! আমি নির্দেশ না দিলে আক্রমণ করবে না। অতঃপর কুরাইশরাই আগে তীর নিক্ষেপ করল।
নবীজী তখন সকল যোদ্ধার সামনে অগ্রসর হলেন। জিহাদের ফযীলত বর্ণনা করলেন এবং সকলকে প্রস্তুত হতে বললেন।

আর তিনি মুসলিম যোদ্ধাদের যুদ্ধের প্রতি উৎসাহ দিয়ে বললেন, “ওই সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, আজ যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, ধৈর্যধারণ করে সওয়াবের আশায় সামনে অগ্রসর হয়ে পৃষ্ঠদেশ প্রদর্শন না করে যুদ্ধ করে মারা যাবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।”

এ কথা শুনে ‘উমাইর ইবনুল হুমাম আল আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু দাঁড়ালেন, আর তার হাতে ছিল কিছু খেজুর; যা তিনি খাচ্ছিলেন; তিনি বলতে লাগলেন: হে আল্লাহর রাসূল! জান্নাত কি আকাশ ও জমিন পরিমাণ প্রশস্ত? উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। তখন ‘উমাইর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, বিরাট ব্যাপার, বিরাট ব্যাপার, হে আল্লাহর রাসূল! আমার মাঝে আর জান্নাতে প্রবেশের মাঝে পার্থক্য এতটুকুই যে, ওই কাফিররা আমাকে হত্যা করবে। আমি যদি এ খেজুরগুলো খাওয়া শেষ করা পরিমান সময় জীবিত থাকি তাহলে তো অনেক লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হবে, এ কথা বলেই তিনি খেজুরগুলো নিক্ষেপ করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেন এবং নিহত হলেন, আল্লাহ তাঁর উপর সন্তুষ্ট হোন।
তুমুল যুদ্ধ শুরু হলো। যুদ্ধ বীর হামযা, আলী কুরাইশদের বিরুদ্ধে সম্মুখীন হলেন। কুরাইশ দলপতি উৎবা ইসলামের প্রধান শত্রু উমাইয়া ইবনে খালাফ ও আবু জেহেল নিহত হলো। যুদ্ধ শেষে ফলাফলে দেখা গেল ৭০ জন কুরাইশ সৈন্য নিহত হয়েছে। অপর ৭০ জন বন্দি হলো। ১৪ কুরাইশ নেতা যারা নবীজিকে হত্যা করার সংকল্প করেছিল তাদের এগার জন বদর যুদ্ধে মারা গেল। মুসলমানদের মধ্যে ১৪ জন সাহাবী শাহাদত বরণ করেন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘একটি দল লড়াই করছিল আল্লাহর পথে এবং অপর দলটি কাফির। {সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩}
মহান আল্লাহ দয়া করে সেদিন ফেরেশতাদের মাধ্যমে মুমিনদের সাহায্য করেছিলেন। যদিও এটি ক্ষুদ্র একটি যুদ্ধ ছিল, কিন্তু এর প্রভাবে বিশ্বের তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে যায়। বাতাসের গতি পরিবর্তন হয়ে যায়। যারা একদিন আগেও ইসলামের যাত্রাপথ রোধ করাকে সহজ মনে করেছিল, তারা বুঝতে পেরেছে যে ইসলামের এ অগ্রযাত্রাকে রোধ করা কেবল কঠিনই নয়, অসম্ভবও বটে।

‘স্মরণ কর, যখন আপনার রব ফেরেশতাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করেন যে, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের সাথে আছি। সুতরাং যারা ঈমান এনেছে তোমরা তাদেরকে অনড় রাখ। অচিরেই আমি ভীতি ঢেলে দেব তাদের হৃদয়ে যারা কুফরী করেছে। অতএব তোমরা আঘাত কর ঘাড়ের উপরে এবং আঘাত কর তাদের প্রত্যেক আঙুলের অগ্রভাগে। এটি এ কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করেছে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করবে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর। এটি আযাব, সুতরাং তোমরা তা আস্বাদন কর। আর নিশ্চয় কাফিরদের জন্য রয়েছে আগুনের আযাব।’ {সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ১২-১৪}

সবচেয়ে বড় শিক্ষণীয় বিষয় ছিল সব কিছুর জন্য আল্লাহ্র ওপর ভরসা বা তাওয়াক্কুল করা। তাওয়াক্কুলের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যায় আমরা বলতে পারি যে, নিজের দ্বারা সম্ভব সর্বপ্রকার প্রস্ত্ততি গ্রহণ করা হবে, কিন্তু সাফল্যের জন্য সে প্রস্ত্ততির ওপর নির্ভর করা যাবে না, সাফল্যের জন্য নির্ভর করতে হবে একমাত্র আল্লাহ্ তা’য়ালার ওপর। বদরের যুদ্ধে মুসলমানেরা জয়ী না হলে কী হতে পারত, সেটা কল্পনা করার প্রয়োজন নেই। আল্লাহ্ তায়ালার অসংখ্য দয়া আর মেহেরবানির বদৌলতে মুসলমানদের অগ্রযাত্রার ভিত্তি সুদৃঢ় হয়েছিল এবং বদরের যুদ্ধের মাধ্যমে তিনি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন।

আজ চৌদ্দ শ’ চৌত্রিশ বছর পর বিশ্বের সর্বস্তরের মুসলমানগণ সেই অকুতোভয় সৈনিকদের স্মরণ করবেন এবং নিজেরাও প্রয়োজনে বদরের মতো যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে পারেন সেই মানসিকতায় বলীয়ান রূপে নিজেদেরও সজ্জিত করবেন বলে আশা করি। তবে বদরের যুদ্ধ যেমন ছিল আত্মরক্ষার্থে, তেমনি মুসলমানগণের সব যুদ্ধ হবে আত্মরক্ষার্থে, সত্যের অনুকূলে, নির্যাতিত-নিপীড়িতদের অনুকূলে এবং কল্যাণ কামনায়।

যুদ্ধের ময়দানেও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনন্য আদর্শ স্থাপন করেন। তখনকার সময় যুদ্ধবন্দীদের হয় হত্যা করা হত নতুবা চিরদিনের জন্য বংশ পরম্পরায় দাস হিসেবে রেখে দিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসব রীতিনীতি ভঙ্গ করে ঘোষণা করেন, ‘তোমরা বন্দীদের সাথে সৎ ব্যবহার কর।’ আবু আজিজ নামে এক বন্দী পরবর্তীতে বলেন, ‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদেশে মুসলমানরা আমাদের সাথে খুব ভালো ব্যবহার করেছিল। তারা আমাদের পেট ভরে খেতে দিতেন অথচ তারা কম খেতেন।’

স্যার উলিয়াম মুরের মত খৃষ্টান লেখক লিখেছেন, ‘মুহাম্মদের আমলে মদীনাবাসীগণ এবং মুহাজিরগণ বন্দীদের সাথে বিশেষ ব্যবহার করেছিলেন। একজন বন্দী নিজেই বলেছেন,‘আল্লাহ মদীনাবাসীর মঙ্গল করুন,‘তারা আমাদেরকে উটে ও ঘোড়ায় সওয়ার করে দিতেন আর নিজেরা পায়ে হেঁটে যেতেন। তারা আমাদেরকে ময়দার রুটি করে দিতেন আর নিজেরা খেজুর খেতেন।’

এ ছিল বদর যুদ্ধ বন্দীদের সাথে সৎ ব্যবহারের আংশিক বর্ণনা। আজকের পৃথিবীর শক্তিমানদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন থেকে শিখার অনেক কিছু আছে। পৃথিবী তাদের করুণ পরিণতিও দেখতে পারবে। কোন জালিমই মহান আল্লাহর পাকরাও থেকে ছাড় পাবে না।

আল্লাহ তা‘আলা বদর দিবসকে ‘ইয়াওমুল ফুরকান’ তথা সত্য-মিথ্যার পার্থক্য নিরূপণের দিন বলে নাম রেখেছেন; কেননা আল্লাহ তা‘আলা সেদিন তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনদের বিজয়ী এবং কাফির ও মুশরিকদের পরাজিত করার মাধ্যমে হক্ব ও বাতিলের পার্থক্য সূচিত করেছেন।

ইসলামের জিহাদ যে কেবল জয়ের জন্য যুদ্ধ কিংবা রক্ত ও মৃত্যুর বিভীষিকা যে জিহাদের মূল চিত্র ও চেতনা নয়, বদরের প্রান্তরে প্রার্থনার কান্না, যুদ্ধকালে রোজা রেখে ক্ষুধার্ত থাকা আর শান্তি ও সত্য প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ধরে রাখার মধ্য দিয়ে বদর যুদ্ধ তার এক উজ্জ্বল মানবিক রূপ উপহার দিয়েছে। বদর যুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ হচ্ছে নাখলার খণ্ডযুদ্ধ, কাফেরদের রণপ্রস্তুতি, আবু সুফিয়ানের অপপ্রচার, যুদ্ধ প্রস্তুতির জন্য ওহি লাভ, মক্কাবাসীর ক্ষোভ ইত্যাদি। এসব কারণে আবু জেহেলের নেতৃত্বে এক হাজার সৈন্য নিয়ে মদিনা আক্রমণ। যেসব পরোক্ষ কারণে বদর যুদ্ধের সূচনা হয়েছে তা হচ্ছে, মদিনা শরিফে সাফল্যজনকভাবে ইসলাম সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ায় কুরাইশদের হিংসা, মোনাফিকদের সরদার আবদুল্লাহ বিন উবাইয়ের ও ইহুদিদের ষড়যন্ত্র, কুরাইশদের যুদ্ধের হুমকি, তাদের বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা, কাফেরদের আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা, ইসলামের ক্রমবর্ধমান শক্তির ধ্বংস সাধন করা এবং নবীজি (সা.)কে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করার অশুভ বাসনা।

বদর যুদ্ধের সফলতা হচ্ছে, ইসলামের ঐতিহাসিক বিজয়, মুসলমানদের ইমানের পরিপক্বতা অর্জন, আত্মবিশ্বাসের সৃষ্টি, বিশ্ব বিজয়ের সূচনা, সর্বোত্তম ইতিহাস সৃষ্টি, প্রথম সামরিক বিজয়, কুরাইশদের শক্তি খর্ব, ইসলামী রাষ্ট্রের পত্তন, নবযুগের সূচনা, চূড়ান্ত ভাগ্য নির্ধারক যুদ্ধ, রাজনৈতিক ক্ষমতার ভিত্তি স্থাপন, জিহাদের অনুপ্রেরণা, আল্লাহর ওপর প্রগাঢ় আস্থা অর্জন, ইসলাম ও মহানবী (সা.)-এর প্রতিষ্ঠা, এবং মুসলমানদের পক্ষে আল্লাহ তাআলার গায়েবি সাহায্যের জ্বলন্ত প্রমাণ।

আজকে মিয়ানমার,সিরিয়া,আফগান,কাশ্মীরসহ বিশ্বের সর্বত্র মুসলমানদের রক্ত ঝরছে। মজলুমদের কান্নার আওয়াজে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হচ্ছে কিন্তু, আমাদের হৃদয়ে তেমন নাড়া দিচ্ছে না। আজকে আমরা রমজানে হরেক রকম ভুরী ভোজের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত! তাকওয়ার প্রতিযোগীতায় মত্ত না হয়ে আমরা প্রতিযোগিতা করছি কে কার থেকে কত সুন্দর ও বেশী দামী জামাটা কিনতে পারি।

আল্লাহ বলেছেন – তোমাদের কি হলো, তোমরা আল্লাহর পথে অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্য লড়ছো না , যারা দুর্বলতার কারণে নির্যাতিত হচ্ছে? তারা ফরিয়াদ করছে , হে আমাদের রব! এই জনপদ থেকে আমাদের বের করে নি য়ে যাও, যার অধিবাসীরা জালেম এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের কোন বন্ধু, অভিভাবক ও সাহায্যকারী তৈরি করে দাও। (সূরা-নিসা-৭৫)

মূলত রমজান নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করার মাস। এ রমজানে সাহাবায়ে কেরাম নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করার পাশাপাশি নফস পূজারি তাগুতি শক্তির বিরুদ্ধে যেভাবে নিজেদের আত্মনিয়োজিত করেছেন, ইতিহাসে তার দৃষ্টান্ত বিরল। তাই আল্লাহ তাআলা তাদের সর্বাধিক মর্যাদার অধিকারী মুসলমান হিসেবে কবুল করে নিয়েছেন। আমাদের উচিত তাদের অনুসরণ করা।

হে আল্লাহ! আমাদের ইসলাম দিয়ে আমাদেরকে বিজয় দান করুন, আমাদেরকে আপনার দ্বীনের সাহায্যকারী এবং আপনার দ্বীনের দা‘ঈ হিসেবে কবুল করুন। আর আপনার সাক্ষাতের সময় পর্যন্ত আপনি আমাদেরকে এ দ্বীনের ওপর অনঢ-অটল রাখুন।

আজকের এই দিনে মহান মাবুদের দরবারে বিশ্বের সকল মজলুম মানবতার মুক্তি চাই। ইসলামের শত্রু তথা জালিমদের হেদায়ত চাই। হে আল্লাহ! মানবতার মুক্তি দিন।

লেখকঃ কলামিষ্ট ও গবেষক
Social Media: www.facebook.com/rabiulislam.official

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী

» কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে

» সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে

» ফারুকীর পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়

» পাকিস্তান থেকে সেই আলোচিত জাহাজে যা যা এল

» মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার

» কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

» ক্ষমা না চাইলে নুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়

» বাকু থেকে ফিরলেন ড. মুহাম্মাদ ইউনূস

» শুক্রবার আহত ও শহীদদের স্মরণে কর্মসূচি দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

ঐতিহাসিক বদর দিবস ও বর্তমান বিশ্ব – মোঃ রবিউল ইসলাম রুবেল

উপসম্পাদকীয়: : ১৭ই রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস। এই দিনে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালল্লাম এর নেতৃত্বে পবিত্র মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে ইসলাম তথা মুসলমানদের বিজয়ের ধারা সূচিত হয়েছিল এবং পূর্ণাঙ্গ ইসলামী রাষ্ট্রক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

বদরের যুদ্ধ ছিল মুসলমানদের জন্য প্রথম সমন্বিত এবং যতটুকু সম্ভব পরিকল্পিত যুদ্ধ। যুদ্ধের ময়দানে সুবিধাজনক অবস্থান নেয়া, পানির উৎস নিয়ন্ত্রণে রাখা, সূর্যের আলোর গতিবেগ লক্ষ্য করে সৈন্যদের দাঁড় করানো এবং যুদ্ধের আগে শত্রুদলের চার পাশ পর্যবেক্ষণে রাখা ইত্যাদি।

মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে জনবল ছিল মাত্র ৩১৩ জন। এর মধ্যে ৭০ জন মুহাজির ও বাকিরা আনসার। জেহাদে অংশ নেয়া সাহাবী (রা.) মধ্যে ২ জন ছিলেন উষ্টারোহী, ৮০ জন তলোয়ারধারী এবং অবশিষ্টগন ছিলেন তীর বা বর্শধারী। অন্যদিকে কাফের কুরাইশ বাহিনী বিপুল অস্ত্র সম্ভারসহ সংখ্যায় ছিল এক হাজার ও তন্মধ্যে ১০০ জন অশ্বারোহী, ৭০০ জন উষ্ট্রারোহী ও বাকিরা পদব্রজী ছিল। তাদের সঙ্গে ছিলো নর্তকী দল, যারা মুসলিমদের বদনামি ও বিদ্রূপ করে গান গাইছিলো।

ঐতিহাসিক এ যুদ্ধের সেনাপতি ছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার আগে তিনি দোয়া করেন- ‘হে আল্লাহ! ক্ষুদ্র এ (মুসলিম) দলটি যদি আজ শেষ হয়ে যায়, তবে কিয়ামত পর্যন্ত তোমার নাম নেওয়ার মতো কোনো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না।’

দু’আ শেষে মাথা তুলে বন্ধু আবু বকর (রা.) কে বললেন, সুসংবাদ আবু বকর শুকরিয়া আদায় কর। ইনশাআল্লাহ! আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত।
আল্লাহ সুবহানা ওয়াতাআলা বলেন, “অবশ্যই কাফিররা পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠদেশ দেখিয়ে পলায়ন করবে।” [সূরা আল-কামার: ৪৫]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেনা নায়করূপে সকলের সামনে দাঁড়িয়ে আদেশ করলেন সাবধান! কেউ আগে আক্রমণ করবে না। প্রতিপক্ষ আক্রমণ করলে প্রথমে তীর নিক্ষেপ করে প্রতিহত করবে। এখনই তরবারী বের করবে না। সাবধান! আমি নির্দেশ না দিলে আক্রমণ করবে না। অতঃপর কুরাইশরাই আগে তীর নিক্ষেপ করল।
নবীজী তখন সকল যোদ্ধার সামনে অগ্রসর হলেন। জিহাদের ফযীলত বর্ণনা করলেন এবং সকলকে প্রস্তুত হতে বললেন।

আর তিনি মুসলিম যোদ্ধাদের যুদ্ধের প্রতি উৎসাহ দিয়ে বললেন, “ওই সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, আজ যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, ধৈর্যধারণ করে সওয়াবের আশায় সামনে অগ্রসর হয়ে পৃষ্ঠদেশ প্রদর্শন না করে যুদ্ধ করে মারা যাবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।”

এ কথা শুনে ‘উমাইর ইবনুল হুমাম আল আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু দাঁড়ালেন, আর তার হাতে ছিল কিছু খেজুর; যা তিনি খাচ্ছিলেন; তিনি বলতে লাগলেন: হে আল্লাহর রাসূল! জান্নাত কি আকাশ ও জমিন পরিমাণ প্রশস্ত? উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। তখন ‘উমাইর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, বিরাট ব্যাপার, বিরাট ব্যাপার, হে আল্লাহর রাসূল! আমার মাঝে আর জান্নাতে প্রবেশের মাঝে পার্থক্য এতটুকুই যে, ওই কাফিররা আমাকে হত্যা করবে। আমি যদি এ খেজুরগুলো খাওয়া শেষ করা পরিমান সময় জীবিত থাকি তাহলে তো অনেক লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হবে, এ কথা বলেই তিনি খেজুরগুলো নিক্ষেপ করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেন এবং নিহত হলেন, আল্লাহ তাঁর উপর সন্তুষ্ট হোন।
তুমুল যুদ্ধ শুরু হলো। যুদ্ধ বীর হামযা, আলী কুরাইশদের বিরুদ্ধে সম্মুখীন হলেন। কুরাইশ দলপতি উৎবা ইসলামের প্রধান শত্রু উমাইয়া ইবনে খালাফ ও আবু জেহেল নিহত হলো। যুদ্ধ শেষে ফলাফলে দেখা গেল ৭০ জন কুরাইশ সৈন্য নিহত হয়েছে। অপর ৭০ জন বন্দি হলো। ১৪ কুরাইশ নেতা যারা নবীজিকে হত্যা করার সংকল্প করেছিল তাদের এগার জন বদর যুদ্ধে মারা গেল। মুসলমানদের মধ্যে ১৪ জন সাহাবী শাহাদত বরণ করেন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘একটি দল লড়াই করছিল আল্লাহর পথে এবং অপর দলটি কাফির। {সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩}
মহান আল্লাহ দয়া করে সেদিন ফেরেশতাদের মাধ্যমে মুমিনদের সাহায্য করেছিলেন। যদিও এটি ক্ষুদ্র একটি যুদ্ধ ছিল, কিন্তু এর প্রভাবে বিশ্বের তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে যায়। বাতাসের গতি পরিবর্তন হয়ে যায়। যারা একদিন আগেও ইসলামের যাত্রাপথ রোধ করাকে সহজ মনে করেছিল, তারা বুঝতে পেরেছে যে ইসলামের এ অগ্রযাত্রাকে রোধ করা কেবল কঠিনই নয়, অসম্ভবও বটে।

‘স্মরণ কর, যখন আপনার রব ফেরেশতাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করেন যে, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের সাথে আছি। সুতরাং যারা ঈমান এনেছে তোমরা তাদেরকে অনড় রাখ। অচিরেই আমি ভীতি ঢেলে দেব তাদের হৃদয়ে যারা কুফরী করেছে। অতএব তোমরা আঘাত কর ঘাড়ের উপরে এবং আঘাত কর তাদের প্রত্যেক আঙুলের অগ্রভাগে। এটি এ কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করেছে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করবে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর। এটি আযাব, সুতরাং তোমরা তা আস্বাদন কর। আর নিশ্চয় কাফিরদের জন্য রয়েছে আগুনের আযাব।’ {সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ১২-১৪}

সবচেয়ে বড় শিক্ষণীয় বিষয় ছিল সব কিছুর জন্য আল্লাহ্র ওপর ভরসা বা তাওয়াক্কুল করা। তাওয়াক্কুলের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যায় আমরা বলতে পারি যে, নিজের দ্বারা সম্ভব সর্বপ্রকার প্রস্ত্ততি গ্রহণ করা হবে, কিন্তু সাফল্যের জন্য সে প্রস্ত্ততির ওপর নির্ভর করা যাবে না, সাফল্যের জন্য নির্ভর করতে হবে একমাত্র আল্লাহ্ তা’য়ালার ওপর। বদরের যুদ্ধে মুসলমানেরা জয়ী না হলে কী হতে পারত, সেটা কল্পনা করার প্রয়োজন নেই। আল্লাহ্ তায়ালার অসংখ্য দয়া আর মেহেরবানির বদৌলতে মুসলমানদের অগ্রযাত্রার ভিত্তি সুদৃঢ় হয়েছিল এবং বদরের যুদ্ধের মাধ্যমে তিনি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন।

আজ চৌদ্দ শ’ চৌত্রিশ বছর পর বিশ্বের সর্বস্তরের মুসলমানগণ সেই অকুতোভয় সৈনিকদের স্মরণ করবেন এবং নিজেরাও প্রয়োজনে বদরের মতো যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে পারেন সেই মানসিকতায় বলীয়ান রূপে নিজেদেরও সজ্জিত করবেন বলে আশা করি। তবে বদরের যুদ্ধ যেমন ছিল আত্মরক্ষার্থে, তেমনি মুসলমানগণের সব যুদ্ধ হবে আত্মরক্ষার্থে, সত্যের অনুকূলে, নির্যাতিত-নিপীড়িতদের অনুকূলে এবং কল্যাণ কামনায়।

যুদ্ধের ময়দানেও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনন্য আদর্শ স্থাপন করেন। তখনকার সময় যুদ্ধবন্দীদের হয় হত্যা করা হত নতুবা চিরদিনের জন্য বংশ পরম্পরায় দাস হিসেবে রেখে দিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসব রীতিনীতি ভঙ্গ করে ঘোষণা করেন, ‘তোমরা বন্দীদের সাথে সৎ ব্যবহার কর।’ আবু আজিজ নামে এক বন্দী পরবর্তীতে বলেন, ‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদেশে মুসলমানরা আমাদের সাথে খুব ভালো ব্যবহার করেছিল। তারা আমাদের পেট ভরে খেতে দিতেন অথচ তারা কম খেতেন।’

স্যার উলিয়াম মুরের মত খৃষ্টান লেখক লিখেছেন, ‘মুহাম্মদের আমলে মদীনাবাসীগণ এবং মুহাজিরগণ বন্দীদের সাথে বিশেষ ব্যবহার করেছিলেন। একজন বন্দী নিজেই বলেছেন,‘আল্লাহ মদীনাবাসীর মঙ্গল করুন,‘তারা আমাদেরকে উটে ও ঘোড়ায় সওয়ার করে দিতেন আর নিজেরা পায়ে হেঁটে যেতেন। তারা আমাদেরকে ময়দার রুটি করে দিতেন আর নিজেরা খেজুর খেতেন।’

এ ছিল বদর যুদ্ধ বন্দীদের সাথে সৎ ব্যবহারের আংশিক বর্ণনা। আজকের পৃথিবীর শক্তিমানদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন থেকে শিখার অনেক কিছু আছে। পৃথিবী তাদের করুণ পরিণতিও দেখতে পারবে। কোন জালিমই মহান আল্লাহর পাকরাও থেকে ছাড় পাবে না।

আল্লাহ তা‘আলা বদর দিবসকে ‘ইয়াওমুল ফুরকান’ তথা সত্য-মিথ্যার পার্থক্য নিরূপণের দিন বলে নাম রেখেছেন; কেননা আল্লাহ তা‘আলা সেদিন তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনদের বিজয়ী এবং কাফির ও মুশরিকদের পরাজিত করার মাধ্যমে হক্ব ও বাতিলের পার্থক্য সূচিত করেছেন।

ইসলামের জিহাদ যে কেবল জয়ের জন্য যুদ্ধ কিংবা রক্ত ও মৃত্যুর বিভীষিকা যে জিহাদের মূল চিত্র ও চেতনা নয়, বদরের প্রান্তরে প্রার্থনার কান্না, যুদ্ধকালে রোজা রেখে ক্ষুধার্ত থাকা আর শান্তি ও সত্য প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ধরে রাখার মধ্য দিয়ে বদর যুদ্ধ তার এক উজ্জ্বল মানবিক রূপ উপহার দিয়েছে। বদর যুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ হচ্ছে নাখলার খণ্ডযুদ্ধ, কাফেরদের রণপ্রস্তুতি, আবু সুফিয়ানের অপপ্রচার, যুদ্ধ প্রস্তুতির জন্য ওহি লাভ, মক্কাবাসীর ক্ষোভ ইত্যাদি। এসব কারণে আবু জেহেলের নেতৃত্বে এক হাজার সৈন্য নিয়ে মদিনা আক্রমণ। যেসব পরোক্ষ কারণে বদর যুদ্ধের সূচনা হয়েছে তা হচ্ছে, মদিনা শরিফে সাফল্যজনকভাবে ইসলাম সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ায় কুরাইশদের হিংসা, মোনাফিকদের সরদার আবদুল্লাহ বিন উবাইয়ের ও ইহুদিদের ষড়যন্ত্র, কুরাইশদের যুদ্ধের হুমকি, তাদের বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা, কাফেরদের আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা, ইসলামের ক্রমবর্ধমান শক্তির ধ্বংস সাধন করা এবং নবীজি (সা.)কে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করার অশুভ বাসনা।

বদর যুদ্ধের সফলতা হচ্ছে, ইসলামের ঐতিহাসিক বিজয়, মুসলমানদের ইমানের পরিপক্বতা অর্জন, আত্মবিশ্বাসের সৃষ্টি, বিশ্ব বিজয়ের সূচনা, সর্বোত্তম ইতিহাস সৃষ্টি, প্রথম সামরিক বিজয়, কুরাইশদের শক্তি খর্ব, ইসলামী রাষ্ট্রের পত্তন, নবযুগের সূচনা, চূড়ান্ত ভাগ্য নির্ধারক যুদ্ধ, রাজনৈতিক ক্ষমতার ভিত্তি স্থাপন, জিহাদের অনুপ্রেরণা, আল্লাহর ওপর প্রগাঢ় আস্থা অর্জন, ইসলাম ও মহানবী (সা.)-এর প্রতিষ্ঠা, এবং মুসলমানদের পক্ষে আল্লাহ তাআলার গায়েবি সাহায্যের জ্বলন্ত প্রমাণ।

আজকে মিয়ানমার,সিরিয়া,আফগান,কাশ্মীরসহ বিশ্বের সর্বত্র মুসলমানদের রক্ত ঝরছে। মজলুমদের কান্নার আওয়াজে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হচ্ছে কিন্তু, আমাদের হৃদয়ে তেমন নাড়া দিচ্ছে না। আজকে আমরা রমজানে হরেক রকম ভুরী ভোজের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত! তাকওয়ার প্রতিযোগীতায় মত্ত না হয়ে আমরা প্রতিযোগিতা করছি কে কার থেকে কত সুন্দর ও বেশী দামী জামাটা কিনতে পারি।

আল্লাহ বলেছেন – তোমাদের কি হলো, তোমরা আল্লাহর পথে অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্য লড়ছো না , যারা দুর্বলতার কারণে নির্যাতিত হচ্ছে? তারা ফরিয়াদ করছে , হে আমাদের রব! এই জনপদ থেকে আমাদের বের করে নি য়ে যাও, যার অধিবাসীরা জালেম এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের কোন বন্ধু, অভিভাবক ও সাহায্যকারী তৈরি করে দাও। (সূরা-নিসা-৭৫)

মূলত রমজান নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করার মাস। এ রমজানে সাহাবায়ে কেরাম নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করার পাশাপাশি নফস পূজারি তাগুতি শক্তির বিরুদ্ধে যেভাবে নিজেদের আত্মনিয়োজিত করেছেন, ইতিহাসে তার দৃষ্টান্ত বিরল। তাই আল্লাহ তাআলা তাদের সর্বাধিক মর্যাদার অধিকারী মুসলমান হিসেবে কবুল করে নিয়েছেন। আমাদের উচিত তাদের অনুসরণ করা।

হে আল্লাহ! আমাদের ইসলাম দিয়ে আমাদেরকে বিজয় দান করুন, আমাদেরকে আপনার দ্বীনের সাহায্যকারী এবং আপনার দ্বীনের দা‘ঈ হিসেবে কবুল করুন। আর আপনার সাক্ষাতের সময় পর্যন্ত আপনি আমাদেরকে এ দ্বীনের ওপর অনঢ-অটল রাখুন।

আজকের এই দিনে মহান মাবুদের দরবারে বিশ্বের সকল মজলুম মানবতার মুক্তি চাই। ইসলামের শত্রু তথা জালিমদের হেদায়ত চাই। হে আল্লাহ! মানবতার মুক্তি দিন।

লেখকঃ কলামিষ্ট ও গবেষক
Social Media: www.facebook.com/rabiulislam.official

Facebook Comments Box


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Thu, 21 Nov.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।