বিশেষ প্রতিনিধি-কুয়েত সরকার চলতি বছরে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে ৩৪ হাজারেরও বেশি সংখ্যক প্রবাসীকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। স্থানীয় ইংরেজি দৈনিক আরব টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। এতে আরও জানা গেছে, অভিবাসন ও শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে এই বিপুল সংখ্যক বিদেশিকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এটি কুয়েতের সাম্প্রতিক জনমিতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং ‘কুয়েতাইজেশন’ নীতি কার্যকর করার প্রচেষ্টারই অংশ।
দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় দ্বারা পরিচালিত এই ধারাবাহিক অভিযানগুলিতে প্রধানত সেই সকল প্রবাসীকে লক্ষ্য করা হয়েছে, যারা বসবাসের অনুমতি (রেসিডেন্সি) বা কাজের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। এছাড়াও, শ্রম আইনের গুরুতর লঙ্ঘন, যেমন নিয়োগকর্তার বাইরে অন্য কারও অধীনে কাজ করা (স্পন্সরশিপের শর্ত লঙ্ঘন) এবং জাল কাগজপত্র ব্যবহারের মতো অপরাধেও অনেককে বিতাড়ন করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিতাড়নের কারণগুলির মধ্যে শুধু অবৈধভাবে বসবাসই নয়, মাদক সংক্রান্ত অপরাধ, চুরি, মারামারি এবং এমনকি কিছু ক্ষেত্রে বিপজ্জনক ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনও রয়েছে। অনেক প্রবাসীকে ছোটখাটো অপরাধের জন্য আদালতের বিচার ছাড়াই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কুয়েত সরকার বহু বছর ধরে চলে আসা ‘কুয়েতাইজেশন’ বা সরকারি-বেসরকারি খাতে নাগরিকদের জন্য চাকরির সুযোগ নিশ্চিত করার যে নীতি গ্রহণ করেছে, এই অভিযান তারই কঠোর বাস্তবায়ন। এর উদ্দেশ্য হলো দেশে বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যা কমানো এবং স্থানীয় নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা।
এই বিপুল সংখ্যক বিতাড়ন কর্মসূচির কারণে কুয়েতে কর্মরত প্রবাসী, বিশেষত যারা বৈধতার সংকটের ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। সরকার পক্ষ থেকে বারবার সতর্ক করে বলা হয়েছে যে, দেশের আইন অমান্যকারী কোনো প্রবাসীর বিরুদ্ধেই নমনীয়তা দেখানো হবে না এবং বিতাড়িতদের আজীবনের জন্য কুয়েতে পুনরায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।











