Menu |||

আসরের শুরুটা দুর্দান্ত, শেষটায় ছিল ব্যর্থতা

আশা ছিল শেষ ভালোর। সেমি-ফাইনাল স্বপ্ন গুঁড়িয়ে যাওয়ার পর নতুন আশায়ও গুড়ে বালি। শেষ ভালো নয়, বরং শেষের জন্য জমা ছিল যেন সবচেয়ে খারাপটুকুই। শাহিন শাহ আফ্রিদির আগুনে বোলিংয়ে পুড়ল ব্যাটিং। এবারের আসরে নিজেদের সবচেয়ে কম রানের স্কোর গড়ে পাকিস্তানের কাছে বড় হারের গ্লানিতে শেষ হলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ।

বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৯৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। এই হারে মিলিয়ে গেছে পঞ্চম স্থানের হাতছানিও।

অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের ফলের ওপর নির্ভর করবে সাত নাকি আটে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করবে বাংলাদেশ। তবে অবস্থান যেটিই হোক, বিশ্বকাপ অভিযানকে এবার ব্যর্থই বলতে হবে।

লর্ডসে শুক্রবার সেঞ্চুরি করেছেন পাকিস্তানের ওপেনার ইমাম-উল-হক, ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি বাবর আজম। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তান ৫০ ওভারে তোলে ৯ উইকেটে ৩১৫ রান। বাংলাদেশ ৩৫ বল আগেই গুটিয়ে গেছে ২২১ রানে।

৩৫ রানে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ধসিয়ে দিয়েছেন ১৯ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার শাহিন আফ্রিদি। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড এটি।

লর্ডসের উইকেট এ দিন ব্যাটিংয়ের জন্য খুব সহজ ছিল না। তবে টিকে থাকলে, নিবেদন দেখালে বড় রান সম্ভব, এটি যেমন ইমাম ও বাবর দেখিয়েছেন, পরে দেখিয়ে দিয়েছেন সাকিবও। অভাবনীয় পারফরম্যান্সের বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচটিতেও দলের আশা জিইয়ে ছিল তার ব্যাটে। বিশ্বকাপ ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ছুঁয়েছেন এক আসরে ৬০০ রান। স্বপ্নযাত্রা থেমেছে ৬৪ রানে। বাংলাদেশ পারেনি কাছে যেতেও।

আলাদা করে বলা যায় মুস্তাফিজুর রহমানের পারফরম্যান্সও। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে নিয়েছেন ৫ উইকেট। গড়েছেন সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের হয়ে ১০০ ওয়ানডে উইকেটের রেকর্ড। তবে এই ম্যাচে ৫ উইকেটের জন্য ৭৫ রান খরচকে ম্যাচ শেষে মনে হচ্ছে বেশ খরুচে।

টুর্নামেন্ট জুড়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে হতাশার অধ্যায় ছিল যেটি, সেই ফিল্ডিং ভুগিয়েছে শেষ ম্যাচেও। ৫৭ রানে বাবর আজমের ক্যাচ ছেড়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন, ৬৫ রানে মুশফিকুর রহিম।

বাবর যদিও পরে সেঞ্চুরি করতে পারেননি, তবে ম্যাচের মোড় বদলে দেওয়া সময় বা ভাগ্য গড়ে দেওয়া জুটি গড়ে তুলেছেন। দ্বিতীয় উইকেটে ইমামের সঙ্গে যোগ করেছেন ১৫৭ রান।

এই জুটির আগে বাংলাদেশের শুরুটা খারাপ ছিল না। যদিও দুই প্রান্তে নতুন বলে দুই বোলারের বোলিং ছিল দুইরকম। মেহেদী হাসান মিরাজ নিজের প্রথম ৪ ওভারে দেন কেবল ৬ রান। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন প্রথম ৩ ওভারেই হজম করেন একটি করে বাউন্ডারি।

প্রথম ব্রেক থ্রু আসে সাইফের হাত ধরে। বেশ বাইরের বল পয়েন্টে মিরাজের হাতে তুলে দেন ফখর জামান।

তিনে নামা বাবর শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। একবার রান আউটের খানিকটা সুযোগ দেওয়া ছাড়া আর কোনো সুযোগ দেননি ইমাম। গড়ে ওঠে জুটি। তবে শুরুর ভাগে রান রেট অন্তত নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিল বাংলাদেশ। ২৫ ওভারে পাকিস্তানের রান ছিল ১১৫।

খেলার মোড় বদলে যাওয়া সময়টুকু এরপরই। ২৬ থেকে ৩০, এই ৫ ওভারে রান আসে ৪৮। বাবরের দুবার জীবন পাওয়া ওই সময়ই। ক্যাচ নিতে পারলে হয়তো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এসে পড়তো বাংলাদেশের দিকে। উল্টো দুজনের জুটি ছাড়িয়ে যায় দেড়শ।

১৫৭ রানের জুটি শেষ পর্যন্ত ভাঙেন দ্বিতীয় স্পেলে ফেরা সাইফ। তাকে পরপর দুটি চার মেরে ৯৬ রানে পৌঁছে যান বাবর। কিন্তু আসরে তাকে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পেতে দেয়নি পরের বলে সাইফের ইয়র্কার। রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি বাবর।

ইমাম অবশ্য সেঞ্চুরি পেয়ে যান। ৩৬ ওয়ানডেতে সপ্তম সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ৯৯ বলে। তবে সেঞ্চুরিটাকে বড় করতে পারেননি। ঠিক ১০০ রানই হিট উইকেট, মুস্তাফিজের লেংথ বল ফ্লিক করতে গিয়ে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের পা চলে যায় স্টাম্পে।

এরপর বাংলাদেশ চেষ্টা করেছে ম্যাচে ফিরতে। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। ইমাদ ওয়াসিমের ২৬ বলে ৪৩ রানের ইনিংসে তবু পাকিস্তান ছাড়িয়ে যায় তিনশ।

মুস্তাফিজের মতো খরুচে ছিলেন সাইফও। তিন উইকেটের জন্য গুনেছেন ৭৭ রান। নতুন বলের পর পুরোনো বলেও দুর্দান্ত ছিলেন মিরাজ। দু:স্বপ্নের মতো কাটানো বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচটিতেও উইকেটশূন্য মাশরাফি মুর্তজা। নিজের শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচে ৭ ওভারে বাংলাদেশ অধিনায়ক দিয়েছেন ৪৬ রান।

রানটা তবু নাগালের বাইরে ছিল না। প্রয়োজন ছিল গোছানো ব্যাটিং। কেবল সাকিব ছাড়া সেটি পারলেন না আর কেউ।

সম্ভাবনাময় শুরুটাকে যথারীতি আলগা শটে ছুঁড়ে এসেছেন সৌম্য সরকার। তামিম ইকবাল ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। ২১ বলে ৮ রান করে বোল্ড হয়েছেন শাহিনের দুর্দান্ত ইনকাটারে।

দেশের সফলতম ব্যাটসম্যান বিশ্বকাপে প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে পারলেন সামান্যই। ৮ ইনিংসে ফিফটি করতে পেরেছেন কেবল ১টি।

ভালো শুরু করে মুশফিকুর রহিম স্টাম্পে টেনে এনেছেন ওয়াহাব রিয়াজের বল। সাকিব ও লিটন দাস সেখান থেকে চেষ্টা করেছেন দলকে টানতে। ইনিংসের একমাত্র ফিফটি জুটি গড়েছেন দুজন। শাহিন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তখনই। সেই বাধা আর জয় করতে পারেনি বাংলাদেশ।

৩২ রান করে লিটন ফিরেছেন শাহিনের স্লোয়ারে। বিশ্বকাপে ৮ ইনিংসে সপ্তম ফিফটিতে সাকিব আউট হয়েছেন শাহিনকেই জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে।

পরে মাহমুদউল্লাহ-মোসাদ্দেকরা পারেননি দলকে লক্ষ্যের কাছে নিয়ে যেতেও। শাহিনের ইয়র্কারের প্রদর্শনীতে শেষটা হয়ে গেছে দ্রুত। ২৪ রানের মধ্যে পড়েছে শেষ ৫ উইকেট।

শেষ ম্যাচে জয়ের স্বস্তিতে যখন মাঠ ছাড়ছে পাকিস্তান, ক্রিকেটতীর্থে বাংলাদেশের ড্রেসিং রুম ডুবে তখন আঁধারে। স্কোরবোর্ড তখন তাকিয়ে যেন গোটা বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতীকি হয়ে। অনেকটা জুড়ে সাকিব, একটুখানি মুস্তাফিজ, নেই যেন আর কেউ!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ৩১৫/৯ (ফখর ১৩, ইমাম ১০০, বাবর ৯৬, হাফিজ ২৭, হারিস ৬, ইমাদ ৪৩, সরফরাজ ৩*, ওয়াহাব ২, শাদাব ১, আমির ৮, শাহিন ০*, মিরাজ ১০-০-৩০-১, সাইফ ৯-০-৭৭-৩, মুস্তাফিজ ১০-০-৭৫-৫, মাশরাফি ৭-০-৪৬-০, সাকিব ১০-০-৫৭-০, মোসাদ্দেক ৪-০-২৭-০)।

বাংলাদেশ: ৪৪.১ ওভারে ২২১ (তামিম ৮, সৌম্য ২২, সাকিব ৬৪, মুশফিক ১৬, লিটন ৩২, মাহমুদউল্লাহ ২৯, মোসাদ্দেক ১৬, সাইফ ০, মিরাজ ৬*, মাশরাফি ১৫, মুস্তাফিজ ১; হাফিজ ৬-১-৩২-০, আমির ৭-০-৩১-১, শাহিন ৯.১-০-৩৫-৬, ওয়াহাব ৭-০-৩৩-১, ইমাদ ৬-০-২৬-০, শাদাব ৯-০-৫৯-২)।

ফল: পাকিস্তান ৯৪ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শাহিন শাহ আফ্রিদি

 

সূত্র, বিডিনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» কুয়েতে কুমিল্লা প্রবাসী সংগঠনের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

» কুয়েত বিএনপির আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

» কুয়েত প্রবাসী কমিউনিটি নেতা মো: আজাদুর রহমান আর নেই

» মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে অর্থ ও পরিকল্পনা উপ-কমিটির শ্রদ্ধা জ্ঞাপন

» কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস পালিত

» জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন কুয়েতের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

» বাংলাদেশ ফুটবল এসোসিয়েশন কুয়েতের নতুন কমিটি, সভাপতি মোরশেদ-সাধারণ সম্পাদক কোরবান

» প্রবাসী স্বজন ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

» মৌলভীবাজারে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ

» মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২৭ জনে

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

আসরের শুরুটা দুর্দান্ত, শেষটায় ছিল ব্যর্থতা

আশা ছিল শেষ ভালোর। সেমি-ফাইনাল স্বপ্ন গুঁড়িয়ে যাওয়ার পর নতুন আশায়ও গুড়ে বালি। শেষ ভালো নয়, বরং শেষের জন্য জমা ছিল যেন সবচেয়ে খারাপটুকুই। শাহিন শাহ আফ্রিদির আগুনে বোলিংয়ে পুড়ল ব্যাটিং। এবারের আসরে নিজেদের সবচেয়ে কম রানের স্কোর গড়ে পাকিস্তানের কাছে বড় হারের গ্লানিতে শেষ হলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ।

বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৯৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। এই হারে মিলিয়ে গেছে পঞ্চম স্থানের হাতছানিও।

অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের ফলের ওপর নির্ভর করবে সাত নাকি আটে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করবে বাংলাদেশ। তবে অবস্থান যেটিই হোক, বিশ্বকাপ অভিযানকে এবার ব্যর্থই বলতে হবে।

লর্ডসে শুক্রবার সেঞ্চুরি করেছেন পাকিস্তানের ওপেনার ইমাম-উল-হক, ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি বাবর আজম। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তান ৫০ ওভারে তোলে ৯ উইকেটে ৩১৫ রান। বাংলাদেশ ৩৫ বল আগেই গুটিয়ে গেছে ২২১ রানে।

৩৫ রানে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ধসিয়ে দিয়েছেন ১৯ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার শাহিন আফ্রিদি। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড এটি।

লর্ডসের উইকেট এ দিন ব্যাটিংয়ের জন্য খুব সহজ ছিল না। তবে টিকে থাকলে, নিবেদন দেখালে বড় রান সম্ভব, এটি যেমন ইমাম ও বাবর দেখিয়েছেন, পরে দেখিয়ে দিয়েছেন সাকিবও। অভাবনীয় পারফরম্যান্সের বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচটিতেও দলের আশা জিইয়ে ছিল তার ব্যাটে। বিশ্বকাপ ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ছুঁয়েছেন এক আসরে ৬০০ রান। স্বপ্নযাত্রা থেমেছে ৬৪ রানে। বাংলাদেশ পারেনি কাছে যেতেও।

আলাদা করে বলা যায় মুস্তাফিজুর রহমানের পারফরম্যান্সও। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে নিয়েছেন ৫ উইকেট। গড়েছেন সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের হয়ে ১০০ ওয়ানডে উইকেটের রেকর্ড। তবে এই ম্যাচে ৫ উইকেটের জন্য ৭৫ রান খরচকে ম্যাচ শেষে মনে হচ্ছে বেশ খরুচে।

টুর্নামেন্ট জুড়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে হতাশার অধ্যায় ছিল যেটি, সেই ফিল্ডিং ভুগিয়েছে শেষ ম্যাচেও। ৫৭ রানে বাবর আজমের ক্যাচ ছেড়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন, ৬৫ রানে মুশফিকুর রহিম।

বাবর যদিও পরে সেঞ্চুরি করতে পারেননি, তবে ম্যাচের মোড় বদলে দেওয়া সময় বা ভাগ্য গড়ে দেওয়া জুটি গড়ে তুলেছেন। দ্বিতীয় উইকেটে ইমামের সঙ্গে যোগ করেছেন ১৫৭ রান।

এই জুটির আগে বাংলাদেশের শুরুটা খারাপ ছিল না। যদিও দুই প্রান্তে নতুন বলে দুই বোলারের বোলিং ছিল দুইরকম। মেহেদী হাসান মিরাজ নিজের প্রথম ৪ ওভারে দেন কেবল ৬ রান। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন প্রথম ৩ ওভারেই হজম করেন একটি করে বাউন্ডারি।

প্রথম ব্রেক থ্রু আসে সাইফের হাত ধরে। বেশ বাইরের বল পয়েন্টে মিরাজের হাতে তুলে দেন ফখর জামান।

তিনে নামা বাবর শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। একবার রান আউটের খানিকটা সুযোগ দেওয়া ছাড়া আর কোনো সুযোগ দেননি ইমাম। গড়ে ওঠে জুটি। তবে শুরুর ভাগে রান রেট অন্তত নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিল বাংলাদেশ। ২৫ ওভারে পাকিস্তানের রান ছিল ১১৫।

খেলার মোড় বদলে যাওয়া সময়টুকু এরপরই। ২৬ থেকে ৩০, এই ৫ ওভারে রান আসে ৪৮। বাবরের দুবার জীবন পাওয়া ওই সময়ই। ক্যাচ নিতে পারলে হয়তো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এসে পড়তো বাংলাদেশের দিকে। উল্টো দুজনের জুটি ছাড়িয়ে যায় দেড়শ।

১৫৭ রানের জুটি শেষ পর্যন্ত ভাঙেন দ্বিতীয় স্পেলে ফেরা সাইফ। তাকে পরপর দুটি চার মেরে ৯৬ রানে পৌঁছে যান বাবর। কিন্তু আসরে তাকে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পেতে দেয়নি পরের বলে সাইফের ইয়র্কার। রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি বাবর।

ইমাম অবশ্য সেঞ্চুরি পেয়ে যান। ৩৬ ওয়ানডেতে সপ্তম সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ৯৯ বলে। তবে সেঞ্চুরিটাকে বড় করতে পারেননি। ঠিক ১০০ রানই হিট উইকেট, মুস্তাফিজের লেংথ বল ফ্লিক করতে গিয়ে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের পা চলে যায় স্টাম্পে।

এরপর বাংলাদেশ চেষ্টা করেছে ম্যাচে ফিরতে। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। ইমাদ ওয়াসিমের ২৬ বলে ৪৩ রানের ইনিংসে তবু পাকিস্তান ছাড়িয়ে যায় তিনশ।

মুস্তাফিজের মতো খরুচে ছিলেন সাইফও। তিন উইকেটের জন্য গুনেছেন ৭৭ রান। নতুন বলের পর পুরোনো বলেও দুর্দান্ত ছিলেন মিরাজ। দু:স্বপ্নের মতো কাটানো বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচটিতেও উইকেটশূন্য মাশরাফি মুর্তজা। নিজের শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচে ৭ ওভারে বাংলাদেশ অধিনায়ক দিয়েছেন ৪৬ রান।

রানটা তবু নাগালের বাইরে ছিল না। প্রয়োজন ছিল গোছানো ব্যাটিং। কেবল সাকিব ছাড়া সেটি পারলেন না আর কেউ।

সম্ভাবনাময় শুরুটাকে যথারীতি আলগা শটে ছুঁড়ে এসেছেন সৌম্য সরকার। তামিম ইকবাল ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। ২১ বলে ৮ রান করে বোল্ড হয়েছেন শাহিনের দুর্দান্ত ইনকাটারে।

দেশের সফলতম ব্যাটসম্যান বিশ্বকাপে প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে পারলেন সামান্যই। ৮ ইনিংসে ফিফটি করতে পেরেছেন কেবল ১টি।

ভালো শুরু করে মুশফিকুর রহিম স্টাম্পে টেনে এনেছেন ওয়াহাব রিয়াজের বল। সাকিব ও লিটন দাস সেখান থেকে চেষ্টা করেছেন দলকে টানতে। ইনিংসের একমাত্র ফিফটি জুটি গড়েছেন দুজন। শাহিন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তখনই। সেই বাধা আর জয় করতে পারেনি বাংলাদেশ।

৩২ রান করে লিটন ফিরেছেন শাহিনের স্লোয়ারে। বিশ্বকাপে ৮ ইনিংসে সপ্তম ফিফটিতে সাকিব আউট হয়েছেন শাহিনকেই জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে।

পরে মাহমুদউল্লাহ-মোসাদ্দেকরা পারেননি দলকে লক্ষ্যের কাছে নিয়ে যেতেও। শাহিনের ইয়র্কারের প্রদর্শনীতে শেষটা হয়ে গেছে দ্রুত। ২৪ রানের মধ্যে পড়েছে শেষ ৫ উইকেট।

শেষ ম্যাচে জয়ের স্বস্তিতে যখন মাঠ ছাড়ছে পাকিস্তান, ক্রিকেটতীর্থে বাংলাদেশের ড্রেসিং রুম ডুবে তখন আঁধারে। স্কোরবোর্ড তখন তাকিয়ে যেন গোটা বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতীকি হয়ে। অনেকটা জুড়ে সাকিব, একটুখানি মুস্তাফিজ, নেই যেন আর কেউ!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ৩১৫/৯ (ফখর ১৩, ইমাম ১০০, বাবর ৯৬, হাফিজ ২৭, হারিস ৬, ইমাদ ৪৩, সরফরাজ ৩*, ওয়াহাব ২, শাদাব ১, আমির ৮, শাহিন ০*, মিরাজ ১০-০-৩০-১, সাইফ ৯-০-৭৭-৩, মুস্তাফিজ ১০-০-৭৫-৫, মাশরাফি ৭-০-৪৬-০, সাকিব ১০-০-৫৭-০, মোসাদ্দেক ৪-০-২৭-০)।

বাংলাদেশ: ৪৪.১ ওভারে ২২১ (তামিম ৮, সৌম্য ২২, সাকিব ৬৪, মুশফিক ১৬, লিটন ৩২, মাহমুদউল্লাহ ২৯, মোসাদ্দেক ১৬, সাইফ ০, মিরাজ ৬*, মাশরাফি ১৫, মুস্তাফিজ ১; হাফিজ ৬-১-৩২-০, আমির ৭-০-৩১-১, শাহিন ৯.১-০-৩৫-৬, ওয়াহাব ৭-০-৩৩-১, ইমাদ ৬-০-২৬-০, শাদাব ৯-০-৫৯-২)।

ফল: পাকিস্তান ৯৪ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শাহিন শাহ আফ্রিদি

 

সূত্র, বিডিনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



আজকের দিন-তারিখ

  • শুক্রবার (দুপুর ১২:২১)
  • ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ (বসন্তকাল)

Exchange Rate

Exchange Rate EUR: শুক্র, ২৯ মার্চ.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 / +8801920733632

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।