জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া : রাঙ্গুনিয়া উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক রাঙ্গুনিয়া গ্রামের জেসমিন আক্তার (২২) রাঙ্গামাটিতে প্রেমিকের হাতে হত্যার অভিযোগ করেছেন নিহতের পিতা দিনমজুর নূর মোহাম্মদ। তার মেয়েকে জোর পূর্বক অপহরণ করে পরে রাঙ্গামাটিতে নিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানান তিনি। গত ২১ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটিতে অজ্ঞাত তরুণীর লাশ পাওয়ার খবরে তার পিতা নূর মোহাম্মদ মেয়ের পড়নের জামা ও বিভিন্ন আলামত দেখে তিনি এটি তার মেয়ে জেসমিনের লাশ বলে নিশ্চিত করেন। লাশ সনাক্তের পর জেসমিনের পিতা নূর মোহাম্মদ বাদী হয়ে রাঙ্গামটি কোতয়ালী থানায় প্রেমিক এহছানুল নেওয়াজ রাহেদকে প্রধান ও স্থানীয় যুবক আব্দুল মান্নান, মো. শহিদকে আসামী করে খুনের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
নিহত জেসমিনের পিতা নূর মোহাম্মদ জানান, একই এলাকার এহছানুল নেওয়াজ রাহেদ বিভিন্ন সময় তাঁর মেয়েকে প্রেমের নামে বিরক্ত ও খারাপ প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার প্রস্তাবে জেসমিন রাজী না হওয়া স্বত্ত্বেও সে বিভিন্ন হয়রানি করলে জেসমিন বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। এনিয়ে মৌখিকভাবে বখাটে রাহেদকে শাসানো হলেও সে তার মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে ফুসলিয়ে প্রেমের অভিনয় করে ঘর থেকে নিয়ে যায়। পরে জেসমিনের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এর কিছুদিন পর রাঙ্গামাটির একটি আবাসিক হোটেল থেকে তাদের দু’জনকে আটক করে পুলিশ। পরে গত ১৬ আগস্ট জেসমিনের প্রেমিক রাহেদ তার পাঁচ-ছয়জন বন্ধু নিয়ে জেসমিনকে বাসা থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এরপর জেসমিনের আর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে জেসমিনের পরিবার বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সুত্রে জানতে পারে গত ২২ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটিতে অজ্ঞাতনামা তরুণীর লাশ উদ্ধার হয়েছে। সংবাদের সুত্র ধরে রাঙ্গামাটিতে ছুটে এসে কোতয়ালী থানায় যোগাযোগ করে এবং জেসমিনের কাপড়সহ বিভিন্ন আলামত দেখে তারা নিশ্চিত করে এটি তাদের মেয়ে।
এদিকে গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে অজ্ঞাতনামধারীরা তাদের ঘরে আগুন দিয়ে সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দিয়েছে বলে জেসমিনের বাবা জানায়। তিনি জেসমিনকে তার প্রেমিক রাহেদই হত্যা করেছে বলে দাবি করেন। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন জেসমিনের পরিবার।
জেসমিন হত্যা কান্ড মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাঙ্গামাটি কোতোয়ালী থানার এসআই লিমন বোস জানান, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আশা করি তাদের অতিস্বত্ত্বর গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রহিম উদ্দিন চৌধুরী জানায়, ‘জেসমিনের খুন হওয়ার বিষয়টি তার বাবার কাছ থেকে শুনেছি। এবিষয়ে জেসমিনের পিতাকে আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।’
উল্লেখ্য গত ২১ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় রাঙ্গামাটির ঝগড়াবিল মৌজার ডিয়ার পার্ক এলাকার ধর্মাঙ্কুর বৌদ্ধ বিহারের পাশ থেকে এক অজ্ঞাত তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পরিচয় না পাওয়ায় বেওয়ারিশ লাশ হিসাবে দাফন করা হয়েছে।
ছবির ক্যাপশন : রাঙ্গামাটিতে প্রেমিকের হাতে খুন হওয়া রাঙ্গুনিয়ার জেসমিন আক্তার।