Menu |||

কুয়েতে এক্সিট অনুমতি: আইন মান্যকারী প্রবাসীদের জন্য পুরস্কার নাকি সমস্যা?

কুয়েতের বেসরকারি খাতে কর্মরত প্রবাসীদের জন্য দেশ ছাড়ার আগে এখন এক্সিট পারমিট নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা নিয়ে প্রবাসী কর্মী, ব্যবসায়ী এবং মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ছুটির জন্য হোক বা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভ্রমণের জন্যই হোক, এই নিয়ম এখন সবার জন্য প্রযোজ্য।
কুয়েতের নিয়ম অনুযায়ী, একজন প্রবাসীকে দেশ ছাড়ার আগে তার সমস্ত ট্রাফিক জরিমানা, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করতে হয়। তবে ১ জুলাই, ২০২৫ থেকে একটি নতুন নিয়ম চালু হয়েছে: বেসরকারি খাতে কর্মরত প্রবাসীদের ভ্রমণের জন্য কোম্পানি থেকে এক্সিট পারমিট নিতে হবে।

এই নিয়মের সাথে সহমত পোষণ করে অনেকে বলছেন, এর ফলে পলাতক শ্রমিক এবং আর্থিক অপরাধীদের দেশ ছাড়ার পথ বন্ধ হবে।

অন্যদিকে, এই নিয়ম নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে যারা মনে করছেন,”তারা বলছেন”, এটি একটি অনর্থক নিয়ম যা ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে খর্ব করে, পর্যটনকে নিরুৎসাহিত করে এবং স্থানীয় অর্থনীতির ক্ষতি করে।

স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী পর্যবেক্ষক এই প্রতিবেদককে বলেন, “বিশ্বব্যাপী, আদালতের নির্দেশ না থাকলে কোনো ব্যক্তির চলাফেরার অধিকার সীমাবদ্ধ করা যায় না। সাধারণ কর্মী থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা নজিরবিহীন।”

অনেক প্রবাসী, যারা আগে সাপ্তাহিক ছুটিতে প্রতিবেশী উপসাগরীয় দেশগুলোতে বেড়াতে যেতেন, তারা এখন নিজেদের বন্দী মনে করছেন।
যেমন ধরুন, বেসরকারি ফার্মে কর্মরত এডগার কলিন্স, যিনি দীর্ঘদিন ধরে কুয়েতে আছেন।
যিনি প্রতি বৃহস্পতিবার দুবাই বা বাহরাইনে যেতেন এবং রবিবার সকালে ফিরে সরাসরি কাজে যোগ দিতেন। তিনি বলেন, “আমি আমার সাপ্তাহিক ছুটি কীভাবে কাটাবো, তা কোম্পানিকে কেন জানাতে হবে? এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।” “এক্সিট পারমিট চালু হওয়ার পর আমি পুরোপুরি ভ্রমণ বন্ধ করে দিয়েছি।”

এডগারের মতো হাজার হাজার প্রবাসী তাদের সাপ্তাহিক ভ্রমণ বন্ধ করে দিয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বিমান সংস্থাগুলোর উপরও; ইতিমধ্যে কুয়েত বিমানবন্দর যাত্রী সংখ্যা হ্রাসের কারণে অন্যান্য উপসাগরীয় দেশের তুলনায় তলানিতে পৌঁছেছে।

তবে এই নিয়মের সমালোচনা সবাই করছেন না। একটি মাঝারি আকারের বেসরকারি কোম্পানির ম্যানেজার আব্দুল রহমান মনে করেন, এই নীতি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করবে।
তিনি বলেন, “আমরা বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ দিয়েছিলাম, যারা সঙ্গে সঙ্গেই নতুন চাকরির খোঁজ শুরু করে। ভালো বেতন পেলে তারা আমাদের টাকা নিয়ে পালিয়ে যেত। একজন হিসাবরক্ষক তো এক রাতে কোম্পানির টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছিল।”
রহমান আরও বলেন, এখন তার কোম্পানি আর্থিক দায়িত্বে থাকা কর্মীদের পাসপোর্ট নিজেদের কাছে রাখে এবং ভ্রমণের আগে কোম্পানি-অনুমোদিত এক্সিট পারমিট বাধ্যতামূলক করেছে। “একজন কর্মচারী দেশ ছাড়ার তিন দিন আগে আমরা তার পাসপোর্ট ফেরত দিই, হিসাব নিরীক্ষা করি এবং তবেই ভ্রমণের অনুমতি দিই। আমাদের জন্য, এই ব্যবস্থা প্রতারণার পথ বন্ধ করেছে।”

এদিকে প্রবাসী কর্মীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরছেন। বেসরকারি খাতের কর্মচারী আরশাদ খান বলেন, এক্সিট পারমিট ব্যবস্থাটি নিয়োগকর্তাদের জন্য অপব্যবহারের একটি হাতিয়ার।
তিনি বলেন, “আমার ৩০ দিনেরও বেশি ছুটি জমা হয়েছে, কিন্তু যখনই ছুটির আবেদন করি, ম্যানেজমেন্ট তা প্রত্যাখ্যান করে।” তিনি আরও বলেন, “আমি পাবলিক অথরিটি ফর ম্যানপাওয়ারে অভিযোগ করার কথা ভেবেছিলাম, কিন্তু কথা বললে চাকরি হারানোর ভয়ে পিছিয়ে আসি।”
এই ভয়ে অনেক প্রবাসী নীরবে এই সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছেন – হয় তাদের চলাফেরার উপর বিধিনিষেধ মেনে নিতে হচ্ছে, নয়তো বেকারত্বের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে।

অনেকের মতে, এই সিস্টেমটি একটি নতুন অবৈধ বাজার তৈরি করেছে। “ভিসা ব্যবসায়ী”দের কাছ থেকে অবৈধভাবে ভিসা কিনে কাজ করা অনেক প্রবাসী তাদের তথাকথিত স্পন্সরকে এক্সিট পারমিটের জন্য প্রায় ৫০ দিনার দিতে বাধ্য হচ্ছে। এই টাকা না দিলে তারা কুয়েতে আটকা পড়ার ঝুঁকিতে থাকে।

কুয়েতের এক্সিট পারমিট পালানো ঠেকাতে চালু করা হলেও, সিস্টেমের দুর্বলতার কারণে এটি কার্যকর নয়।
উদাহরণস্বরূপ, ভ্রমণের সাত দিন আগে পারমিটের জন্য আবেদন করা যায়। একজন কর্মী যদি পালানোর পরিকল্পনা করে, সে প্রথম দিনেই পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারে, তৃতীয় দিনে পালিয়ে যেতে পারে, এবং সাত দিনের মধ্যে তার আবেদন “বৈধভাবে অনুমোদিত” দেখাবে।

আরেকটি দুর্বলতা হলো অভিযোগ করার প্রক্রিয়া। যদি কোনো কোম্পানি পারমিট বাতিল করে, কর্মীকে বলা হয় যে তারা পাবলিক অথরিটি ফর ম্যানপাওয়ারে আবেদন করতে পারে। কিন্তু কতজন কর্মী চাকরি হারানোর ভয়ে এই ঝুঁকি নেবে?

নতুন এই সার্কুলার পাবলিক অথরিটির উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে।
প্রশ্ন হলো, এতো দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও কি এই ব্যবস্থা সত্যিই অপরাধীদের পালিয়ে যাওয়া আটকাতে পারবে?

আপাতত, কুয়েতের প্রবাসী এবং নিয়োগকর্তারা একটি নতুন সিস্টেমের সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন, যা শৃঙ্খলা আনার জন্য তৈরি করা হলেও উল্টো ভয়, হতাশা এবং অপ্রত্যাশিত অর্থনৈতিক পরিণাম নিয়ে এসেছে।
যা একটি সুরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল, তা দ্রুত একটি সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। একটি আমলাতান্ত্রিক জাল যা নির্দোষদের আটকে রাখছে, আর অপরাধীদের পিছলে যেতে দিচ্ছে।


সূত্র, আরব টাইমস


আ হ জুবেদ (সম্পাদক অগ্রদৃষ্টি)

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

কুয়েতে সপ্তাহান্তে গরম দিন, রাতে আরামদায়ক ঠান্ডা আবহাওয়া

বসুন্ধরা কিংস ম্যানেজারের বিরুদ্ধে কুয়েতে সাংবাদিকদের অসহযোগিতার অভিযোগ

কুয়েতে ক্রীড়া সংগঠক সুহেল রানার মায়ের ইন্তেকাল: প্রবাসীদের মাঝে শোকের ছায়া!

কুয়েত ভিসা বদল: প্রজেক্ট থেকে প্রাইভেট খাতে স্থানান্তরের শর্তাবলী

সাংবাদিক মঈন উদ্দিন সরকার সুমনের জন্মদিন পালন করলেন সহকর্মীরা

কুয়েতের ট্র্যাফিক সমস্যার সমাধান: 'প্যারিসের পাতাল রেল দেখুন' মন্ত্রীদের প্রতি কলাম লেখকের আহ্বান ​

তীরে এসে তরী ডুবল বসুন্ধরা কিংসের, কুয়েতে আল শেবের কাছে হার ২-৩

এএফসি চ্যালেঞ্জ লীগের মিশনে কুয়েতে বসুন্ধরা কিংস, প্রবাসীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ

কুয়েতে আনন্দ উৎসব ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা- অগ্রদৃষ্টি

কৃষি জমিতে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের প্রতিবাদ,হাওর রক্ষায় কৃষক আন্দোলন, দুর্ভিক্ষের শঙ্কা

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» কুয়েতে সপ্তাহান্তে গরম দিন, রাতে আরামদায়ক ঠান্ডা আবহাওয়া

» বসুন্ধরা কিংস ম্যানেজারের বিরুদ্ধে কুয়েতে সাংবাদিকদের অসহযোগিতার অভিযোগ

» কুয়েতে ক্রীড়া সংগঠক সুহেল রানার মায়ের ইন্তেকাল: প্রবাসীদের মাঝে শোকের ছায়া!

» কুয়েত ভিসা বদল: প্রজেক্ট থেকে প্রাইভেট খাতে স্থানান্তরের শর্তাবলী

» সাংবাদিক মঈন উদ্দিন সরকার সুমনের জন্মদিন পালন করলেন সহকর্মীরা

» কুয়েতের ট্র্যাফিক সমস্যার সমাধান: ‘প্যারিসের পাতাল রেল দেখুন’ মন্ত্রীদের প্রতি কলাম লেখকের আহ্বান ​

» তীরে এসে তরী ডুবল বসুন্ধরা কিংসের, কুয়েতে আল শেবের কাছে হার ২-৩

» এএফসি চ্যালেঞ্জ লীগের মিশনে কুয়েতে বসুন্ধরা কিংস, প্রবাসীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ

» কুয়েতে আনন্দ উৎসব ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা- অগ্রদৃষ্টি

» কৃষি জমিতে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের প্রতিবাদ,হাওর রক্ষায় কৃষক আন্দোলন, দুর্ভিক্ষের শঙ্কা

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

কুয়েতে এক্সিট অনুমতি: আইন মান্যকারী প্রবাসীদের জন্য পুরস্কার নাকি সমস্যা?

কুয়েতের বেসরকারি খাতে কর্মরত প্রবাসীদের জন্য দেশ ছাড়ার আগে এখন এক্সিট পারমিট নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা নিয়ে প্রবাসী কর্মী, ব্যবসায়ী এবং মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ছুটির জন্য হোক বা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভ্রমণের জন্যই হোক, এই নিয়ম এখন সবার জন্য প্রযোজ্য।
কুয়েতের নিয়ম অনুযায়ী, একজন প্রবাসীকে দেশ ছাড়ার আগে তার সমস্ত ট্রাফিক জরিমানা, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করতে হয়। তবে ১ জুলাই, ২০২৫ থেকে একটি নতুন নিয়ম চালু হয়েছে: বেসরকারি খাতে কর্মরত প্রবাসীদের ভ্রমণের জন্য কোম্পানি থেকে এক্সিট পারমিট নিতে হবে।

এই নিয়মের সাথে সহমত পোষণ করে অনেকে বলছেন, এর ফলে পলাতক শ্রমিক এবং আর্থিক অপরাধীদের দেশ ছাড়ার পথ বন্ধ হবে।

অন্যদিকে, এই নিয়ম নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে যারা মনে করছেন,”তারা বলছেন”, এটি একটি অনর্থক নিয়ম যা ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে খর্ব করে, পর্যটনকে নিরুৎসাহিত করে এবং স্থানীয় অর্থনীতির ক্ষতি করে।

স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী পর্যবেক্ষক এই প্রতিবেদককে বলেন, “বিশ্বব্যাপী, আদালতের নির্দেশ না থাকলে কোনো ব্যক্তির চলাফেরার অধিকার সীমাবদ্ধ করা যায় না। সাধারণ কর্মী থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা নজিরবিহীন।”

অনেক প্রবাসী, যারা আগে সাপ্তাহিক ছুটিতে প্রতিবেশী উপসাগরীয় দেশগুলোতে বেড়াতে যেতেন, তারা এখন নিজেদের বন্দী মনে করছেন।
যেমন ধরুন, বেসরকারি ফার্মে কর্মরত এডগার কলিন্স, যিনি দীর্ঘদিন ধরে কুয়েতে আছেন।
যিনি প্রতি বৃহস্পতিবার দুবাই বা বাহরাইনে যেতেন এবং রবিবার সকালে ফিরে সরাসরি কাজে যোগ দিতেন। তিনি বলেন, “আমি আমার সাপ্তাহিক ছুটি কীভাবে কাটাবো, তা কোম্পানিকে কেন জানাতে হবে? এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।” “এক্সিট পারমিট চালু হওয়ার পর আমি পুরোপুরি ভ্রমণ বন্ধ করে দিয়েছি।”

এডগারের মতো হাজার হাজার প্রবাসী তাদের সাপ্তাহিক ভ্রমণ বন্ধ করে দিয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বিমান সংস্থাগুলোর উপরও; ইতিমধ্যে কুয়েত বিমানবন্দর যাত্রী সংখ্যা হ্রাসের কারণে অন্যান্য উপসাগরীয় দেশের তুলনায় তলানিতে পৌঁছেছে।

তবে এই নিয়মের সমালোচনা সবাই করছেন না। একটি মাঝারি আকারের বেসরকারি কোম্পানির ম্যানেজার আব্দুল রহমান মনে করেন, এই নীতি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করবে।
তিনি বলেন, “আমরা বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ দিয়েছিলাম, যারা সঙ্গে সঙ্গেই নতুন চাকরির খোঁজ শুরু করে। ভালো বেতন পেলে তারা আমাদের টাকা নিয়ে পালিয়ে যেত। একজন হিসাবরক্ষক তো এক রাতে কোম্পানির টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছিল।”
রহমান আরও বলেন, এখন তার কোম্পানি আর্থিক দায়িত্বে থাকা কর্মীদের পাসপোর্ট নিজেদের কাছে রাখে এবং ভ্রমণের আগে কোম্পানি-অনুমোদিত এক্সিট পারমিট বাধ্যতামূলক করেছে। “একজন কর্মচারী দেশ ছাড়ার তিন দিন আগে আমরা তার পাসপোর্ট ফেরত দিই, হিসাব নিরীক্ষা করি এবং তবেই ভ্রমণের অনুমতি দিই। আমাদের জন্য, এই ব্যবস্থা প্রতারণার পথ বন্ধ করেছে।”

এদিকে প্রবাসী কর্মীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরছেন। বেসরকারি খাতের কর্মচারী আরশাদ খান বলেন, এক্সিট পারমিট ব্যবস্থাটি নিয়োগকর্তাদের জন্য অপব্যবহারের একটি হাতিয়ার।
তিনি বলেন, “আমার ৩০ দিনেরও বেশি ছুটি জমা হয়েছে, কিন্তু যখনই ছুটির আবেদন করি, ম্যানেজমেন্ট তা প্রত্যাখ্যান করে।” তিনি আরও বলেন, “আমি পাবলিক অথরিটি ফর ম্যানপাওয়ারে অভিযোগ করার কথা ভেবেছিলাম, কিন্তু কথা বললে চাকরি হারানোর ভয়ে পিছিয়ে আসি।”
এই ভয়ে অনেক প্রবাসী নীরবে এই সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছেন – হয় তাদের চলাফেরার উপর বিধিনিষেধ মেনে নিতে হচ্ছে, নয়তো বেকারত্বের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে।

অনেকের মতে, এই সিস্টেমটি একটি নতুন অবৈধ বাজার তৈরি করেছে। “ভিসা ব্যবসায়ী”দের কাছ থেকে অবৈধভাবে ভিসা কিনে কাজ করা অনেক প্রবাসী তাদের তথাকথিত স্পন্সরকে এক্সিট পারমিটের জন্য প্রায় ৫০ দিনার দিতে বাধ্য হচ্ছে। এই টাকা না দিলে তারা কুয়েতে আটকা পড়ার ঝুঁকিতে থাকে।

কুয়েতের এক্সিট পারমিট পালানো ঠেকাতে চালু করা হলেও, সিস্টেমের দুর্বলতার কারণে এটি কার্যকর নয়।
উদাহরণস্বরূপ, ভ্রমণের সাত দিন আগে পারমিটের জন্য আবেদন করা যায়। একজন কর্মী যদি পালানোর পরিকল্পনা করে, সে প্রথম দিনেই পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারে, তৃতীয় দিনে পালিয়ে যেতে পারে, এবং সাত দিনের মধ্যে তার আবেদন “বৈধভাবে অনুমোদিত” দেখাবে।

আরেকটি দুর্বলতা হলো অভিযোগ করার প্রক্রিয়া। যদি কোনো কোম্পানি পারমিট বাতিল করে, কর্মীকে বলা হয় যে তারা পাবলিক অথরিটি ফর ম্যানপাওয়ারে আবেদন করতে পারে। কিন্তু কতজন কর্মী চাকরি হারানোর ভয়ে এই ঝুঁকি নেবে?

নতুন এই সার্কুলার পাবলিক অথরিটির উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে।
প্রশ্ন হলো, এতো দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও কি এই ব্যবস্থা সত্যিই অপরাধীদের পালিয়ে যাওয়া আটকাতে পারবে?

আপাতত, কুয়েতের প্রবাসী এবং নিয়োগকর্তারা একটি নতুন সিস্টেমের সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন, যা শৃঙ্খলা আনার জন্য তৈরি করা হলেও উল্টো ভয়, হতাশা এবং অপ্রত্যাশিত অর্থনৈতিক পরিণাম নিয়ে এসেছে।
যা একটি সুরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল, তা দ্রুত একটি সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। একটি আমলাতান্ত্রিক জাল যা নির্দোষদের আটকে রাখছে, আর অপরাধীদের পিছলে যেতে দিচ্ছে।


সূত্র, আরব টাইমস


আ হ জুবেদ (সম্পাদক অগ্রদৃষ্টি)

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

কুয়েতে সপ্তাহান্তে গরম দিন, রাতে আরামদায়ক ঠান্ডা আবহাওয়া

বসুন্ধরা কিংস ম্যানেজারের বিরুদ্ধে কুয়েতে সাংবাদিকদের অসহযোগিতার অভিযোগ

কুয়েতে ক্রীড়া সংগঠক সুহেল রানার মায়ের ইন্তেকাল: প্রবাসীদের মাঝে শোকের ছায়া!

কুয়েত ভিসা বদল: প্রজেক্ট থেকে প্রাইভেট খাতে স্থানান্তরের শর্তাবলী

সাংবাদিক মঈন উদ্দিন সরকার সুমনের জন্মদিন পালন করলেন সহকর্মীরা

কুয়েতের ট্র্যাফিক সমস্যার সমাধান: 'প্যারিসের পাতাল রেল দেখুন' মন্ত্রীদের প্রতি কলাম লেখকের আহ্বান ​

তীরে এসে তরী ডুবল বসুন্ধরা কিংসের, কুয়েতে আল শেবের কাছে হার ২-৩

এএফসি চ্যালেঞ্জ লীগের মিশনে কুয়েতে বসুন্ধরা কিংস, প্রবাসীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ

কুয়েতে আনন্দ উৎসব ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা- অগ্রদৃষ্টি

কৃষি জমিতে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের প্রতিবাদ,হাওর রক্ষায় কৃষক আন্দোলন, দুর্ভিক্ষের শঙ্কা


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Fri, 31 Oct.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।