শাহজালাল (র.) দরগাহ থেকে: আশেকানে প্রাণ জুড়াইলো শাহ্ জালাল বাবার দীদারে, ভক্ত হইয়া যে গিয়াছে বাবার মাজারে…। পবিত্র ওরস মোবারক উপলক্ষে হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজারে ভক্তদের ঢল নেমেছে।
তিল ধারণের জায়গাও যেন খালি নেই মাজার ও আশপাশের এলাকায়। আল্লাহু আল্লাহু ধ্বনিতে মুখরিত আকাশ বাতাস। আর ভক্তিমূলক গজল চলছে কাফেলায়।
হযরত শাহজালাল (র.) এর দুই দিনব্যাপী ৬৯৭তম বার্ষিক ওরস মোবারকে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার ভক্ত আশেকানের ঢল নেমেছে সিলেটে।
১৯ জিলক্বদ মোতাবেক মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকালে গিলাফ ছড়ানোর মধ্য দিয়ে হযরত শাহজালাল (র.) এর দুই দিনব্যাপী বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সারাদিন গিলাফ ছড়ানোর পাশাপাশি রাতে জিকির-আযকার, শব্বিনা খতম, কোরান খানি, মারেফতি, বাউল, মুর্শিদি আর ভক্তিমূলক গজল ও গানে মুখরিত হয় মাজার অঙ্গন।
এরপর রাত ৩টায় আখেরি মোনাজাত শেষে ২০ জিলক্বদ মোতাবেক বুধবার (২৪ আগস্ট) ভোরে শিরনি বিতরণের মধ্য দিয়ে ৬৯৭তম ওরস মোবারক শেষ হবে।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় মাজার ও আশ-পাশের এলাকা। মানুষের চাপ সামাল দিতে বন্ধ করে দেওয়া যেন মুশকিল হয়ে পড়েছে মাজার কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের।
সরেজমিন রাতে মাজার ঘুরে দেখা গেছে, নারী-পুরুষ নিরবিশেষে লাখো মানুষ যে যার মতো জিকির আজগারে ব্যস্ত। কেউ আল্লাহু-আল্লাহু জিকিরে মশগুল, কেউবা গাইছেন পীর-মুর্শিদী গান, কেউ ধরেছেন ধ্যান। আবার অনেক নারী পুরুষ বিশ্রাম নিতেও দেখা গেছে।
এছাড়া দরগাহের প্রধান ফক সংলগ্ন স্থানে চলছে শিরনী তৈরি। সেখানে প্রায় দেড় শতাধিক লোক শিরনী তৈরিতে নিয়োজিত রয়েছেন।
সুলতানুল বাংলা, জালালুদ্দীন. জালালুল্লাহ্ দরগাহ হযরত শাহজালাল মুজার্রদ ইয়েমেনী (রা.) এর প্রধান খাদেম সরেকওম মোতাওয়াল্লী ফতেহ উল্লাহ আল আমান বাংলানিউজকে বলেন, এবার ৫০২ ডেগ শিরনী করা হচ্ছে। প্রতি বছর এরকমই করে থাকি। পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বলেন, দরগাহে যত ভক্ত-আশেকানরা আসুক সকলে শিরনী পাবে। কখনো শিরনীর ঘাটতি পড়েনি, পড়বেও না ইনশাহআল্লাহ।
মঙ্গলবার দিনগত রাত তিনটায় আখেরি মোনাজাত শেষে ভোরে শিরনি বিতরণের মধ্য দিয়ে দু’দিনের ওরস মোবারক সম্পন্ন হবে বলেন তিনি।
এদিকে, দরগাহের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন ফটকে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশও মোতায়েন রয়েছে। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবার জন্য রয়েছে দু’টি মেডিকেল টিম। সেইসঙ্গে দমকল বাহিনী, বিদ্যুৎ বিভাগের দুটি টিম সার্বক্ষণিক উপস্থিত রয়েছেন জানান সংশ্লিষ্টরা।
প্রতি বছর আরবী মাসের ১৯ ও ২০ জিলক্বদ হযরত শাহজালাল (র.) মাজারে দু’দিনব্যাপী ওরস উদযাপন হয়।