Menu |||

শাইখ সিরাজের জন্মদিন

আদিত্য শাহীনঃ ভিতরের টান আর প্রকৃতির স্বতঃস্ফূর্ততা থেকেই ফুল ফোটে। বাংলাদেশে যারা সত্যিকারের ফুল ফোটানোর নায়ক এমন মানুষ হাতে গোনা। বহু মানুষ এখনো আছেন যাদের দিকে আলো পড়েনি। আলোর দেখা পেয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়।

একজন মানুষ জীবনভর শুধু সেই অনালোকিত, অচিহ্নিত, অনাবিষ্কৃত উন্নয়ন পথিকদের দিকেই আলো ফেলছেন। ভিতর থেকে বের করে এনেছেন মাটি কামড়ে পড়ে থাকা মানুষের ভিতরের স্বর্ণবাক্য। উলট-পালট করে দিয়েছেন তথাকথিত ভদ্রলোকী স্বপ্নের প্রচলিত সব অবকাঠামো। তিনি শাইখ সিরাজ।

কী গভীর তাঁর টান। কী দুর্দান্ত তাঁর নেশা। কার সঙ্গে তুলনা করবেন? ৪০ বছর ধরে অসাধারণ এক দিনলিপির পাতা পূর্ণ করেছেন তিনি। সপ্তাহে অন্তত এক দিন ভোররাতে পৌঁছতে হবে কৃষকের মাঠে।

মাটির মানুষের সত্যিকারের জীবনাচার ধরতে হবে। আকাশে রং ছড়িয়ে সূর্য কেবল ওঠার প্রস্তুতি নেবে। দিগন্তে ছড়িয়ে থাকবে কুয়াশার বহুসংখ্যক স্তর। শাইখ সিরাজ ক্যামেরায় চোখ রেখে দেখবেন অসাধারণ এক বাংলাদেশ। যারা যেখানে বসে যেভাবেই বাংলাদেশ দেখেন, এভাবে কি দেখা হয়? কজন জানতেন, তেভাগা আন্দোলনের নেতা শরৎ মন্ডল এক অন্ধকার কুটিরে শেষ জীবন কীভাবে কাটিয়েছেন? কেউ কি জানতেন কী অসাধারণ শিল্প আর সৃজন প্রতিভা ধারণ করতেন ঝিনাইদহের আসাননগরের হরিপদ কাপালি, কেউ কি শুনতে পেতেন প্রকৃতিপাগল কার্তিক প্রামাণিকের মনের কথা? কেউ কোনো দিন উপলব্ধিতে এনেছেন দিনাজপুরের মতিউর রহমান যেভাবে ফসলের সঙ্গে কথা বলেন, তা আসলে সব কৃষকের প্রাণের কথা! শাইখ সিরাজ তাঁর চোখকে করে তুলতে চেয়েছেন দেশের মানুষের চোখ।কানকে করে তুলতে চেয়েছেন দেশের মানুষের কান। তাই তিনি নিজে একাকী পাঠ করে, দেখে আর উপলব্ধি করে ঋদ্ধ হতে চাননি, চেয়েছেন তাঁর বিস্ময়ের জায়গায় চোখ পড়ুক সব মানুষের। তাঁর কাছে যা ভালো লাগার তিনি চান সেখানে আসুক সবার মনোযোগ। একসময় দেখা গেল সারা দেশের যত মাটিমুখী খ্যাপা মানুষ সব শাইখ সিরাজের দিকে ছুটছেন।

শাইখ সিরাজ বরাবরই গণমাধ্যম তথা টেলিভিশনের শক্তিকে অনেক বড় করে দেখান। কিন্তু সত্যি কথা বলতে এখানে তার চেয়ে বড় শক্তির জায়গাটি সৃষ্টি করেছেন তিনি নিজে। তা হচ্ছে টেলিভিশন অনুষ্ঠানের আড়ম্বরহীন বাস্তবতা। টেলিভিশন যখন বোকাবাক্স, টেলিভিশন মানেই যখন অভিনয়, বাস্তবতার সঙ্গে ইচ্ছামতো রং চড়ানো, তখন বনের পাখির প্রাকৃতিক কলরবের মতোই মানুষের স্বাভাবিক জীবনাচারের ভিতর চোখের যে প্রশান্তি, সাধারণ ভাষার মধ্যে যে উজ্জীবন তাকে উপজীব্য করেছেন শাইখ সিরাজ। দেখিয়েছেন বটের ছায়ায় বাঁশের মাচায় বসে থাকা মানুষের মেকআপহীন, প্রস্তুতিহীন যে জীবন উপলব্ধি, যে উন্নয়ন ভাবনা তা বাংলাদেশের প্রকৃত শক্তির জায়গাটি চিনিয়ে দেয়। জানিয়ে দেয় জাতিসত্তার সঠিক খোঁজখবর। সত্যিকার অর্থে প্রকৃতিকে বিরক্ত না করে তাকে দেখা এবং দেখানো বেশ কঠিন। কৃষকের প্রকৃতি কী? তার জীবনের গভীর ভাষা কেমন? তা প্রচলিত কোনো গণমাধ্যম প্রয়াসে তুলে আনা যায় না। আমি দেখছি প্রায় ২০ বছর গ্রামে গ্রামে, শহরে শহরে, দেশে দেশে এই গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বের সঙ্গে ঘুরে, যে সহজিয়া ভাষার সঙ্গে তাঁর মেলবন্ধন রচিত হয়, সেই ভাষাটি আমাদের উচ্চাকাক্সক্ষী নাগরিক জীবনের ভাষা নয়। সে ভাষাটি অতি বিনয় মেশানো কৃত্রিমতা নয়, সেই ভাষাটি আভিজাত্যের মধুতে মোহগ্রস্ত করার জাদুও নয়। কৃষক দেখছে তাঁর সামনে এক আয়না। সেখানে তাঁর নিজের মুখটি দেখা যায়। তাঁর অন্তরের গভীরে টোকা পড়লেই বেরিয়ে পড়ে অন্যরকম সব বাক্য। হয়তো কৃষকের নিজের জীবনেও এসব কথা কখনো বলা হয়নি।

শাইখ সিরাজের ক্যামেরার সামনে এক কৃষকের চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে পানি। তাঁর সন্তান পাশে বসা। তিনি বলছেন, বাবাকে এর আগে কখনো কাঁদতে দেখিনি। রুক্ষ-তপ্ত সাহারা মরুভূমি থেকে শুরু করে বরফে মোড়া হিমশীতল কোনো অঞ্চল, প্রাচীন ঐতিহ্যমাখা কোনো জনপদ কিংবা জনমানস থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী পৃথিবীতে যেখানে কৃষি নিয়ে দুটি কথা বলা যায়, শোনা যায় শাইখ সিরাজ চেষ্টা করেছেন সেখানে ছুটে যেতে। পৃথিবীর সব কিছুর মধ্যেই তিনি খুঁজেছেন কৃষির সাজুয্য। পৃথিবী যত দিন থাকবে, মানুষের ক্ষুধা যত দিন থাকবে, খাদ্য যত দিন থাকবে কৃষির ব্যাপ্তি তত দিন। তাই তিনি বলেন, এখানেই জীবনের সব সম্ভাবনা। আমি দুই দশক ধরে অন্য এক চোখে পৃথিবী দেখছি। তিনি তারও প্রায় দুই দশক আগে তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিটাকে প্রস্তুত করেছেন। তখন কৃষক মানে এক নিরুপায় জনগোষ্ঠী আর কৃষি মানে ‘চাষাভুষার কাব্য’। মধ্যখানের অবিরাম সক্রিয় কর্মপ্রবাহের কথা বাংলা ভাষার প্রায় সব মানুষের জানা। আজকের চিত্রটা কী? আজ বাংলাদেশ পৃথিবীতে সবচেয়ে কৃষিসফল দেশ। আজ আমরা কৃষির ঢাল দিয়ে মহামারি ঠেকাই, কৃষির ঢাল দিয়ে সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করি, কৃষির বেষ্টনী গড়ে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা রচনা করি। এ সম্ভাবনার কথা আমি ২০ বছর আগে শুনেছি। শাইখ সিরাজ বলেছেন। বলেছেন, আমাদের সাধ আর সাধ্যের কেন্দ্রবিন্দু কৃষিতে। কৃষিতে বেসরকারি বিনিয়োগ আসতে হবে। কৃষিকে  উপেক্ষার জায়গা থেকে ওপরে তুলে আনতে হবে। নীতিনির্ধারক বা মন্ত্রীকে ঘরে বসে কৃষি পরিচালনা করলে চলবে না। তাঁকে শহুরে বিলাসবহুল চৌহদ্দি থেকে বেরিয়ে কৃষকের মাঠে যেতে হবে, কৃষকের কাঁধে হাত রাখতে হবে, কাদামাটিতে নামতে হবে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাঠের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে হবে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের কৃষকের বন্ধু হতে হবে, কৃষকের সঙ্গে মিশতে হবে। তাঁদের ভিতর ও বাইরে পরিবর্তন আনতে হবে। আজ ৭ সেপ্টেম্বর শাইখ সিরাজের জন্মদিন। তাঁকে অভিনন্দন।

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

কুয়েতে প্রবাসীদের ২০২৫ নতুন বছর নিয়ে ভাবনা,প্রত্যাশা অনেক

ফিনল্যান্ডে বাংলাদেশি কমিউনিটি নবাগত ছাত্রদের সপ্তাহব্যাপী কর্মশালা

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশ্বের খ্যাতিমান নেতাদের মূল্যবান উক্তি

পাসপোর্ট রিপোর্টার্স ফোরাম (পিআরএফ) এর যাত্রা শুরু

দঃ সুনামগঞ্জ উপজেলাবাসীকে আক্কাস মিয়া'র নতুন বছরের শুভেচ্ছা

নতুন বছর উপলক্ষে দঃসুনামগঞ্জ বাসীকে নিজাম উদ্দীনের শুভেচ্ছা

একনজরে ঢাকা ও কোলকাতার পত্রপত্রিকার সব

ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নজরুল মজিদ মাহমুদ স্বপন

বিশিষ্ট শিল্পপতি এম জাকির হুসেন ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন

কুয়েত প্রবাসী ব্যবসায়ী শামীম আহম্মেদ চৌধুরী ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সুদানে বর তার বন্ধুদের চাবুক মারার সংস্কৃতি

» অসুস্থ প্রবাসী, হাসপাতালে ১বছর ছয়  মাস,সেবকের ভূমিকায় সাংবাদিক মহসিন

»

» যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

» কাতার পুলিশ কলেজের সপ্তম স্নাতক প্রদানে আমির শেখ তামিম

» বাংলাদেশ দূতাবাস কুয়েতের “বিজ্ঞপ্তি”

» কাতারে প্রীতি ফুটবল টুনামেন্ট এর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত

» পুলিশ, র‍্যাব ও আনসারদের কারা কোন পোশাক পেলেন?

» “কুয়েতে শীতের ৫ মাস” তাবু ঘরের গল্প

» ১৯ সন্তানের মা হয়েও পিএইচডি করলেন সৌদি নারী!

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

শাইখ সিরাজের জন্মদিন

আদিত্য শাহীনঃ ভিতরের টান আর প্রকৃতির স্বতঃস্ফূর্ততা থেকেই ফুল ফোটে। বাংলাদেশে যারা সত্যিকারের ফুল ফোটানোর নায়ক এমন মানুষ হাতে গোনা। বহু মানুষ এখনো আছেন যাদের দিকে আলো পড়েনি। আলোর দেখা পেয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়।

একজন মানুষ জীবনভর শুধু সেই অনালোকিত, অচিহ্নিত, অনাবিষ্কৃত উন্নয়ন পথিকদের দিকেই আলো ফেলছেন। ভিতর থেকে বের করে এনেছেন মাটি কামড়ে পড়ে থাকা মানুষের ভিতরের স্বর্ণবাক্য। উলট-পালট করে দিয়েছেন তথাকথিত ভদ্রলোকী স্বপ্নের প্রচলিত সব অবকাঠামো। তিনি শাইখ সিরাজ।

কী গভীর তাঁর টান। কী দুর্দান্ত তাঁর নেশা। কার সঙ্গে তুলনা করবেন? ৪০ বছর ধরে অসাধারণ এক দিনলিপির পাতা পূর্ণ করেছেন তিনি। সপ্তাহে অন্তত এক দিন ভোররাতে পৌঁছতে হবে কৃষকের মাঠে।

মাটির মানুষের সত্যিকারের জীবনাচার ধরতে হবে। আকাশে রং ছড়িয়ে সূর্য কেবল ওঠার প্রস্তুতি নেবে। দিগন্তে ছড়িয়ে থাকবে কুয়াশার বহুসংখ্যক স্তর। শাইখ সিরাজ ক্যামেরায় চোখ রেখে দেখবেন অসাধারণ এক বাংলাদেশ। যারা যেখানে বসে যেভাবেই বাংলাদেশ দেখেন, এভাবে কি দেখা হয়? কজন জানতেন, তেভাগা আন্দোলনের নেতা শরৎ মন্ডল এক অন্ধকার কুটিরে শেষ জীবন কীভাবে কাটিয়েছেন? কেউ কি জানতেন কী অসাধারণ শিল্প আর সৃজন প্রতিভা ধারণ করতেন ঝিনাইদহের আসাননগরের হরিপদ কাপালি, কেউ কি শুনতে পেতেন প্রকৃতিপাগল কার্তিক প্রামাণিকের মনের কথা? কেউ কোনো দিন উপলব্ধিতে এনেছেন দিনাজপুরের মতিউর রহমান যেভাবে ফসলের সঙ্গে কথা বলেন, তা আসলে সব কৃষকের প্রাণের কথা! শাইখ সিরাজ তাঁর চোখকে করে তুলতে চেয়েছেন দেশের মানুষের চোখ।কানকে করে তুলতে চেয়েছেন দেশের মানুষের কান। তাই তিনি নিজে একাকী পাঠ করে, দেখে আর উপলব্ধি করে ঋদ্ধ হতে চাননি, চেয়েছেন তাঁর বিস্ময়ের জায়গায় চোখ পড়ুক সব মানুষের। তাঁর কাছে যা ভালো লাগার তিনি চান সেখানে আসুক সবার মনোযোগ। একসময় দেখা গেল সারা দেশের যত মাটিমুখী খ্যাপা মানুষ সব শাইখ সিরাজের দিকে ছুটছেন।

শাইখ সিরাজ বরাবরই গণমাধ্যম তথা টেলিভিশনের শক্তিকে অনেক বড় করে দেখান। কিন্তু সত্যি কথা বলতে এখানে তার চেয়ে বড় শক্তির জায়গাটি সৃষ্টি করেছেন তিনি নিজে। তা হচ্ছে টেলিভিশন অনুষ্ঠানের আড়ম্বরহীন বাস্তবতা। টেলিভিশন যখন বোকাবাক্স, টেলিভিশন মানেই যখন অভিনয়, বাস্তবতার সঙ্গে ইচ্ছামতো রং চড়ানো, তখন বনের পাখির প্রাকৃতিক কলরবের মতোই মানুষের স্বাভাবিক জীবনাচারের ভিতর চোখের যে প্রশান্তি, সাধারণ ভাষার মধ্যে যে উজ্জীবন তাকে উপজীব্য করেছেন শাইখ সিরাজ। দেখিয়েছেন বটের ছায়ায় বাঁশের মাচায় বসে থাকা মানুষের মেকআপহীন, প্রস্তুতিহীন যে জীবন উপলব্ধি, যে উন্নয়ন ভাবনা তা বাংলাদেশের প্রকৃত শক্তির জায়গাটি চিনিয়ে দেয়। জানিয়ে দেয় জাতিসত্তার সঠিক খোঁজখবর। সত্যিকার অর্থে প্রকৃতিকে বিরক্ত না করে তাকে দেখা এবং দেখানো বেশ কঠিন। কৃষকের প্রকৃতি কী? তার জীবনের গভীর ভাষা কেমন? তা প্রচলিত কোনো গণমাধ্যম প্রয়াসে তুলে আনা যায় না। আমি দেখছি প্রায় ২০ বছর গ্রামে গ্রামে, শহরে শহরে, দেশে দেশে এই গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বের সঙ্গে ঘুরে, যে সহজিয়া ভাষার সঙ্গে তাঁর মেলবন্ধন রচিত হয়, সেই ভাষাটি আমাদের উচ্চাকাক্সক্ষী নাগরিক জীবনের ভাষা নয়। সে ভাষাটি অতি বিনয় মেশানো কৃত্রিমতা নয়, সেই ভাষাটি আভিজাত্যের মধুতে মোহগ্রস্ত করার জাদুও নয়। কৃষক দেখছে তাঁর সামনে এক আয়না। সেখানে তাঁর নিজের মুখটি দেখা যায়। তাঁর অন্তরের গভীরে টোকা পড়লেই বেরিয়ে পড়ে অন্যরকম সব বাক্য। হয়তো কৃষকের নিজের জীবনেও এসব কথা কখনো বলা হয়নি।

শাইখ সিরাজের ক্যামেরার সামনে এক কৃষকের চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে পানি। তাঁর সন্তান পাশে বসা। তিনি বলছেন, বাবাকে এর আগে কখনো কাঁদতে দেখিনি। রুক্ষ-তপ্ত সাহারা মরুভূমি থেকে শুরু করে বরফে মোড়া হিমশীতল কোনো অঞ্চল, প্রাচীন ঐতিহ্যমাখা কোনো জনপদ কিংবা জনমানস থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী পৃথিবীতে যেখানে কৃষি নিয়ে দুটি কথা বলা যায়, শোনা যায় শাইখ সিরাজ চেষ্টা করেছেন সেখানে ছুটে যেতে। পৃথিবীর সব কিছুর মধ্যেই তিনি খুঁজেছেন কৃষির সাজুয্য। পৃথিবী যত দিন থাকবে, মানুষের ক্ষুধা যত দিন থাকবে, খাদ্য যত দিন থাকবে কৃষির ব্যাপ্তি তত দিন। তাই তিনি বলেন, এখানেই জীবনের সব সম্ভাবনা। আমি দুই দশক ধরে অন্য এক চোখে পৃথিবী দেখছি। তিনি তারও প্রায় দুই দশক আগে তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিটাকে প্রস্তুত করেছেন। তখন কৃষক মানে এক নিরুপায় জনগোষ্ঠী আর কৃষি মানে ‘চাষাভুষার কাব্য’। মধ্যখানের অবিরাম সক্রিয় কর্মপ্রবাহের কথা বাংলা ভাষার প্রায় সব মানুষের জানা। আজকের চিত্রটা কী? আজ বাংলাদেশ পৃথিবীতে সবচেয়ে কৃষিসফল দেশ। আজ আমরা কৃষির ঢাল দিয়ে মহামারি ঠেকাই, কৃষির ঢাল দিয়ে সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করি, কৃষির বেষ্টনী গড়ে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা রচনা করি। এ সম্ভাবনার কথা আমি ২০ বছর আগে শুনেছি। শাইখ সিরাজ বলেছেন। বলেছেন, আমাদের সাধ আর সাধ্যের কেন্দ্রবিন্দু কৃষিতে। কৃষিতে বেসরকারি বিনিয়োগ আসতে হবে। কৃষিকে  উপেক্ষার জায়গা থেকে ওপরে তুলে আনতে হবে। নীতিনির্ধারক বা মন্ত্রীকে ঘরে বসে কৃষি পরিচালনা করলে চলবে না। তাঁকে শহুরে বিলাসবহুল চৌহদ্দি থেকে বেরিয়ে কৃষকের মাঠে যেতে হবে, কৃষকের কাঁধে হাত রাখতে হবে, কাদামাটিতে নামতে হবে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাঠের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে হবে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের কৃষকের বন্ধু হতে হবে, কৃষকের সঙ্গে মিশতে হবে। তাঁদের ভিতর ও বাইরে পরিবর্তন আনতে হবে। আজ ৭ সেপ্টেম্বর শাইখ সিরাজের জন্মদিন। তাঁকে অভিনন্দন।

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

কুয়েতে প্রবাসীদের ২০২৫ নতুন বছর নিয়ে ভাবনা,প্রত্যাশা অনেক

ফিনল্যান্ডে বাংলাদেশি কমিউনিটি নবাগত ছাত্রদের সপ্তাহব্যাপী কর্মশালা

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশ্বের খ্যাতিমান নেতাদের মূল্যবান উক্তি

পাসপোর্ট রিপোর্টার্স ফোরাম (পিআরএফ) এর যাত্রা শুরু

দঃ সুনামগঞ্জ উপজেলাবাসীকে আক্কাস মিয়া'র নতুন বছরের শুভেচ্ছা

নতুন বছর উপলক্ষে দঃসুনামগঞ্জ বাসীকে নিজাম উদ্দীনের শুভেচ্ছা

একনজরে ঢাকা ও কোলকাতার পত্রপত্রিকার সব

ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নজরুল মজিদ মাহমুদ স্বপন

বিশিষ্ট শিল্পপতি এম জাকির হুসেন ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন

কুয়েত প্রবাসী ব্যবসায়ী শামীম আহম্মেদ চৌধুরী ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Fri, 31 Jan.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।