জাকির সিকদারঃ বরিশাল বিভাগের এক হাজার ৬৭৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছয় হাজার ১৬৮। ২৫ হাজার ৮০০ সহকারী শিক্ষক পদের মধ্যে দুই হাজার ৯৪১টি পদ শূন্য রয়েছে।বাবুগঞ্জ উপজেলায় ফলের দিক দিয়ে সব সময়ই শীর্ষস্থানটি ধরে রাখে কেদারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়ে প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়টিতে ১১টি শিক্ষক পদের মধ্যে আছেন মাত্র তিনজন। দুই বছর ধরে এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকই নেই।
বিদ্যালয়ে কর্মরত তিনজন সহকারী শিক্ষকের মধ্যে জাহানারা বেগম পালন করে আসছেন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব।
একই অবস্থা বরিশাল সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের আইচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এ বিদ্যালয়ে ৯টি শিক্ষক পদের মধ্যে আছেন মাত্র চারজন। প্রধান শিক্ষকসহ বাকি পদগুলো শূন্য দীর্ঘদিন ধরে। এখানেও হেমায়েত উদ্দিন নামে একজন সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।
এই দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ই নয়, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগীয় উপপরিচালকের কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বরিশাল বিভাগের এক হাজার ৬৭৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছয় হাজার ১৬৮। ২৫ হাজার ৮০০ সহকারী শিক্ষক পদের মধ্যে দুই হাজার ৯৪১টি পদ শূন্য রয়েছে।
বাবুগঞ্জের কেদারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক না থাকায় আমাকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দাপ্তরিক কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় পাঠদান করা যায়নি। এ কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম অনেকাংশেই ব্যাহত হচ্ছে।’
বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাসুদ আহম্মেদ খান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করার পর কিছু শূন্যপদে সরকার প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছিল। কিন্তু এখন আবার নিয়োগ স্থগিত রয়েছে। ফলে প্রধান শিক্ষক ছাড়া যেমন বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, ঠিক তেমনি সহকারী শিক্ষক ছাড়া পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।’
মাসুদ আহম্মেদ বলেন, অনতিবিলম্বে শূন্যপদগুলোতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগ করা না হলে তাঁরা আবার আন্দোলনে নামবেন।
এ ব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাহবুব-ই এলাহী বলেন, ‘একাধিকবার আমরা শূন্যপদগুলোতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে লিখিত পাঠিয়েছি। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। কবে নাগাদ নতুন নিয়োগ হবে, তা আমাদের জানা নেই।’