বিশ্বখ্যাত মুসলিম দার্শনিক ও সমাজতাত্ত্বিক ইবনে খালদুনের ঐতিহাসিক একটি উক্তিকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ‘আরব টাইমস অনলাইন’-এর এক কলামে মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার সমালোচনা করা হয়েছে। কলামিস্ট আহমেদ আল জারাল্লাহ ইবনে খালদুনের বিখ্যাত গ্রন্থ ‘মুকাদ্দিমা’ থেকে উদ্ধৃত করে খাদ্যাভ্যাস এবং মানব চরিত্রের ওপর এর প্রভাব নিয়ে গভীর সামাজিক বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন।
আল জারাল্লাহ তাঁর লেখায় ইবনে খালদুনের সেই বহুল আলোচিত উক্তিটি তুলে ধরেন, যেখানে বলা হয়েছে: “আরবরা উট খেয়েছে এবং তার ফলস্বরূপ তারা হিংসা ও কঠোরতা অর্জন করেছে। তুর্কিরা ঘোড়া খেয়েছে এবং তার ফলে তাদের মধ্যে উগ্রতা ও শক্তি এসেছে।” এই উক্তিটি মূলত সেই প্রাচীন বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে, যেখানে খাদ্যের উৎস একটি জাতির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গঠনে ভূমিকা রাখে বলে মনে করা হতো।
তবে কলামিস্ট এর সূত্র ধরে আধুনিক সমাজের এক কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি মন্তব্য করেন, যদি খাদ্যের প্রভাব চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রে সত্য হয়, তবে বর্তমানে আমাদের সমাজে এর কী প্রভাব পড়ছে? তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “আমাদের সময়ে, আমরা অতিরিক্ত মুরগি খেয়েছি, এবং ফলস্বরূপ আমরা অতিরিক্ত বকবক ও কিচিরমিচির করছি। আমরা অন্যান্য জাতির উপহাসের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছি।”
আল জারাল্লাহ-এর মতে, সমাজের একাংশ যেন মুরগির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য— নম্রতা, নত মস্তক এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার অভাব— গ্রহণ করেছে। তিনি পাঠকদের প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা নিজেদের এই নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে মুক্ত রাখেন এবং অন্যের সমালোচনা বা বিদ্বেষ ছড়ানো থেকে বিরত থাকেন। তিনি পরামর্শ দেন, সফল ব্যক্তিরা কখনও অন্যের নেতিবাচকতা বা ‘আবর্জনার ট্রাকে’ নিজেদের মন খারাপ করতে দেন না।
এই কলামটি বর্তমানে আরব সমাজে একটি নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যেখানে ইবনে খালদুনের ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণকে ব্যবহার করে আধুনিক সময়ের সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।











