বর্ষাবিলাস
মুর্শিদা আক্তার রজনী
বহুরূপের পসরা সাজিয়ে এলো বর্ষা।
কবি’র চোখে বর্ষার বারিবিন্দুগুলি
ছন্দের তাল মিলিয়ে নেচে ওঠে-
স্বরবৃত্ত,মাত্রাবৃত্ত কিংবা অক্ষরবৃত্তে।
প্রেমিক হৃদয়ে তা কেয়া-কদম ফুটিয়ে তোলে।
গাঁথে অনুরাগ,অভিসারের মালা।
প্রকৃতির মুগ্ধ দর্শক ধোয়া-মোছা
তরতাজা সবুজ দেখে হয় উচ্ছ্বসিত।
শহুরে ললনারা অবসর পায় টিভি সিরিয়ালে,
আর গাঁয়ের বধূরা নকশি কাঁথার নিপুণ বুননে।
শহুরে প্রবীণ-প্রবীণা ক্লান্ত বর্ষাবসরে।
গ্রাম্য বৃদ্ধ-বৃদ্ধার অবসর জাল-শিঁকার
সৃষ্টিশীলতায় হয়ে ওঠে ঐতিহ্যবহ।
বনে বনে চলে ফুল ফোটার তুমুল প্রতিযোগিতা।
সংস্কৃতিমনা সুশীলেরা বর্ষাকে বরণে
আনন্দে নাচে-গানে সুরের লহরীতে মাতায় ভুবন।
এই সুখীজনেরা চর্মচক্ষুতে প্রতিনিয়ত দেখেও
কখনো কি অন্তর্চক্ষুতে দেখতে পায়?-
আলোকিত শহুরে ফুটপাত নির্জন হওয়ার অপেক্ষায়
ঘুম জড়ানো চোখে বসে অদূরে
কুকুরের কলহ দেখছিল যে শিশুটি,
লক্ষ মানুষের পদধূলি,কফ,থুঁতু
ঝাট দিয়ে সেই শিশুটিকে কোলে শুইয়ে
ঐ ফুটপাতে রাত্রিযাপন করে যে মা-
তাদের বর্ষাবিলাসের চিত্র?
কিংবা গাঁয়ের সেই পরিবারটি,চাল আনা হয়নি বলে
চুলো জ্বলেনি তিনদিন,
চালে নেই খড়,বর্ষারাতে ঘরের
একটি কোণে জড়সড় চার-পাঁচটি অসহায় প্রাণ-তাদের ছবি?
17/06/17;8:20AM