সুলতান মাহমুদ, নবীগঞ্জ থেকে॥ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের নিকটে গত শুক্রবার রাত ১০ টায় রাস্তায় দাড় করানো ইট বোঝাই ট্রাকের সাথে বেপরোয়া গতীর সিলেটগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাস সংঘর্ষ বাধলে যাত্রীবাহি বাসটি প্রায় দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়। এতে বাসের যাত্রী সেনা সদস্য, শিশু ও গর্ভবর্তী মহিলা সহ ৭ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে আরো অন্তত ৩০জনকে আংকাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার পর মহাসড়কে প্রায় ২ ঘন্টা সময় সকল প্রকার যান যাচলাচল বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ, র্যাব, নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও ফায়ার ব্রীগেডের সদস্যরা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় নিহত ও আহতদের উদ্বার করে। এই হৃদয় বিদারক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতরা হলেন সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মোস্তাক আহমদ পলাশের স্ত্রী কানাইঘাটের দুলাই গ্রামের ৭ মাসের অন্ত:সত্তা মুর্শেদা বেগম (৪০) ও তার ছেলে মেহেদী হাসান (৫), একই গ্রামের নুরুল হকের ছেলে লেবানল প্রবাসী শাহবুদ্দিন (৩০), বরগুনা আমতলী উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে সিলেট জালালাবাদ ক্যান্টমেন্টে কর্মরত সেনা সদস্য আবু সালেহ (৩০), বাগেরহাট এলাকার ডেমা গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে তরিকুল ইসলাম (৩৫), বাসের সুপারভাইজার বরগুনা জেলার দরবেশপুর গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে মহসিন আলী টিপু (৪৫), নোভার্টি ফার্মার প্রতিনিধি রংপুর পীরগঞ্জ গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে আরিফ আজাদ (৩৫)।
সরেজমিনে জানাযায়, গত শুক্রবার রাত ১০টায় দিকে ইট বোঝাই একটি ট্রাক নং (ঢাকা মেট্রো ট ১৬-২৮৫৫) যান্ত্রিক ত্র“টির কারনে মহাসড়কের এক পাশে দাড় করিয়ে মেরামত করা কালিন সময়ে ঢাকা থেকে সিলেটগামী হানিফ পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাস (ঢাকা মেট্রো ট- ১৪-৮৩১৯) ট্রাকের পিছন দিকে ধাক্কা দিলে যাত্রীবাহি বাসটি প্রায় দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়। এতে বাসের অন্তত ৩০ জন যাত্রী আহতসহ ঘটনাস্থলেই ৫ জন মারা যায়। গুরুতর আহত হাসপাতালে নেওয়ার পর আরো ২ সহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭ জনে দাড়ায়। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন, হাইওয়ে পুলিশ, নবীগঞ্জ থানা পুলিশ, র্যাব, ফায়ার ব্রীগ্রেডের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিহত ও আহতদের উদ্বার করা হয়। এ সময় মহাসড়কে প্রায় ২ঘন্টা যানচলাচল বন্ধ থাকে। এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু এমপি, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ আলমগীর চৌধুরী, পৌর মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী, আওয়ামীলীগ নেতা দেওয়ান শাহনেওয়াজ গাজী মিলাদ সংবাদপত্রে এক প্রদত্ত বিবৃতি নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করে করেছেন।
অপর দিকে খবর পাওয়া গেছে, দূর্ঘটনায় সিলেট আওয়ামীলীগ নেতার স্ত্রী ও ছেলেসহ ৭ জন নিহত হওয়ায় সিলেটের কদমতলী বাসটার্মিনালস্থ হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তারা হানিফ পরিবহনের তিনটি বাস ও কাউন্টারে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে জানা গেছে।