
উপমহাদেশের অন্যতম কিংবদন্তি বাউল শিল্পী শাহ আব্দুল করিমের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) এই মহান শিল্পীর স্মরণে ‘শাহ আব্দুল করিম স্মৃতি পরিষদ কুয়েত’-এর উদ্যোগে একটি বিশেষ স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
স্মৃতি পরিষদের সভাপতি মো. সেলিম মিয়া এই অনুষ্ঠানে বলেন, “ভাটি বাংলার প্রাণপুরুষ শাহ আব্দুল করিম তার গান দিয়ে বাংলার মাটি ও মানুষের কথা তুলে ধরেছেন। তার সৃষ্টি মানুষকে হাসিয়েছে, কাঁদিয়েছে এবং জীবনবোধে অনুপ্রাণিত করেছে।” সেলিম মিয়া আরও বলেন, “আজকের এই দিনে তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে চলে যান। কিন্তু তার গান তাকে অমর করে রেখেছে।”
শাহ আব্দুল করিম ১৯১৬ সালে সিলেট এর সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ধল গ্রামে
গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার দীর্ঘ সংগীত জীবনে তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় গান রচনা করেছেন, যা আজও বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। “আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম”, “গাড়ি চলে না”, “কোন মেস্তরি নাও বানাইছে”–এর মতো কালজয়ী গানগুলো তাকে “বাউল সম্রাট” উপাধি এনে দিয়েছে। তার গানগুলো শুধু বিনোদনই নয়, বরং সমাজ সচেতনতা, মানবতাবোধ এবং আধ্যাত্মিকতার গভীর দর্শন বহন করে।
মো. সেলিম মিয়া বলেন, শাহ আব্দুল করিমের মতো গুণী শিল্পীর সৃষ্টিকর্মকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই তারা কুয়েতে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, নতুন প্রজন্মের কাছে এই কিংবদন্তি শিল্পীর গান এবং দর্শন পৌঁছে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত কুয়েতের অন্যান্য প্রবাসী বাংলাদেশীরাও শাহ আব্দুল করিমের প্রতি তাদের গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, প্রবাসে থেকেও শাহ আব্দুল করিমের গান তাদের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত রাখে। শাহ আব্দুল করিমের গান শুধু বাংলার নয়, বরং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সকল বাংলা ভাষাভাষীর কাছে এক অমূল্য সম্পদ।
অনুষ্ঠানের শেষে শাহ আব্দুল করিমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।