মৌলভীবাজার: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আজ ষষ্ঠী, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। এর মধ্য দিয়েই দেবী দুর্গার মূল প্রতিমায় পূজা শুরু হল।মঙ্গলবার সকালে বেলগাছের নিচে বিল্লে ষষ্ঠী পালন করা হবে। সন্ধ্যায় হবে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস।
আগামী শনিবার বিজয়া দশমী পর্যন্ত ঢাকের বোল, মন্ত্র, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনিতে মুখরিত থাকবে পূজামণ্ডপগুলো।পূজারি ও ভক্তরা উদ্বেলিত হবেন দেবী মহামায়ার অধিষ্ঠানে। সবাই শামিল হবেন পৃথিবীর সব আসুরিক শক্তির বিরুদ্ধে বিজয় ও মানুষের কল্যাণ প্রতিষ্ঠার প্রার্থনায়।
সোমবার ছিল দেবীর বোধন। ২৭ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী, ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষ্ঠমী ও কুমারী পূজা, ২৯ সেপ্টেম্বর মহানবমী শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনের দুর্গোৎসব।
মৌলভীবাজারের ত্রিনয়ণী শিববাড়ি পূজামন্ডপ নির্মাণ করেছে ব্যতিক্রমী প্রতিমা। অশুভ শক্তি বিনাশ করতে দুর্গা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছেন। সেই নানা সময়ের নানা রূপ ফুটিয়ে এবার তিন ধরনের প্রতিমা তৈরি করেছে তারা। দুর্গতিনাশিনী দুর্গা এসেছেন বিশ্ব শান্তির জন্য তথা সবার মঙ্গলের তরে। কিন্তু অসুরবিনাশিনী জগৎজননী দেবী দুর্গা বাঙালীগৃহে আসেন অন্যভাবে। কৈলাস ছেড়ে প্রতিবছর তিনি আসেন বাবার বাড়িতে কন্যারূপে। দেবী দুর্গার সঙ্গে প্রতি শরতে মর্ত্যে আসেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ। এই চালচিত্রে দেবাদিদেব মহাদেবও (শিব) বাদ যান না। লক্ষ্মী সমৃদ্ধি ও সরস্বতী জ্ঞানের প্রতীক। কার্তিক হচ্ছেন দেবসেনাপতি, শত্রুনাশকারী। আর গণেশ হচ্ছেন সর্বসিদ্ধিদাতা অর্থাৎ মানুষের কামনা পূরণকারী। বাঙালী হিন্দুরা যে কোন শুভ কাজে ইষ্টনাম হিসেবে দেবী দুর্গাকে স্মরণ করে থাকেন।
এ বছর সারা জেলায় ১ হাজার ৪টি পূজামন্ডপ তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে সর্বজনীন ৮২১টি এবং ব্যক্তিগত ১৮৩টি।
এদিকে রাজনগরের পাচগাঁওয়ে প্রতিবারের মতো এবারও লাল দুর্গার মুর্তি তৈরী করা হয়েছে। এই মূতিগুলো আকারে বড় না হলেও লাল রঙের বিশেষ দেবী মূর্তি নির্মাণ করা হয়। আয়োজকরা জানান, তাদের বিশ্বাস এখানে দেবী স্বশরীরে লাল রং ধারণ করে উপস্থিত হয়ে ভক্তদের মনোবাসনা পূর্ণ করবেন। এই বিশ্বাসে প্রতিবারের মতো এবারো নামবে হাজার হাজার পূণ্যার্থীদের ঢল।
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল বলেন,পূজা উপলক্ষে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রতিটি পূজাম-পের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, র্যাব ও বিডিআর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুুলিশ এবং র্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি ম-পে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবেন।