নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ইউরোপের দরজা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও ইতালি ও জার্মানি থেকে ৯৫ বাংলাদেশিকে নিয়ে এল কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট।
সোমবার সন্ধ্যায় উড়োজাহাজটি ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দরে নামার পর যাত্রীদের গ্রহণও করা হয়; অথচ সিদ্ধান্ত ছিল ফেরত পাঠানোর।
এর বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান বলেন, “আমরা প্রথমে তাদের নামার অনুমতি দিতে চাইনি। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুরোধে তাদের নামার অনুমতি দেওয়া হয়।”
নভেল করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে বিপর্যস্ত ইতালি থেকে শয়ে শয়ে বাংলাদেশিদের আসার পর দেশে সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এ মোমেন শনিবার জানান, দেশে সংক্রমণ এড়াতে যুক্তরাজ্য বাদে ইউরোপের দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে।
এরপর রোববার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে বেবিচক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান বলেন, সোমবার দুপুর ১২টা থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ছাড়া ইউরোপের অন্য কোনো দেশ থেকে কোনো যাত্রী বাংলাদেশ গ্রহণ করবে না।
এয়ারলাইন্সগুলো যদি ইউরোপের কোনো দেশের যাত্রী নিয়ে এলে তাদেরকে নিজ খরচে আবার ফেরত নিতে হবে, এই কঠোর সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।
তা শিথিল হল কেন- এই প্রশ্নে মফিদুর বলেন, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কয়েকজন বাংলাদেশি দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছিলেন। তারা (মন্ত্রণালয়) বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করেছে।”
তবে ইউরোপ থেকে আর কোনো ফ্লাইটকে এমন সুযোগ দেওয়া হবে না বলে আশ্বস্ত করেন বেবিচক চেয়ারম্যান।
“এটাই শেষ। আগামীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য কেউ করতে পারবে না। আমরা কোনোভাবেই আর কাউকে বাংলাদেশে নামার অনুমতি দেব না।”
বাংলাদেশে যে আটজনের দেহে নভেল করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে, তারা কেউ ইতালি ফেরত, বাকিরা ওই প্রবাসীদেরই স্বজন।
সংক্রমণ এড়াতে বিদেশ থেকে আসা সবাইকে নিজ নিজ ঘরে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার; যদিও অনেকেই তা মানছে না বলে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও।
সোমবার বিকালে ইতালি থেকে আসা ৬৮ জন এবং জার্মানি থেকে আসা ২৭ জনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে শাহজালাল বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, তাদের প্রথমে আশকোনার হজ ক্যাম্পে পাঠানো হবে।
“হজ ক্যাম্পে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। করোনাভাইরাসের লক্ষণ না থাকলে তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে।”
গত দুই দিনে ইতালিসহ ইউরোপ থেকে আসা কয়েকশ জনকে প্রথমে হজ ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছিল; পরে তাদের বাড়ি ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়।