Menu |||

দেশের দ্রুততম মেহেদী নকশাকার নবীগঞ্জের এনাজউদ্দীনঃ বিয়ে-শাদীতে অন্দর মহলেই যার কদর তুঙ্গে

বদরুল আলম চৌধুরী (বিশেষ প্রতিনিধি) বিয়ে-শাদীর অনুষ্ঠানে হৈ-হুল্লোড়ের মাঝেও অন্দর মহলে

সমাদর পান তিনি। কদর
ও জনপ্রিয়তা যেন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছেই। ‘মেহেদী মাস্টার এনাজ ভাই’
(সংক্ষেপে মেহেদী ভাই) সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জের বিয়ে-শাদীসহ বিভিন্ন
অনুষ্ঠান-পরবে এখন পরিচিত মুখ। নিজ নিজ হাতে মেহেদীর কারুকাজ করাতে পাগল
টিনএজার থেকে শুরু করে ষাট-সত্তরোর্ধ্ব বয়সী বৃদ্ধারাও। অতি দ্রুত ও
নকশার মুন্সিয়ানা দেখতে দেখতে মুখে রা সরে না কারই।

প্রথম প্রথম পুরুষ হয়েও নারীদের হাত মেহেদী দিয়ে রাঙ্গাবে পুরুষ! ভাবা
যেত না কখনও। বিভিন্ন চড়াই-উৎরায় পেরিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে ধর্মীয়
ঘেরাঢোপের বাইরে গিয়ে মেহেদীর নকশা করেই চলেছেন। সিলেট পুলিশ লাইন,
কলেজ-স্কুলের বিভিন্ন মেলা-প্রদশর্ণীতে তার উপস্থিতি অধারিত।

হাতের তালুতে (কব্জি) যে কোন নকশা করতে সময় নেন মাত্র এক থেকে দেড় মিনিট।
আর হাতের কনুই পর্যন্ত সময় লাগে চার থেকে পাঁচ মিনিট।

হাতে মেহেদীর নকশা করার আগ্রহ জন্মালো কিভাবে-এ প্রসঙ্গে জানালেন, এক যুগ
আগের কথা। একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে ফুপাত বোনকে মেহেদী দিয়ে হাত
রাঙ্গানোর অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তাচ্ছিল্যভরে যেনতেনভাবে একটি ডিজাইন
করে দিয়েছিল। ডিজাইনটা আমার পছন্দ হয়নি। জেদটা পেয়ে বসল। টিস্যু পেপারের
উপর চালাতে লাগলাম বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তার পরের ইতিহাস তো সকলের
জানা! তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

জীবন সংগ্রামে ইলেক্ট্রিশিয়ান হিসেবে জীবিকা শুরু করেন। পরে হাতের কাজ
তাকে নিয়ে গেছে জনপ্রিয়তার শীর্ষচূড়ায়। মমতাজ মেহেদী হাতে মেহেদী
রাঙ্গানো প্রতিযোগিতায় হয়েছিলেন প্রথম। এক চোট হেসে বলতে লাগলেন, ৪৪ জনের
মেয়ে প্রতিযোগীর মধ্যে আমি একমাত্র পুরুষ প্রতিযোগী। একজনের হাতে মেহেদী
দিয়ে একঘন্টার মধ্যে রাঙ্গাতে হবে-এই ছিল প্রতিযোগিতার নিয়ম। কিন্তু আমি
পৌণে একঘন্টায় ১৫ জনের হাতে মেহেদী দিয়ে নকশা করেছি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত
চিত্রনায়িকা শাহনূর, ধারাভাষ্যকার সানজিদা আক্তারসহ সকলেই প্রশংসা করেছে।
দ্রুত মেহেদী নকশাকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়াও বিশ^নাথের একটি
অনুষ্ঠানে দ্রুত হাতে মেহেদী দেয়া দেখে তৎকালীন ব্রিটিশ হাই কমিশনার
আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও তার স্ত্রী অভিভূত হন এবং আকুণ্ঠ প্রশংসা করেন।

মজার কাহিণী সম্পর্কে জানালেন, সিলেট শহরে এক ইউপি চেয়ারম্যানের ভাইয়ের
বিয়েতে ব্রিটেন থেকে দু’জন মেহেদী নকশা বিশেষজ্ঞ আনা হয়েছিল। তাদের কাজ
দেখতে দেখতে নিজেরও নকশা করতে হাত নিসপিস করছিল। পরে দেখা গেল ব্রিটিশ
বিশেষজ্ঞ কাছ থেকে সবাই আমার কাছেই চলে এসেছে। তারা অবশ্য দ্রুত নকশা করা
ও নকশা দেখে অভিভূত হয়েছে। পিঠ চাপড়ে উৎসাহ দিয়েছে।

তিনি শুধু কী মেহেদী মাস্টার? গায়ে হলুদের স্টেজ, বিয়ের তোরণ, নিয়ন-ডিজে
লাইটিং, আল্পনা, ফুড ডেকোরেশন, কাপড়/নেটের কাজ কি পারেন না! আবার কখনও
দেখা যায় মূর্মুষ রোগী নিয়ে হাসপাতাল-ক্লিনিকে দৌড়াদৌড়ি করছেন।

পুরো নাম এনাজউদ্দীন। পেশায় ইভেন্ট অর্গানাইজার। পরিবারে স্ত্রী ও দু’টি
পুত্র সন্তান ছাড়াও রয়েছে মা-বাবা, চার ভাই ও এক বোন। অত্যন্ত দরিদ্র
পরিবারের জৈষ্ঠ্য সন্তান হিসেবে নিজের চেষ্টায় অন্যান্য ভাই-বোনকে মানুষ
করেছেন। বাড়ী হবিগঞ্জ জেলা শহর থেকে ৮০ কিঃমিঃ দূরে নবীগঞ্জ উপজেলার
কসবা গ্রামে। নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজারের
‘সানজিদ পুষ্পালয়’।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» কুয়েতে কুমিল্লা প্রবাসী সংগঠনের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

» কুয়েত বিএনপির আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

» কুয়েত প্রবাসী কমিউনিটি নেতা মো: আজাদুর রহমান আর নেই

» মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে অর্থ ও পরিকল্পনা উপ-কমিটির শ্রদ্ধা জ্ঞাপন

» কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস পালিত

» জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন কুয়েতের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

» বাংলাদেশ ফুটবল এসোসিয়েশন কুয়েতের নতুন কমিটি, সভাপতি মোরশেদ-সাধারণ সম্পাদক কোরবান

» প্রবাসী স্বজন ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

» মৌলভীবাজারে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ

» মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২৭ জনে

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

দেশের দ্রুততম মেহেদী নকশাকার নবীগঞ্জের এনাজউদ্দীনঃ বিয়ে-শাদীতে অন্দর মহলেই যার কদর তুঙ্গে

বদরুল আলম চৌধুরী (বিশেষ প্রতিনিধি) বিয়ে-শাদীর অনুষ্ঠানে হৈ-হুল্লোড়ের মাঝেও অন্দর মহলে

সমাদর পান তিনি। কদর
ও জনপ্রিয়তা যেন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছেই। ‘মেহেদী মাস্টার এনাজ ভাই’
(সংক্ষেপে মেহেদী ভাই) সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জের বিয়ে-শাদীসহ বিভিন্ন
অনুষ্ঠান-পরবে এখন পরিচিত মুখ। নিজ নিজ হাতে মেহেদীর কারুকাজ করাতে পাগল
টিনএজার থেকে শুরু করে ষাট-সত্তরোর্ধ্ব বয়সী বৃদ্ধারাও। অতি দ্রুত ও
নকশার মুন্সিয়ানা দেখতে দেখতে মুখে রা সরে না কারই।

প্রথম প্রথম পুরুষ হয়েও নারীদের হাত মেহেদী দিয়ে রাঙ্গাবে পুরুষ! ভাবা
যেত না কখনও। বিভিন্ন চড়াই-উৎরায় পেরিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে ধর্মীয়
ঘেরাঢোপের বাইরে গিয়ে মেহেদীর নকশা করেই চলেছেন। সিলেট পুলিশ লাইন,
কলেজ-স্কুলের বিভিন্ন মেলা-প্রদশর্ণীতে তার উপস্থিতি অধারিত।

হাতের তালুতে (কব্জি) যে কোন নকশা করতে সময় নেন মাত্র এক থেকে দেড় মিনিট।
আর হাতের কনুই পর্যন্ত সময় লাগে চার থেকে পাঁচ মিনিট।

হাতে মেহেদীর নকশা করার আগ্রহ জন্মালো কিভাবে-এ প্রসঙ্গে জানালেন, এক যুগ
আগের কথা। একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে ফুপাত বোনকে মেহেদী দিয়ে হাত
রাঙ্গানোর অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তাচ্ছিল্যভরে যেনতেনভাবে একটি ডিজাইন
করে দিয়েছিল। ডিজাইনটা আমার পছন্দ হয়নি। জেদটা পেয়ে বসল। টিস্যু পেপারের
উপর চালাতে লাগলাম বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তার পরের ইতিহাস তো সকলের
জানা! তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

জীবন সংগ্রামে ইলেক্ট্রিশিয়ান হিসেবে জীবিকা শুরু করেন। পরে হাতের কাজ
তাকে নিয়ে গেছে জনপ্রিয়তার শীর্ষচূড়ায়। মমতাজ মেহেদী হাতে মেহেদী
রাঙ্গানো প্রতিযোগিতায় হয়েছিলেন প্রথম। এক চোট হেসে বলতে লাগলেন, ৪৪ জনের
মেয়ে প্রতিযোগীর মধ্যে আমি একমাত্র পুরুষ প্রতিযোগী। একজনের হাতে মেহেদী
দিয়ে একঘন্টার মধ্যে রাঙ্গাতে হবে-এই ছিল প্রতিযোগিতার নিয়ম। কিন্তু আমি
পৌণে একঘন্টায় ১৫ জনের হাতে মেহেদী দিয়ে নকশা করেছি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত
চিত্রনায়িকা শাহনূর, ধারাভাষ্যকার সানজিদা আক্তারসহ সকলেই প্রশংসা করেছে।
দ্রুত মেহেদী নকশাকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়াও বিশ^নাথের একটি
অনুষ্ঠানে দ্রুত হাতে মেহেদী দেয়া দেখে তৎকালীন ব্রিটিশ হাই কমিশনার
আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও তার স্ত্রী অভিভূত হন এবং আকুণ্ঠ প্রশংসা করেন।

মজার কাহিণী সম্পর্কে জানালেন, সিলেট শহরে এক ইউপি চেয়ারম্যানের ভাইয়ের
বিয়েতে ব্রিটেন থেকে দু’জন মেহেদী নকশা বিশেষজ্ঞ আনা হয়েছিল। তাদের কাজ
দেখতে দেখতে নিজেরও নকশা করতে হাত নিসপিস করছিল। পরে দেখা গেল ব্রিটিশ
বিশেষজ্ঞ কাছ থেকে সবাই আমার কাছেই চলে এসেছে। তারা অবশ্য দ্রুত নকশা করা
ও নকশা দেখে অভিভূত হয়েছে। পিঠ চাপড়ে উৎসাহ দিয়েছে।

তিনি শুধু কী মেহেদী মাস্টার? গায়ে হলুদের স্টেজ, বিয়ের তোরণ, নিয়ন-ডিজে
লাইটিং, আল্পনা, ফুড ডেকোরেশন, কাপড়/নেটের কাজ কি পারেন না! আবার কখনও
দেখা যায় মূর্মুষ রোগী নিয়ে হাসপাতাল-ক্লিনিকে দৌড়াদৌড়ি করছেন।

পুরো নাম এনাজউদ্দীন। পেশায় ইভেন্ট অর্গানাইজার। পরিবারে স্ত্রী ও দু’টি
পুত্র সন্তান ছাড়াও রয়েছে মা-বাবা, চার ভাই ও এক বোন। অত্যন্ত দরিদ্র
পরিবারের জৈষ্ঠ্য সন্তান হিসেবে নিজের চেষ্টায় অন্যান্য ভাই-বোনকে মানুষ
করেছেন। বাড়ী হবিগঞ্জ জেলা শহর থেকে ৮০ কিঃমিঃ দূরে নবীগঞ্জ উপজেলার
কসবা গ্রামে। নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজারের
‘সানজিদ পুষ্পালয়’।

Facebook Comments Box


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



আজকের দিন-তারিখ

  • শুক্রবার (বিকাল ৪:২৯)
  • ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ (বসন্তকাল)

Exchange Rate

Exchange Rate EUR: শুক্র, ২৯ মার্চ.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 / +8801920733632

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।