ষ্টাফ রিপোর্টার: সাভারে সেটেলম্যান্ট অফিসের সামনে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে রেজাউল করিম রাজা (৩০) নামের এক জাপান প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ ওয়ার্ড সভাপতিসহ তার অনুসারি সন্ত্রাসীরা। নিহত রাজা সাভার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাজিমউদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫ জন। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে সুজন ও মজিদ নামের দুই জনকে আটক করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকার রেডিও কলোনী মহল্লায় সোহরাব হোসেনের সাথে ভাটপাড়া মৌজায় ৯ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো সাভার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এরশাদুর রহমান এরশাদের সাথে। এ জমি নিয়ে আজ মঙ্গলবার সাভার থানা রোডে উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয়ে সহকারি সেটেলম্যান্ট কর্মকর্তা (এএসও) সাইফুল ইসলামের কক্ষে দুই পক্ষের আপিল শুনানি চলছিল। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ও বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদ গ্রুপের সন্ত্রাসীরা এলোপাথারি ছুরিকাঘাতে কুপিয়ে ঘটনাস্থলে রেজাউল করিম রাজাকে কুপেিয় হত্যা করে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫ জন। এরা হলেন, সোহরাব হোসেন, সুমন, সাগর, জিসান। এদের মধ্যে সোহরাব হোসেনের অবস্থা আশংঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। আহতদের উদ্ধার করে ঘটনাস্থলের প্রায় ১০০ গজ দূরত্বে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার জাপান প্রবাসী রেজাউল করিম রাজাকে মৃত ঘোষণা করেন। সে স্থানীয় বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিনের পুত্র। পুলিশ জানায়, সোহরাব গ্রুপ মিমাংসা করতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদ ও তার লোকজন জাপান প্রবাসী রেজাউল করিম রাজাসহ ৬ জনকে কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাথারীভাবে কুপিয়ে আহত করে। এতে ঘটনাস্থলেই রাজার মৃত্যু হয়। সেটেলম্যান্ট অফিসের পেশকার হাফিজুর রহমান জানান, আমাদের অফিসের ভেতরে উত্তেজিত হয়। পরে বিবাদমান দুই গ্রুপ বাহিরে চায়ের দোকানের সামনে গিয়ে সংঘর্ষে জড়িত হয়। সেখানে কি হয়েছে তা আমারা জানি না। এ ঘটনায় আহত জিসান, সাগর, আজিজ ও সোহবাবকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত
রেজাউল করিম রাজা দীর্ঘ দিন ধরে জাপান প্রবাসী। সম্প্রতি তিনি ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। আগামী ২০ এপ্রিল তার জাপান ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি দুই সন্তানের জনক। সে ১৯৯৮ সালে সাভার রেডিও কলোনী মডেল স্কুল থেকে এস এস সি পাশ করে। খবর পেয়ে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে সুজন ও মজিদকে আটক করেছে।
এবিষয়ে সাভার মডেল থানার সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদ উন্নতিপ্রাপ্ত) রাসেল শেখ জানান, ঘটনায় জড়িত দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কয়েক সহযোগীকে ধরতে অভিযান চলছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
রাজা হত্যাকান্ডের ঘটনায় সাভার পৌর বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: রমিজউদ্দিন রমিজ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।