নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সিলেটের সেই খাদিজা বেগম শনিবার দুপুরে হাসপাতালের কামরা থেকে বেরিয়ে এসে বসলেন সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে। কথা বললেন। দোয়া চাইলেন। এসময় তার মাথা ছিল ফুলেল ছাপার স্কার্ফে ঢাকা। তবে মুখমণ্ডল ছিল খোলা।
তার চেহারার যতটুকু উন্মুক্ত ছিল, সেখানে কোন ক্ষতচিহ্ন দেখা যাচ্ছিল না। তাকে বেশ সুস্থ লাগছিল।
অবশ্য মৃত্যুর দুয়ার থেকে এই পর্যন্ত আসতে খাদিজার লেগেছে ৫৪টি দিন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে খাদিজা বলেন, ” ডাক্তারদের ধন্যবাদ জানাই। মিডিয়াকে ধন্যবাদ জানাই। আমার জন্য আপনারা আরো দোয়া করবেন, যাতে তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পারি”।
দিন তারিখ চূড়ান্ত না হলেও স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে তাকে অচিরেই ছেড়ে দেয়া হবে এবং পাঠানো হবে সাভারের সিআরপিতে যেখানে আসছে দিনগুলোতে চলবে তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া।
অবশ্য খাদিজার বাবা মাশুক মিয়া অগ্রদৃষ্টিকে বলছেন, তাকে আগামী সোমবারই ছেড়ে দেয়া হবে বলে ডাক্তারেরা তাকে বলেছেন।
তারপর সিআরপিতে তাকে প্রাথমিকভাবে ১৫ দিনের জন্য চিকিৎসাধীন থাকতে হবে পুনর্বাসনের জন্য।
খাদিজার শরীরের আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে খাদিজার বাবা বলেন, “সে ধরে ধরে হাঁটতে পারে। খেতে পারে। কথা খুব কম বলে। তবে আগের মত অসংলগ্ন কথা বলে না। নিজে অবশ্য গোসল করতে পারে না এখনো। তার মা তাকে গোসল করিয়ে দেয়”।
অথচ এই খাদিজার বাঁচবারই কথা ছিল না।
তেসরা অগাস্ট সিলেটে আক্রমণের শিকার হবার পর চৌঠা অগাস্টই তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে এনে ভর্তি করা
হয়েছিল।
ওইদিন থেকে পরবর্তী অনেকদিন পর্যন্ত খাদিজা ছিলেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ।
চিকিৎসকেরা কখনোই জোরালোভাবে তার বেঁচে যাবার সম্ভাবনার কথা জানান নি।
এমনকি স্কয়ার হাসপাতালের পরিচালক ড. মির্জা নাজিমুদ্দিন, যিনি শনিবার খাদিজার সঙ্গেই গণমাধ্যমের সামনে হাজির হন, তিনিও এদিন বলেন, তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল মোটে ৫ ভাগ।
প্রেমে প্রত্যাখ্যান করায় সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম গত ৩রা অক্টোবর তাকে চাপাতি দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে।
তার মাথায় একাধিক আঘাত লাগে এবং অন্তত একটি আঘাত খুলি ভেদ করে মস্তিষ্কে গিয়ে লাগে।