একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর করণীয় ঠিক করতে বৈঠকে বসছে বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটি ও ঐক্যফ্রন্ট।
সোমবার বিকাল ৪টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি বৈঠক হবে। এক ঘণ্টা পর একই জায়গায় হবে বিএনপির নেতৃত্বের ২০ দলীয় জোটের বৈঠক।
তারপর সন্ধ্যা ৬টায় মতিঝিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেনের চেম্বারে জোটের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক বসবে বলে ফ্রন্টের মিডিয়া উইংয়ের সমন্বয়ক লতিফুল বারী হামিম জানান।
রোববার একাদশ সংসদ নির্বাচনের যে ভোট হয়েছে তাতে ২৫৯টি আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীরা। আর তাদের নেতৃত্বাধীন মহাজোট পেয়েছে ২৮৮ আসন।
এই নিরঙ্কুশ জয়ে টানা তৃতীয়বারের মত সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এর বিপরীতে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভরাডুবি হয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপি ৫টি এবং গণফোরাম দুটি আসনে জয় পেয়েছে।
ভোট চলাকালে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার পাশাপাশি কারচুপির অভিযোগ করছিল বিএনপি। দুপুরের পর থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বিএনপি ও তাদের জোটের কয়েকজন প্রার্থী ভোট বর্জনেরও ঘোষণা দিয়েছিলেন।
রাতে ফলাফল ঘোষণার মধ্যেই সংবাদ সম্মেলনে আসেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতারা। কামাল হোসেন বলেন, “অবিলম্বে এই প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করা হোক। এই নির্বাচনের কথিত ফলাফল আমরা প্রত্যাখ্যান করছি এবং সেই সঙ্গে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচন দাবি করছি।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এই নির্বাচনে ‘একটি ভয়ংকর প্রহসন’ আখ্যায়িত করে বলেছেন এই নজির জাতিকে ভবিষ্যতে ‘সমস্যায় ফেলবে’।
১৯৯১-৯৬ ও ২০০১-০৬ মেয়াদে সরকার পরিচালনা করা বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২০১৪ সালের ভোট বর্জন করার পর সংসদ থেকে ছিটকে পড়ে। জোট গড়ে এবার নির্বাচনে অংশ নিলেও মাত্র সাতটি আসন পাওয়ায় সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনেও তারা ফিরতে পারছে না।
অবশ্য বিএনপির যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের শপথ না নেওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে দলটির নেতাদের কথায়। সেক্ষেত্রে ওই আসনগুলোতে উপনির্বাচনের সম্ভাবনা থেকেই যায়।
রোববার ভোটের পর সোমবার সকাল থেকে ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় একেবারেই ফাঁকা।
সকাল ১০টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ দপ্তরের কয়েকজন কমর্কতা-কর্মচারী কেবল ভেতরে আছেন। নেতা-কর্মীদের ভিড় নেই, ৪/৫ জন কর্মী-সমর্থক নিয়ে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব কথা বলছেন।
বরং কার্যালয়ের বাইরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সংখ্যাও এর চেয়ে বেশি ছিল সে সময়।
সূত্র, বিডিনিউজ২৪.কম