এশিয়া খ্যাত দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার অধ্যক্ষ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের গভর্ণর, জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের খতীব, মাসিক তরজুমানের সম্পাদক, ওস্তাজুল উলামা, খতিবে বাঙাল, হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন আলকাদেরী (রহ.) ছিলেন সুন্নীয়তের বাতিঘর। তিনি ছিলেন অনন্য আশেকে রাসূল (দরুদ)। তার জীবনাদর্শ অনুসরণে সুন্নীয়তের অগ্রগতি ও প্রসার সম্ভব। শতধা বিভক্ত সুন্নীরা তার দেখানো পথে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। গতকাল শনিবার রাতে (২৮ জানুয়ারি’২০১৭) সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির ইব্রাহিম হোটেল বলরুমে আল্লামা অধ্যক্ষ জালাল উদ্দীন আলকাদেরী (রহ.)’র স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তারা এসব অভিমত ব্যক্ত করেন।

আল নুর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সমাজ সেবক আলহাজ্ব ন.আ.ম বদর উদ্দীন সাহেবের সভাপতিত্বে এবং মৌলানা মুহাম্মদ আলী রেজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত নাগরিক স্মরণ সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন প্রবাসী সাংবাদিক সমিতি (দুবাই)’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মুহাম্মদ নূরুল আবছার তৈয়বী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজ সেবক আলহাজ্ব মুনির চৌধুরী এবং সমাজ সেবক আলহাজ্ব কামাল উদ্দীন। অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মাওলানা নূরুল হক, মাওলানা ওসমান, মাওলানা আব্দুল মালেক আল ফারুক, ইঞ্জিয়ার মুহাম্মদ ফরিদ, মুহাম্মদ তৈয়ব খান প্রমূখ। বিশেষ ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সাংবাদিক জাহাংগীর কবির বাপ্পি, ব্যাবসায়ী মুহাম্মদ ওসমান, শাহীনুর শাহীন, মাওলানা ওসমান গনি, মাওলানা রফিক, মাওলানা মমতাজ, মাওলানা হাফেজ বদিউল আলম, মাওলানা নোমানসহ জামেয়ার প্রাক্তন ছাত্র, কমিউনিটি নেত্ববৃন্দ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, সমাজ সেবক, ব্যবসায়ী প্রমুখ।
বাদ মাগরিব থেকে অনুষ্ঠিত উক্ত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের ১ম পর্বে ছিল পবিত্র খতমে কোরান তেলাওয়াত, নাতে রাসূল পরিবেশন ও কবিতা পাঠ। দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা সভায় বক্তারা আল্লামা জালাল উদ্দিন আলকাদেরীর জীবন ও অবদানের উপর আলোচনা করে বক্তারা আরো বলেন,- খতীবে বাঙাল অধ্যক্ষ আল্লামা জালাল উদ্দীন আলকাদের শুধু সুন্নীয়তের সম্পদ নয়, তিনি পুরো দেশের সম্পদ ছিলেন। তার ইন্তেকালে দেশ, জাতি ও মাযহাব মিল্লাতের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। অথচ এই মনীষীর জীবদ্দশায় তাকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। জাতীয় মসজিদের খতিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্ণর হওয়া সত্ত্বেও সরকার একটি শোকবাণী পর্যন্ত দেয়নি। বক্তারা রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা পদক বা একুশে পদক দিয়ে এই মনীষীকে সম্মান জানানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। কারণ, যে জাতি গুণীজনদের সম্মান করে না, সে জাতির মাঝে গুণীজন জন্ম নেয় না। বক্তারা বলেন, আল্লামা জালালুদ্দীন আলকাদেরী ছাত্রজীবনে যেমন মেধাবী ও আদর্শবান কৃতি ছাত্র ছিলেন, তেমনি জামেয়ার মতো দেশসেরা প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ ৩ যুগের সফল অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সফল শিক্ষক হিসেবে জাতি গড়ার কারিগর ছিলেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে তার সাবেক ছাত্ররা তাঁকে নিয়ে অনেক স্মৃতিচারণ করেন। পরিশেষে, সালাত সালাম, আখেরী দোয়া-মুনাজাতেরর মাধ্যমে মাহফিল সমাপ্ত হয়। মোনাজাতে দেশ, জাতি ও প্রবাসীদের কল্যাণে দোয়া করা হয়।