রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম লিলন হত্যামামলায় তিন জনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।
তিন আসামিকে দণ্ডিত করার পাশাপাশি বাকি আট আসামিকে খালাস দিয়ে সোমবার রায় দেন রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার রায়।
দণ্ডিতরা হলেন রাজশাহীর কাটাখালি পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম মানিক, আবদুস সামাদ পিন্টু ও সবুজ শেখ।
এর মধ্যে সবুজ শেখ পলাতক রয়েছেন। অন্য দুজন রায়ের সময় আদালতে ছিলেন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গিদের চোরাগোপ্তা হামলার মধ্যে পাঁচ বছর আগে অধ্যাপক শফিউল কুপিয়ে হত্যার পর ধর্মীয় উগ্রবাদীদের দিকেই ছিল সন্দেহের তীর।
সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের এই অধ্যাপককে ক্যাম্পাসের পাশে চৌদ্দপাই এলাকায় বাড়ির সামনে হত্যার পর আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২ নামে খোলা ফেইসবুক একাউন্টে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকারের বার্তাও এসেছিল।
২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের তদন্তও সেদিকে এগোচ্ছিল। পরে র্যাবের মাধ্যমে তদন্তের বাঁক বদল ঘটে।
র্যাব ওই বছরই যুবদল ও ছাত্রদলের দুই নেতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তারের পর দাবি করে, বিভাগের এক নারী কর্মকর্তার সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণের প্রতিশোধ নিতে শফিউলকে হত্যা করা হয়।
নাসরিন আক্তার রেশমা নামে ওই সেকশন অফিসারের স্বামী হলেন দণ্ডিত পিন্টু। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি। আর বেকার যুবক সবুজকে এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা হয় বলে র্যাবের ভাষ্য।
মানিক রাজশাহীর কাটাখালি এলাকার চোরাচালান, বালুমহাল ও ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণে বিএনপি নেতাদের ভাড়াটিয়া হিসাবে কাজ করতেন বলে পুলিশের ভাষ্য। পিন্টুর সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় যুক্ত হন তিনি।
র্যাব জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ নভেম্বর অধ্যাপক শফিউল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হলে পিন্টু তাকে অনুসরণ করেন এবং মোবাইল ফোনে তার গতিবিধি অন্যদের জানান।
সেদিন মোটর সাইকেলে এক সহকর্মীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়েছিলেন শফিউল। ক্যাম্পাস সংলগ্ন বিনোদপুরে সহকর্মীকে নামিয়ে দিয়ে চৌদ্দপাই এলাকায় বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। মহাসড়ক থেকে ২০০ গজ দূরে বাড়িতে যেতে কাঁচা রাস্তায় নামার পর তিনি হামলার মুখে পড়েন।
শফিউলের ছেলে জঙ্গিদের দায়ী করে গেলেও র্যাবের বক্তব্যের পর তাদের দেখানো পথেই এগোয় পুলিশের তদন্ত।
২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রেজাউস সাদিক ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
সূত্র, বিডিনিউজ২৪.কম