Menu |||

ইসলাম: মানবতার মুক্তি,শান্তি ও প্রগতির এক মহাসনদ

আল-কুরআন : বিষ্ময়কর এক আসমানী মহাগ্রন্থ

ধর্মীয় দর্শন ডেস্কঃ ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম। যেখানে মানব জাতীর সব সমস্যার সমাধান দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বপরিচালক মহান আল্লাহ তায়ালা। তিনি এমন এক স্রষ্টা যিনি সব কিছুই সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টিকুল কীভাবে পরিচালিত হবে, কিসে তাদের কল্যাণ তা স্রষ্টার চেয়ে বেশি কেউ জানার কথা নয়, এবং জানবেও না। তাই বিশ্ব পরিচালক মহান স্রষ্টা পৃথিবীর মানবমণ্ডলীকে জানিয়ে দিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট মনোনীত জীবন ব্যবস্থা হল একমাত্র ইসলাম। (সূরা: আলে ইমরান: ১৯)।

ইসলাম ‘সিলমুন’ ধাতু থেকে উৎপত্তি। সিলম- অর্থ শান্তি, সন্ধি, সন্ধিকারী, বশ্যতা, সমর্পণ, আত্মসমর্পণ। মুসলিম হচ্ছে আত্মসমর্পণকারী। যে আত্মসমর্পণ করেছে সে হচ্ছে মুসলিম। অর্থাৎ আল্লাহর নিকট যে আত্মসমর্পণ করেছে সে মুসলমান হয়েছে এবং সে আল্লাহর দ্বীনের মধ্যে প্রবেশ করেছে। ‘দ্বীন’ অর্থ- জীবন ব্যবস্থা, আল্লাহর মনোনীত জীবন ব্যবস্থাটির নাম হল ইসলাম। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা বলেছেন: আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের (দ্বীন) জীবন ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের জন্য আমার নেয়ামতসমূহ পূর্ণ করেদিলাম, আর তোমাদের দ্বীন তথা ইসলামের উপর আমি রাজী (সন্তুষ্ট) হয়ে গেলাম। (সূরা মায়েদা: ৩)

মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই শান্তির জন্য কতইনা পরিকল্পনা করেছে। তৈরী করেছে বহু মত ও পথ, সৃষ্টি করেছে শত মতবাদ। এক একটি মতবাদকে প্রতিষ্ঠা করতেগিয়ে মানুষ ধ্বংস করেছে হাজারো জনপদ। হত্যা করেছে লক্ষ লক্ষ বনী আদম। কিন্তু তারপরেও তারা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। পারেনি মানুষের মৌলিক কোনো অধিকার আদায় করতে। ফিরিয়ে দিতে পারেনি বঞ্চিত মানবতার সামান্যটুকু অধিকার, বরং মতবাদ প্রতিষ্ঠাকারীরা লুটে নিয়েছে মানুষের সম্পদ, অধিকার কেঁড়ে নিয়েছে লাখো বনী আদমের। সাধারণ জনগণের উপর চালিয়েছে জুলুম, নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণইত্যাদি। এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা করেনি। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার অশেষ মেহেরবানীতে মানুষকে অত্যন্ত সুন্দর অবকাঠামো দিয়ে তৈরী করেছেন এবং মানুষকে দিয়েছেন সৃষ্টির সেরা জীবের মর্যাদা অর্থাৎ আশরাফুল মাখলুকাত এবং দিয়েছেন বিবেক বুদ্ধির ন্যায় অমূল্য সম্পদ। যার সাহায্যে তারা প্রতিষ্ঠা করবে পৃথিবীতে আল্লাহর খেলাফত তথা কুরআনের রাজ।

মহান আল্লাহ মানব সৃষ্টির পূর্বে ফেরেশতাদেরকে ডেকে বললেন- আমি ধরাপৃষ্ঠে, আমার জমিনে তথা পৃথিবীতে খলিফা প্রেরণ করতে যাচ্ছি। তখন ফেরাশতারা আল্লাহকে বললেন হে প্রভূ! এমন জাতি কেন সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন, যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। মহান আল্লাহ তাদেরকে বললেন, আমি যা জানি তোমরা তা জান না। (সূরা বাকারা: ৩০)

সুতারাং আল্লাহর রাজত্ব প্রতিষ্ঠার জন্যই মানব সৃষ্টির উৎস। কারণ জৈবিক শক্তি এবং নৈতিক শক্তি দিয়ে মানুষকে করেছেন নৈতিকতা বোধ সম্পন্ন বিবেকবান শ্রেষ্ঠজীব। এই শ্রেষ্ঠ মানুষরাই প্রতিষ্ঠা করবে পৃথিবীর বুকে আল্লাহর মনোনীত জীবন ব্যবস্থা ‘আল ইসলাম’। আল্লাহর মনোনীত দ্বীন তথা ইসলাম মানবমণ্ডলীর জন্য এক বিরাট নেয়ামত আল্লাহর পক্ষ থেকে। এই দ্বীন প্রতিষ্ঠা হলে পৃথিবীটা হবে শান্তিদায়ক জান্নাতের টুকরা। যেখানে থাকবে না কোন অন্যায়-অবিচার, থাকবেনা জুলুম-অত্যাচার। মানুষ নিজের কল্যাণের চেয়ে অন্যের কল্যাণ বেশি কামনা করবে। কারণ তাদের মধ্যে এমন গুণের আবির্ভাব ঘটবে, তারা হবে তাকওয়ার গুণে গুণান্বিত। তখন আল্লাহর জমিন হবে নেয়ামতে ভরপুর।

মহান আল্লাহ বলেন; যদি জনপদের লোকেরা ঈমান আনতো এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করতো, তাহলে তোমরা দেখতে, আমি আসমানের নেয়ামতসমূহ এবং জমিনের নেয়ামতসমূহ তোমাদের জন্য বের করে দিতাম। (সূরা আল আ‘রাফ: ৯৬) । আল্লাহর এই ওয়াদা তাকওয়াবান মানুষের জন্য। শুধু প্রয়োজন দেশের জনগণ তাকওয়া সম্পন্ন হওয়া। আল্লাহর নেয়ামত আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। তাকওয়া অর্জন করতে হলে আল্ কুরআন থেকে সরাসরি জ্ঞান আহরণ করতে হবে।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর হযরত আবু বকর ছিদ্দিক (রা:) খিলাফতের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। খলিফাতুর রাসূল (স:) ছিদ্দিকে আকবর খেলাপতের দায়িত্ব গ্রহণ করে তার প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে নিয়োগ দেন হযরত ওমর ফারুক (রা:) কে। তিনি (ফারুকে আজম) নিষ্ঠার সাথে এক বৎসর দায়িত্ব পালন করার পর খলিফার দরবারে উপস্থিত হয়ে আরজি পেশ করলেন। তিনি বললেন, হে আমিরুল মুমিনীন খলিফাতুর রাসূল! আপনি আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা আমি দীর্ঘ এক বৎসর পালন করার পরও আমার কাছে একটা লোকও আসে নাই অভিযোগ পেশ করতে। সুতরাং এই বিচার বিভাগে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করার কোনো প্রয়োজন নেই।

হযরত আবু বকর ছিদ্দিক (রা:) প্রশ্ন করলেন, হে ওমর! তুমি এর কারণ কী মনে কর? হযরত ওমর ফারুক (রা:) জবাবে বললেন, যে রাষ্ট্রের জনগণ নিজের প্রয়োজনের চেয়ে অন্যের প্রয়োজনকে বেশি প্রধান্য দেয় সে রাষ্ট্রে কারো বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেনা। এখানে সবাই শুধু আল্লাহকেই ভয় করে। অথচ আমরাও ঈমানদার এবং তাকওয়ার দাবীদার। কিন্তু কার বিরুদ্ধে কত মিথ্যা অভিযোগ আনা যায়, এবং নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য, নিজের প্রধান্য বিস্তার করার জন্য, এবং বিভিন্ন অজুহাতে কাকে কীভাবে লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত করা যায়, সে ধান্ধায় আমরা সদা ব্যস্ত থাকি। আল্লাহ পাক বলেন: তিনি আল্লাহ যিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন এমন দ্বীনকে, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি হযরত নূহ (আ:) কে। আর যা আমি অহী করেছিলাম তোমাকে, এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহীম, মূসা ও ঈসা (আ:) কে এই বলে যে – তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং এতে মত পার্থক্য করো না। (সূরা শূরা: ১৩)

আল্লাহ পাক বিশ্ববাসীকে কুরআনের মাধ্যমে সংবাদ জানিয়ে দিয়েছেন যে, যারা নিজেদের দ্বীনকে বিভক্ত করেছে, এবং বিভিন্ন দলে উপদলে বিভক্ত হয়েছে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। আল্লাহ বলেন: নিশ্চয়ই যারা দ্বীনকে বিভক্ত করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে আপনি কোন ব্যাপারেই তাদের অন্তর্ভুক্ত নন। (সূরা আল আনয়াম: ১৫৯)

আল্লাহ পাক আমাদেরকে তার দ্বীনের সঠিক জ্ঞান দান করুন। আমীন !!!

লেখকঃ
মোস্তফা কবীর সিদ্দিকী
সিনিয়র লেকচারার , ইসলামিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্ট,
সাউথইস্ট ইউনির্ভাসিটি।
ইমেইলঃ mostafakabir_seu@yahoo.com

অগ্রদৃষ্টি.কম // এমএসআই

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

বিশেষ অনুমতি ছাড়াই পাওয়া যাবে কুয়েতের ভিসা

চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী গ্রেপ্তার

কুয়েতে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

কুয়েতের কাজের ভিসার জন্য বাংলাদেশিদের অতিরিক্ত ৩০০ ডলার পর্যন্ত দিতে হচ্ছে

চুরি হওয়া টাকা'ই ঋণের জন্য ব্যবহার হয়

ক্রোধের স্রোত অত্যাচারীদের ধ্বংস করে- আহমেদ আল-জারাল্লাহ

কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশী তরুণ মকবুল হোসেনের সফলতার গল্প

কুয়েতে ঈদুল ফিতর উদযাপিত এবং রাষ্ট্রদূত এর সঙ্গে প্রবাসীদের শুভেচ্ছা বিনিময়

কান্না দেখে কাঁদছে হৃদয়, আমি মোটেও হৃদয়হীন নয়

হাসনাতের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তোলপাড় সোশ্যাল প্লাটফর্ম

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» কুয়েতে বিজয় দিবস কাপ-২০২৫ এর সেমিফাইনালে উঠেছে নবজাগরণ স্পোর্টিং ক্লাব

» কুয়েত ফেরত প্রবাসী মো. সাদ মিয়া আর নেই

» বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলা নববর্ষ উদযাপন

» ফিলিস্তিনের পক্ষে লন্ডনের রাজপথে প্রবাসী বাংলাদেশিরা

» বিশেষ অনুমতি ছাড়াই পাওয়া যাবে কুয়েতের ভিসা

» চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী গ্রেপ্তার

» আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের

» কুয়েতে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত

» কুয়েতে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

» কুয়েতের কাজের ভিসার জন্য বাংলাদেশিদের অতিরিক্ত ৩০০ ডলার পর্যন্ত দিতে হচ্ছে

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

ইসলাম: মানবতার মুক্তি,শান্তি ও প্রগতির এক মহাসনদ

আল-কুরআন : বিষ্ময়কর এক আসমানী মহাগ্রন্থ

ধর্মীয় দর্শন ডেস্কঃ ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম। যেখানে মানব জাতীর সব সমস্যার সমাধান দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বপরিচালক মহান আল্লাহ তায়ালা। তিনি এমন এক স্রষ্টা যিনি সব কিছুই সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টিকুল কীভাবে পরিচালিত হবে, কিসে তাদের কল্যাণ তা স্রষ্টার চেয়ে বেশি কেউ জানার কথা নয়, এবং জানবেও না। তাই বিশ্ব পরিচালক মহান স্রষ্টা পৃথিবীর মানবমণ্ডলীকে জানিয়ে দিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট মনোনীত জীবন ব্যবস্থা হল একমাত্র ইসলাম। (সূরা: আলে ইমরান: ১৯)।

ইসলাম ‘সিলমুন’ ধাতু থেকে উৎপত্তি। সিলম- অর্থ শান্তি, সন্ধি, সন্ধিকারী, বশ্যতা, সমর্পণ, আত্মসমর্পণ। মুসলিম হচ্ছে আত্মসমর্পণকারী। যে আত্মসমর্পণ করেছে সে হচ্ছে মুসলিম। অর্থাৎ আল্লাহর নিকট যে আত্মসমর্পণ করেছে সে মুসলমান হয়েছে এবং সে আল্লাহর দ্বীনের মধ্যে প্রবেশ করেছে। ‘দ্বীন’ অর্থ- জীবন ব্যবস্থা, আল্লাহর মনোনীত জীবন ব্যবস্থাটির নাম হল ইসলাম। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা বলেছেন: আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের (দ্বীন) জীবন ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের জন্য আমার নেয়ামতসমূহ পূর্ণ করেদিলাম, আর তোমাদের দ্বীন তথা ইসলামের উপর আমি রাজী (সন্তুষ্ট) হয়ে গেলাম। (সূরা মায়েদা: ৩)

মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই শান্তির জন্য কতইনা পরিকল্পনা করেছে। তৈরী করেছে বহু মত ও পথ, সৃষ্টি করেছে শত মতবাদ। এক একটি মতবাদকে প্রতিষ্ঠা করতেগিয়ে মানুষ ধ্বংস করেছে হাজারো জনপদ। হত্যা করেছে লক্ষ লক্ষ বনী আদম। কিন্তু তারপরেও তারা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। পারেনি মানুষের মৌলিক কোনো অধিকার আদায় করতে। ফিরিয়ে দিতে পারেনি বঞ্চিত মানবতার সামান্যটুকু অধিকার, বরং মতবাদ প্রতিষ্ঠাকারীরা লুটে নিয়েছে মানুষের সম্পদ, অধিকার কেঁড়ে নিয়েছে লাখো বনী আদমের। সাধারণ জনগণের উপর চালিয়েছে জুলুম, নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণইত্যাদি। এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা করেনি। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার অশেষ মেহেরবানীতে মানুষকে অত্যন্ত সুন্দর অবকাঠামো দিয়ে তৈরী করেছেন এবং মানুষকে দিয়েছেন সৃষ্টির সেরা জীবের মর্যাদা অর্থাৎ আশরাফুল মাখলুকাত এবং দিয়েছেন বিবেক বুদ্ধির ন্যায় অমূল্য সম্পদ। যার সাহায্যে তারা প্রতিষ্ঠা করবে পৃথিবীতে আল্লাহর খেলাফত তথা কুরআনের রাজ।

মহান আল্লাহ মানব সৃষ্টির পূর্বে ফেরেশতাদেরকে ডেকে বললেন- আমি ধরাপৃষ্ঠে, আমার জমিনে তথা পৃথিবীতে খলিফা প্রেরণ করতে যাচ্ছি। তখন ফেরাশতারা আল্লাহকে বললেন হে প্রভূ! এমন জাতি কেন সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন, যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। মহান আল্লাহ তাদেরকে বললেন, আমি যা জানি তোমরা তা জান না। (সূরা বাকারা: ৩০)

সুতারাং আল্লাহর রাজত্ব প্রতিষ্ঠার জন্যই মানব সৃষ্টির উৎস। কারণ জৈবিক শক্তি এবং নৈতিক শক্তি দিয়ে মানুষকে করেছেন নৈতিকতা বোধ সম্পন্ন বিবেকবান শ্রেষ্ঠজীব। এই শ্রেষ্ঠ মানুষরাই প্রতিষ্ঠা করবে পৃথিবীর বুকে আল্লাহর মনোনীত জীবন ব্যবস্থা ‘আল ইসলাম’। আল্লাহর মনোনীত দ্বীন তথা ইসলাম মানবমণ্ডলীর জন্য এক বিরাট নেয়ামত আল্লাহর পক্ষ থেকে। এই দ্বীন প্রতিষ্ঠা হলে পৃথিবীটা হবে শান্তিদায়ক জান্নাতের টুকরা। যেখানে থাকবে না কোন অন্যায়-অবিচার, থাকবেনা জুলুম-অত্যাচার। মানুষ নিজের কল্যাণের চেয়ে অন্যের কল্যাণ বেশি কামনা করবে। কারণ তাদের মধ্যে এমন গুণের আবির্ভাব ঘটবে, তারা হবে তাকওয়ার গুণে গুণান্বিত। তখন আল্লাহর জমিন হবে নেয়ামতে ভরপুর।

মহান আল্লাহ বলেন; যদি জনপদের লোকেরা ঈমান আনতো এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করতো, তাহলে তোমরা দেখতে, আমি আসমানের নেয়ামতসমূহ এবং জমিনের নেয়ামতসমূহ তোমাদের জন্য বের করে দিতাম। (সূরা আল আ‘রাফ: ৯৬) । আল্লাহর এই ওয়াদা তাকওয়াবান মানুষের জন্য। শুধু প্রয়োজন দেশের জনগণ তাকওয়া সম্পন্ন হওয়া। আল্লাহর নেয়ামত আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। তাকওয়া অর্জন করতে হলে আল্ কুরআন থেকে সরাসরি জ্ঞান আহরণ করতে হবে।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর হযরত আবু বকর ছিদ্দিক (রা:) খিলাফতের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। খলিফাতুর রাসূল (স:) ছিদ্দিকে আকবর খেলাপতের দায়িত্ব গ্রহণ করে তার প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে নিয়োগ দেন হযরত ওমর ফারুক (রা:) কে। তিনি (ফারুকে আজম) নিষ্ঠার সাথে এক বৎসর দায়িত্ব পালন করার পর খলিফার দরবারে উপস্থিত হয়ে আরজি পেশ করলেন। তিনি বললেন, হে আমিরুল মুমিনীন খলিফাতুর রাসূল! আপনি আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা আমি দীর্ঘ এক বৎসর পালন করার পরও আমার কাছে একটা লোকও আসে নাই অভিযোগ পেশ করতে। সুতরাং এই বিচার বিভাগে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করার কোনো প্রয়োজন নেই।

হযরত আবু বকর ছিদ্দিক (রা:) প্রশ্ন করলেন, হে ওমর! তুমি এর কারণ কী মনে কর? হযরত ওমর ফারুক (রা:) জবাবে বললেন, যে রাষ্ট্রের জনগণ নিজের প্রয়োজনের চেয়ে অন্যের প্রয়োজনকে বেশি প্রধান্য দেয় সে রাষ্ট্রে কারো বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেনা। এখানে সবাই শুধু আল্লাহকেই ভয় করে। অথচ আমরাও ঈমানদার এবং তাকওয়ার দাবীদার। কিন্তু কার বিরুদ্ধে কত মিথ্যা অভিযোগ আনা যায়, এবং নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য, নিজের প্রধান্য বিস্তার করার জন্য, এবং বিভিন্ন অজুহাতে কাকে কীভাবে লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত করা যায়, সে ধান্ধায় আমরা সদা ব্যস্ত থাকি। আল্লাহ পাক বলেন: তিনি আল্লাহ যিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন এমন দ্বীনকে, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি হযরত নূহ (আ:) কে। আর যা আমি অহী করেছিলাম তোমাকে, এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহীম, মূসা ও ঈসা (আ:) কে এই বলে যে – তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং এতে মত পার্থক্য করো না। (সূরা শূরা: ১৩)

আল্লাহ পাক বিশ্ববাসীকে কুরআনের মাধ্যমে সংবাদ জানিয়ে দিয়েছেন যে, যারা নিজেদের দ্বীনকে বিভক্ত করেছে, এবং বিভিন্ন দলে উপদলে বিভক্ত হয়েছে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। আল্লাহ বলেন: নিশ্চয়ই যারা দ্বীনকে বিভক্ত করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে আপনি কোন ব্যাপারেই তাদের অন্তর্ভুক্ত নন। (সূরা আল আনয়াম: ১৫৯)

আল্লাহ পাক আমাদেরকে তার দ্বীনের সঠিক জ্ঞান দান করুন। আমীন !!!

লেখকঃ
মোস্তফা কবীর সিদ্দিকী
সিনিয়র লেকচারার , ইসলামিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্ট,
সাউথইস্ট ইউনির্ভাসিটি।
ইমেইলঃ mostafakabir_seu@yahoo.com

অগ্রদৃষ্টি.কম // এমএসআই

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

বিশেষ অনুমতি ছাড়াই পাওয়া যাবে কুয়েতের ভিসা

চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী গ্রেপ্তার

কুয়েতে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

কুয়েতের কাজের ভিসার জন্য বাংলাদেশিদের অতিরিক্ত ৩০০ ডলার পর্যন্ত দিতে হচ্ছে

চুরি হওয়া টাকা'ই ঋণের জন্য ব্যবহার হয়

ক্রোধের স্রোত অত্যাচারীদের ধ্বংস করে- আহমেদ আল-জারাল্লাহ

কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশী তরুণ মকবুল হোসেনের সফলতার গল্প

কুয়েতে ঈদুল ফিতর উদযাপিত এবং রাষ্ট্রদূত এর সঙ্গে প্রবাসীদের শুভেচ্ছা বিনিময়

কান্না দেখে কাঁদছে হৃদয়, আমি মোটেও হৃদয়হীন নয়

হাসনাতের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তোলপাড় সোশ্যাল প্লাটফর্ম


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Sat, 24 May.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।