রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বেনীপুর গ্রামের জঙ্গি আস্তনায় নিহত পাঁচ জঙ্গির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত করেন রামেকের সরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এনামুল হক। পরে তিনি জানান, নিহত পাঁচ জঙ্গির সবাই বোমার আঘাতে নিহত হয়েছে। এর মধ্যে দুইজনের শরীরের বোমা ও স্প্লিন্টার এবং তিনজনের শরীরে শুধু স্প্লিন্টারের চিহ্ন রয়েছে।
ডা. এনামুল হক বলেন, ‘সাজ্জাদ ও আল-আমিনের শরীরের পেটের অংশে বোমার বিস্ফোরণের বড় ক্ষত ও পোড়ার চিহ্ন রয়েছে। তারা বোমা বহন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর বেলী আক্তার, কারিমা ও আশরাফুলের শরীরে বোমার স্প্লিন্টারের ক্ষত রয়েছে। আশরাফুলের মাথাতেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে গুলির কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিফজুর আলম মুন্সি বলেন, ‘জঙ্গিদের মরদেহগুলো হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। স্বজনরা মরদেহ না নিলে শনিবার সেগুলো দাফনের ব্যবস্থা করার জন্য কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে আবেদন জানানো হবে। এরপর মরদেহগুলো তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
বৃহস্পতিবার ভোররাতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে মাটিকাটা ইউনিয়নের বেনীপুর গ্রামের সাজ্জাদ আলীর বাড়িটি ঘিরে ফেলে পুলিশ। এরপর ভেতরে থাকা জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হলেও তারা সাড়া দেয়নি। পুলিশ তখন ফায়ার সার্ভিসকে ডেকে পানি ছিটিয়ে বাড়ির পেছনের মাটির দেয়ালটি ধসিয়ে ফেলতে তৎপরতা শুরু করে।
এ সময় জঙ্গিরা বাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আব্দুল মতিন নিহত হন। আর আহত হন দুই পুলিশ সদস্য। এ ঘটনার পর দুই নারীসহ এই পাঁচ জঙ্গি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মহুতি দেন। তবে আত্মসমর্পণ করেন সাজ্জাদের বড় মেয়ে সুমাইয়া। ঘটনাস্থল থেকে সুমাইয়ার দুই শিশু সন্তানকেও উদ্ধার করা হয়।
পরে শুক্রবার সকাল থেকে বাড়িটিতে শুরু হয় অপারেশন ‘সান ডেভিল’। দুপুরে শেষ হয় অভিযান। অভিযান পরিচলানকালে বাড়িতে পাওয়া যায় শক্তিশালী ১১টি বোমা, পিস্তল, গুলি, ম্যাগজিন, গানপাউডার ও জিহাদী বইসহ বোমা তৈরির নানা উপকরণ। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।