অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ভিন্ন আমেজ বইতে শুরু করেছে আগৈলঝাড়া উপজেলাসহ বরিশাল বিভাগের সর্বত্র। শরতের কাশফুলের সাদা শুভ্রতা মনে করিয়ে দেয় বিপদনাশিনী দেবী দুর্গার আগমণী বার্তা। আর সেই শারদীয় উৎসবের অন্যতম দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে এখন মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রতিমা শিল্পীরা। বেশিরভাগ পূজামন্ডপে শেষ প্রস্তুতির কাজও চলছে পুরোদমে। সামনইে সনাতন র্ধমালম্বীদরে বড় উত্সব শারদীয় র্দুগাপূজা। একে সামনে রখেে কারগিাররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছনে। প্রতমিা বানানোর কাজ শষে। শষে মূর্হূতে শল্পিীর তুলরি আঁচড়ে দবেীকে সাজয়িে তোলা হচ্ছ।ে দবেী র্মত্যে আসছনে, তারই আয়োজন যনে প্রকৃততি।ে কাশবনরে দোলায়, আকাশরে নীলাভ র্বণে দবেীর আগমনরে পদধ্বন।ি মণ্ডপে মন্ডপে তারই প্রস্তুত।ি হন্দিু সম্প্রদায়রে মানুষ ‘মা র্দুগা’কে বরণ করে নতিে অধীর আগ্রহে পরম প্রতীক্ষায় দনি গুণছনে। প্রতটিি মণ্ডপে প্রতমিা গড়তে নর্ঘিুম রাত পার করছনে প্রতমিা শল্পিীরা। চলছে মণ্ডপ সাজানোর কাজ। মা আসছনে পৃথবিী থকেে সব অশান্ত,ি অন্যায়, পাপকে বনিাশ করে সত্য ও সুন্দরকে প্রতষ্ঠিা করত।ে সইে প্রত্যাশায় অধীর প্রতীক্ষায় বছর ঘুরে আনন্দময়ীর এই আগমণ-সান্নধ্যিে তারা দুঃখ-যন্ত্রণা ভুলে আনন্দ পতেে চায়। র্দুগাপূজা বাঙালী হন্দিুদরে প্রধান র্ধমীয় উত্সব। তবে ভারতরে অন্যান্য প্রদশেরে অবাঙালি হন্দিুরাও ভন্নি ভন্নি নামে এ উত্সব পালন কর।ে যমেন কাশ্মীর ও দাক্ষণিাত্যে অম্বা ও অম্বকিা, গুজরাটে হঙ্গিুলা ও রুদ্রাণী, কান্যকুব্জে কল্যাণী, মথিলিায় উমা এবং কুমারকিা প্রদশেে কন্যাকুমারী নামে দবেীর পূজা ও উত্সব পালতি হয়। পূজার আগে খড়-মাটি দয়িে প্রতমিা তরৈি করে তাতে কাঞ্চনর্বণরে রং লাগানো হয়। অতীতে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়সিহ আরও কয়কেটি সম্পন্ন পরবিার প্রতমিায় দামি শাড়,ি এমনকি সোনার গহনা র্পযন্ত পরাতো এবং তত্সহ প্রতমিা বর্সিজন দতি। এই পূজা কউে ব্যক্তগিতভাবে কর,ে কউেবা সমষ্টগিতভাব।ে সমষ্টগিত পূজাকে বলা হয় বারোয়ারী বা র্সাবজনীন র্দুগোত্সব। বাংলাদশেে প্রতবিছর যথাযোগ্য র্মযাদায় পালতি হয় র্দুগাপূজা।
‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ এই বাক্য ধারণ করে যুগ যুগ ধরে এখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ রয়েছে হিন্দুদের দুর্গোৎসবকে ঘিরে। শুরু হয়েছে চোখ ধাঁধানো পূজামন্ডপ, মঞ্চ তৈরি ও দর্শণার্থীদের আকর্ষণের জন্য নানা পরিকল্পনার কাজ। স্থানীয় পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উৎসব চলাকালীন সময়ে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানানো হয়েছে। বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে বেশি পূজা অনুষ্ঠিত হয় আগৈলঝাড়ায়। তাই প্রতিমা বানাতে এখানকার মৃৎশিল্পীদের চোখে এখন ঘুম নেই। বছরের সবচেয়ে ব্যস্ত সময় তাদের এই শরৎকাল। কারণ- বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে বেশি পূজা অনুষ্ঠিত হয় আগৈলঝাড়া উপজেলায়। সময়মত মন্ডপে প্রতিমা সরবরাহ ও স্থায়ী মন্ডপে নির্মিত প্রতিমায় মাটির শেষ কাজ করতে কোন ফুসরৎ পাচ্ছেন না প্রতিমা শিল্পীরা। অধিকাংশ মন্ডপে প্রতিমার গায়ে মাটির শেষ প্রলেপ দেয়া শেষ হয়েছে। এ সপ্তাহেই শেষ হবে রংতুলির শেষ আঁচড়। পঞ্জিকামতে ১৮ অক্টোবর দেবীর ঘোটকে আগমণ থেকে পূজা শুরু হয়ে ২২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দোলায় গমণের মধ্য দিয়ে ৫দিনের পূজার সমাপ্তি হবে। আগৈলঝাড়া উপজেলার উত্তর শিহিপাশা গ্রামের পালপাড়ার প্রতিমা শিল্পীরা আগৈলঝাড়াসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায়ও প্রতিমা নির্মাণে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এবছর আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নে ৩৯টি, বাকাল ইউনিয়নে ৩৪টি, বাগধা ইউনিয়নে ২১টি, গৈলা ইউনিয়নে ২২টি ও রতœপুর ইউনিয়নে ২৩টি পূজামন্ডপসহ পাঁচ ইউনিয়নে মোট ১শ’ ৩৯টি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এখানকার প্রতিমা শিল্পীদের নির্মাণশৈলীর কারণে উপজেলা ছাড়াও বিভাগের বিভিন্ন জেলায় তাদের শিল্পকর্মের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গত শনিবার প্রতিমায় রং করার সময় কথা হয় শিহিপাশা গ্রামের মৃৎশিল্পী জয়দেব পালের সাথে। এসময় তার সাথে কাজ করছিল তারই ছেলে সঞ্জয় পাল। তারা জানান, আগৈলঝাড়ার শিল্পীদের নির্মিত বিভিন্ন ধরণের প্রতিমা সুদৃশ্য হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় তাদের প্রতিমার চাহিদা রয়েছে। এবছর তারা ২৫টি স্থানে দুর্গা প্রতিমা তৈরীর অর্ডার পেয়েছেন। জয়দেব পালের মেঝভাই শিবু পাল পেয়েছেন ২০টি ও ছোটভাই মহাদেব পাল পেয়েছেন ১৫টি প্রতিমা তৈরির অর্ডার। বিভিন্ন সাইজের প্রতিমা নির্মাণের জন্য তারা সর্বনিম্ন ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন। এরমধ্যে আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাড়াও ঝালকাঠি, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, মেহেন্দীগঞ্জ, গৌরনদী, নলচিড়া, বাটাজোর এলাকার মন্ডপে তারা প্রতিমা নির্মাণ করছেন। তারা এবার ৬জন শিল্পীকে অগ্রিম টাকা দিয়ে তাদের সাথে কাজ করাচ্ছেন। কয়েক ধরণের প্রতিমা তৈরি করা হয় বলে জানান তারা। শ্রাবণ মাসের শেষদিনে মনসা পূজার পর থেকেই শুরু হয় তাদের দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ। তারা আরও জানান, সারাবছরই চলে বিভিন্ন প্রতিমা তৈরির কাজ। শুধু দুর্গা প্রতিমাই নয়, এখানে সব পূজার জন্যই প্রতিমা তৈরি করা হয়। এসব প্রতিমা অর্ডার নিয়ে ও বাড়িতে তৈরি করে বিক্রি করা হয়।