প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনের বাস্তবায়ন না হওয়া, বাজেটে বরাদ্দ কম থাকা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধীদের সমস্যা নিয়ে ধারণা না থাকায় দেশের এক কোটি ৬০ লাখ প্রতিবন্ধী নানাভাবে অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে।
বুধবার রাজধানীর বিআইএসএস মিলনায়তনে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশ ও সিএসআইডি আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং প্রতিবন্ধী : বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
আলোচনা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ড. রেজাউল হক। তিনি বলেন, বিশ্বের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ প্রতিবন্ধী। তার মধ্যে ৮০ ভাগ বাস করে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে। বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ মানুষ প্রতিবন্ধী। এই প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ ২০০৮ সালে জাতিসংঘের প্রতিবন্ধী সুরক্ষা সনদে স্বাক্ষর করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন হয়। তারপরও আইন বাস্তবায়ন না হওয়া, বাজেটে অপ্রতুল বরাদ্দের কারণে প্রতিবন্ধীদের খারাপ অবস্থা।
এ প্রসঙ্গে ডিজঅ্যাবিলিটি কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী সদস্য মনসুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর ও দেশে আইন থাকা সত্ত্বেও প্রতিবন্ধীরা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু আইন বাস্তবায়নের অভাবে দেশের প্রায় ১৫ ভাগ প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন ও চলাফেরায় নানা সমস্যায় পড়তে হয়।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, আমাদের বাজেট আসলে প্রতিবন্ধী বান্ধব না। চলমান অর্থবছরে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে সামাজিক উন্নয়ন খাতে। এর মধ্যে ৩৬০ কোটি টাকার রাখা হয়েছে প্রতিবন্ধীদের জন্য, যা পরিকল্পনা মাফিক না।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সচেতনতার অভাব আছে। গণমাধ্যমগুলো প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সংবাদ গুরুত্ব দিয়ে প্রচার বা প্রকাশ করে না। এ ছাড়া প্রতিবন্ধীদের নিয়ে পরিকল্পনা করতে গিয়ে আমরা সঠিক তথ্য নিয়ে সমস্যায় পড়ছি। দেখা যায়, আমাদের হাতে ২০১০ সালের ডাটা বা তথ্য আছে। সেটাও সঠিক না। তাই এই জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের পরিকল্পনা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আবার জাতিসংঘের মত বড় ফোরামগুলোতে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আলোচনা কম হয়।
একশনএইড বালাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, প্রতিবন্ধীর উন্নয়নে সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে। আইনের বাস্তবায়ন করতে হবে। বাড়াতে হবে বাজেটের বরাদ্দ। প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান করতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।