শনিবার ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ আয়োজিত ‘চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ র্যালি’ শুরুর আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যের সময় এ দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “গতকাল একটি পত্রিকা আমার বক্তব্য নিয়ে নিউজ করেছে, এতে অনেকেই মনে কষ্ট পেয়ে থাকতে পারেন। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমি ওভাবে বলতে চাইনি। আমার বক্তব্যে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে তার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।”
চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়ার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিটি করপোরেশনগুলোকে দায়ী করার পর ‘চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব ও ডিএনসিসির কার্যক্রম’ নিয়ে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসে দায় অস্বীকার করে মশারি টানানো বিষয়ক ওই মন্তব্য করেছিলেন ঢাকা উত্তরের মেয়র।
ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত দুজন কীট-তত্ত্ববিদদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে চিকুনগুনিয়ার জন্য ঘরের বাইরের চেয়ে ভেতরের মশাকে বড় কারণ দাবি করে সে পর্যন্ত পৌঁছানো সিটি করপোরেশনের পক্ষে সম্ভব না মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
ওই সময় এক সময়ের এই টিভি উপস্থাপক বলেন, “আপনার ঘরের ভেতরে গিয়ে আমি মশারি টানাতে পারব না। আপনার চৌবাচ্চায় আমি ওষুধ লাগাতে পারব না। আপনার ঘরের ভেতর সামান্য স্বচ্ছ পানিতে যে মশা জন্মাচ্ছে, সেটা আমি মারতে পারব না।”
করপোরেশনের যেখানে মশা মারার কথা তার চেয়ে বেশি মারা হচ্ছে বলে সেদিন দাবি করলেও শনিবার মেয়রের কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালির শুরুর আগে দেওয়া বক্তব্যে মশা নিধন কাজে কর্মীদের কর্তব্যে অবহেলার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানান আনিসুল হক।
মেয়র বলেন, “গত মাসেই কর্তব্যে অবহেলার জন্য ১০৯ জন কর্মীর চাকরি গেছে। আমরা আরও কিছু অভিযোগ পেয়েছি, দায়িত্বে অবহেলা করার জন্য যত শিগগির সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ঠিকমত ওষুধ দিচ্ছে কিনা তা নজরদারির ভেতর রাখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রতিদিনের নির্ধারিত ওষুধ দেওয়ার পরই কর্মীরা বেতন পাবেন।”
চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ডিএনসিসি থেকে কয়েকটি কর্মসূচিওর কথাও তুলে ধরেন ঢাকা উত্তরের মেয়র।
তিনি বলেন, “সমস্ত শক্তি দিয়ে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ করা হবে, সাধারণ মানুষদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য যা করা প্রয়োজন করব। বিভিন্ন এলাকায় হ্যান্ডবিল ও মাইকিং করার পাশাপাশি কমিশনারদের দায়িত্বে রাস্তাঘাটের লিস্ট করা হয়েছে।
“প্রতিটি এলাকার মসজিদের ইমাম ও এলাকার নেতাদের নিয়ে টিম করে কাজ করা হবে। একেক দিন একেক এলাকায় বড় করে মশক নিধন কর্মসূচি পরিচালিত হবে, একে (চিকুনগুনিয়া) আর বাড়তে দেব না।”
চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ র্যালিটি গুলশান ২ নম্বরের সেন্টার পয়েন্টে অবস্থিত উত্তর সিটি করপোরেশন কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে ডিসিসি মার্কেটে গিয়ে শেষ হয়।
এতে গুলশান ইয়ুথ ক্রিকেট একাডেমি, বনানী বিদ্যানিকেতন ও গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও উত্তর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাসহ নগরবাসী অংশ নেয়।
র্যালিতে অন্যদের মধ্যে ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।