ছাতক প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের ছাতকে সন্তানের পিতৃ পরিচয় ও স্বামীর অধিকার আদায়ে দীর্ঘ ১৬মাস থেকে মানুষের দ্বারে-দ্বারে ঘুরছে লায়লী বেগম। সে উপজেলার কালারুকা ইউপির ঝাওয়া আশ্রায়ন প্রকল্পে বসবাসরত মৃত আনজব আলীর মেয়ে। বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোললে একপর্যায়ে লায়লী অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়ে। এরপর বিয়ের জন্যে চাঁপ সৃষ্টি করলে ঘটনাকারি রাসেল মিয়া অস্বীকৃতি জানালে তার বিরুদ্ধে ছাতক থানায় মামলা (নং-১০, তাং- ০৯.০৫.২০১৬ইং) দায়ের করা হয়। রাসেল মিয়া সিংচাপইড় ইউপির গহরপুর গ্রামের মৃত সামছ উদ্দিনের পুত্র ও পৌর শহরের আপন হোটেল সংলগ্ন আ’লীজ হোটেলের পাশের বাসার অধিবাসি বলে জানা গেছে। মামলা দায়েরের পর আসামি পক্ষের অব্যাহত হুমকি ও প্রাননাশের ভয়ভীতিসহ আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের ক্ষেত্রে সন্দেহ ও সংশয় দেখা দেয়ায় লায়লী বেগম তার স্বামি রাসেল, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সোহেলসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে গত নভেম্বর মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মহা পুলিশ পরিদর্শক, সিলেট বিভাগীয় কমিশনারও ডিআইজসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারি সংস্থার কাছে লিখিত অভিযোগ করে। এতে ২১ডিসেম্বর ঢাকা সিকিউরিটি সেল এর ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মামলা ও লিখিত অভিযোগে জানা যায়, লায়লী বেগমের কাবিন-রেজিষ্ট্রি মুলে প্রায় ৮বছর আগে জনৈক দেলোয়ার হোসেনের সাথে বিয়ে হলে তাদের ঔরসজাত লায়েক মিয়া (৭) নামের এক সন্তান রয়েছে। জন্মের পর দেলোয়ার স্ত্রী ও সন্তানের কোন খোজ খবর না নেয়ায় নিরুপায় হয়ে ছাতক শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে রান্না-বান্নাসহ ঝিয়ের কাজ করতে থাকলে পরিচয় ঘটে রাসেলের সাথে। এরপর নিয়মিত ফোনালাপ থেকে তাদের সম্পর্ক আরো গভীর হয়। একপর্যায়ে ২০১৪সালের ১১নভেম্বর রাতে কাবিন রেজিষ্ট্রির মাধ্যমে বিয়ে করার আশ্বাসে লায়লীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। কয়েকদিন পর কাবিননামার মাধ্যমে বিয়ে প্রস্তাব দিলে রাসেল স্ত্রীর মর্যাদা দেয়ার কথা বলে মন্ডলী ভোগস্থ ভাড়াটে বাসা থেকে লায়লীকে ছোরাবনগর শাহজালাল আবাসিক এলাকার সমছু মিয়ার কলোনীতে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করে। এক পর্যায়ে সে অন্তঃস্বত্তা হলে শুরু হয় দু’জনের মধ্যে বিরোধ। ২০১৫সালের ৩০অক্টোবর সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হলে জন্ম নেয় সুহেল নামের এক পুত্র সন্তান। তার বয়স ১৬মাস চলছে। লায়লী বেগম জানায়, মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই সোহেল আহমদ ঘটনাস্থলে গিয়েও ওসিসির অভিযোগ আমলে না নিয়ে নির্মম আচরণসহ মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহের লক্ষ্যে নানা ধরনের টালবাহানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে দারোগা মামলার পূর্বের এজাহার পরিবর্তনের পরামর্শ দেন। পরে তিনি ভূয়া আপোষনামা ও শপথ নামাসহ জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ডকুমেন্ট তৈরী করে মামলার ফাইন্যাল রিপোর্ট দেন। সে জানায়. আমি মানুষ, সন্তানের পিতৃ পরিচয় জানার কি- আমার নাগরিক অধিকার নেই। রাসেল কর্তৃক জোরপূর্বক ধর্ষিত হয়ে গর্ভবতী হলাম। এখন ১৬মাসের সন্তানের পিতৃত্বের দাবিতে প্রশাসনসহ সমাজপতিদের দ্বারে-দ্বারে ঘুরছি। এতে সুবিচার থেকে বি ত হয়ে অসহায়ভাবে মানবেতর জীবন-যাপন করে আসছি। গরীবের কি কোন বিচার পাওয়ার অধিকার নেই এমন প্রশ্ন লায়লীর।