কারবালার স্মরণে আশুরার দিনে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে প্রতি বছরই তাজিয়া মিছিল করেন শিয়া মুসলমানরা। তবে এ বছর মহামারীর কারণে যেহেতু গণজমায়েত নিষিদ্ধ, সেহেতু খোলা স্থানে তাজিয়া মিছিল ও সমাবেশ না করে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে ঘরোয়াভাবে আশুরার আনুষ্ঠানিকতা সারতে বলেছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ।
প্রতিবছর ঢাকায় আশুরার প্রধান তাজিয়া মিছিলটি বের হয় পুরান ঢাকার হোসেনী দালানের ইমামবাড়া থেকে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ধানমণ্ডিতে প্রতীকী ‘কারবালা’ প্রাঙ্গণে তা শেষ হয়।
মহামারীর বিধিনিষেধের কারণে এবার তা ইমামবাড়া প্রাঙ্গণে সীমাবদ্ধ রাখা হলেও মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দারা সে বিধিনিষেধ মানেননি।
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মর্তুজা হায়দার লিটন ঘটনাস্থল থেকে জানান, বেলা আড়াইটার দিকে জেনেভা ক্যাম্পের কয়েকশ লোক তাজিয়া মিছিল নিয়ে গজনবী রোড দিয়ে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ সেখানে বাধা দেয়। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ শুরু করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মোহাম্মদপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে গজনবী রোডে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পরও সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় গজনবী রোডের পূর্ব দিক থেকে মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে পশ্চিম দিক পর্যন্ত তাজিয়া মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়।”
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম রাস্টন বলেন, “আমরা মিছিল রাস্তায় না নিতে অনেক অনুরোধ করেছিলাম ক্যাম্পবাসীকে। কিন্তু তারা অনুরোধ শোনেননি। পরে শুধুমাত্র ক্যাম্পের পাশে গজনবী রোডেই মিছিল সীমাবদ্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও তাদের সেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”
এদিকে কৃষি মার্কেট কাঁচা বাজার সংলগ্ন ক্যাম্প থেকে তাজিয়া মিছিল নিয়ে একটি দল জেনেভা ক্যাম্পের মিছিলে যোগ দেওয়া চেষ্টা করলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এসময় পুলিশের সাথে তাদের কিছুটা ধাক্কাধাক্কিও হয়।
পরে পুলিশ কঠোর অবস্থান নিলে এই গ্রুপটি আর জেনেভা ক্যাম্পের মিছিলে যোগ দিতে পারেনি। তারা মার্কেট ক্যাম্পের সামনের সড়কে অবস্থান নেয়।
বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তাজিয়া মিছিলের আরেকটি গ্রুপ কোনো বাধা ছাড়াই নূরজাহান রোডের একটি অংশে অবস্থান নিয়ে ঢোল বাজিয়ে ‘হায় হোসেন! হায় হোসেন!’ বলে মাতম করতে থাকে।
তাজিয়া মিছিয়ে যোগ দেওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত রাস্তায় থাকার পরিকল্পনা করেছেন।