বিশেষ প্রতিবেদকঃ কুয়েতে প্রবাসী বাংলাদেশি মা ও মেয়ে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন শুনে ঘটনার দিন রাতেই কুয়েতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।
কুয়েতে খুন হওয়া ওই নারী ও তাঁর মেয়ের লাশ দ্রুত বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, কারা এ নির্মম হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। খুনিদের আটকের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে কুয়েত পুলিশ।
কুয়েতে প্রবাসী বাংলাদেশি মা ও মেয়ে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় নিহত মা ও মেয়ের ঢাকার ধামরাই এলাকার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সংসারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা।
পুলিশ জানায়, ২৫ বছর আগে সংসারের অভাব ঘোচাতে ধামরাইয়ের নতুন দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান শিকদারের স্ত্রী মমতা বেগম (৫৬) কুয়েতে একটি কোম্পানিতে চাকুরী করতে যান। পরে ওই নারী ধীরে ধীরে ওই প্রতিষ্ঠানে শক্ত অবস্থান করে নিলে মালিক পক্ষ তাঁর কাজে সন্তষ্ট হয়ে বেতন বাড়িয়ে দেয়। বেতনের টাকা দিয়ে ধামরাইয়ে একটি দোতলা বাড়ি করেন তিনি।
পরে ওই নারী তাঁর মেয়ে স্বর্ণলতাকে (৩২) তিন বছর আগে বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে নিয়ে তাঁর কোম্পানিতে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। মা-মেয়ের চাকরিতে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। কুয়েতের হাসাবিয়া শহরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন মা ও মেয়ে।
ওই কোম্পানিতে চাকরি করা যশোরের ছেলে রফিকুল ইসলামের সাথে পরিচয় হয় মমতা বেগমের মেয়ে স্বর্ণলতার। পরে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। স্বর্ণলতার সাথে রফিকুলের বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো শুক্রবার (২৮ আগস্ট)।
মেয়ের বিয়ে ও ধামরাইয়ে পরিবারের খরচের জন্য গত মঙ্গলবার কুয়েতের একটি ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা তোলেন মমতা বেগম। টাকা উত্তোলনের পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন মমতা ও স্বর্ণলতা। শুক্রবার তাদের ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হলে প্রতিবেশীরা কুয়েত পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দরজার তালা ভেঙ্গে মা ও মেয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। এসময় তাদের ঘরের আসবাবপত্র এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পায় পুলিশ।
এদিকে, নিহত মা ও মেয়ের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। মা ও বোনের হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন নিহত মমতা বেগমের ছেলে এজাজ আহমেদ শিকদার।
তিনি বলেন, সরকার যেন দ্রুত আমার মা ও বোনের লাশ দেশে নিয়ে আসে। কুয়েতে মা ও মেয়েকে হত্যার কথা শুনে শনিবার বিকেলে নিহতের পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে গিয়ে শান্তনা দেন ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র সাহা।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, কুয়েতে মা ও মেয়ের হত্যার বিষয়টি আমি শুনেছি। বিষয়টি সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসকে তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।