নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- প্রথমে মনে হচ্ছিল ফাইনালটা বুঝি অনায়াসেই জিতে যাবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। কিন্তু খেলাটা যে ক্রিকেট। ২০ ওভারের ক্রিকেটে প্রতি ওভারে ওভারেই নাটকীয়তা। এখানেও তারই দেখা মিলল। এক পর্যায়ে ম্যাচে ফিরে আসে বরিশাল বুলস। কিন্তু শেষ ওভারের নাটকীয়তায় হাসিমুখ থাকলো মাশরাফি বিন মর্তুজার। দারুণ এক রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয় তুলে নিল কুমিল্লা। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা দলটি যোগ্য দল হিসেবেই হাতে তুললো শিরোপা। দল পেল ৩ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর জয়।
বরিশাল বুলসের ছুড়ে দেওয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান তোলে কুমিল্লা।
বরিশালের দেওয়া লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই লিটন কুমার দাসের উইকেট হারিয়ে বসে কুমিল্লা। দলীয় ২৩ রানে মোহাম্মদ সামির বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। ৬ বল খেলে ৩ রান করেন লিটন।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ইমরুল কায়েস ও আহমেদ শেহজাদ ৫৪ রান যোগ করেন। তবে ব্যক্তিগত ৩০ রান করে বরিশাল অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর বলে আউট হয়ে যান শেহজাদ। ২ উইকেট হারিয়ে দলীয় স্কোর তখন ৭৭ রান।
তবে আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েস তুলে নেন এবারের বিপিএলে নিজের তৃতীয় অর্ধশতক। ১২তম ওভারে মাহমুদউল্লাহর বলে আউট হওয়ার আগে ৩৭ বল খেলে তিনি করেন ৫৩ রান।
একদিকে অলক কাপালী ব্যাট হাতে উইকেট আগলে রাখলেও অপরপ্রান্তে ব্যাটসম্যানরা ছিলেন যাওয়া আসার মধ্যে। আশহার জাইদি ১৬, স্টিভেন্স ৮, মাশরাফি ০ ও শুভাগত হোম বিদায় নেন ১ রান করেই। আর অন্যপ্রান্তে কাপালীর ২৮ বলে অপরাজিত ৩৯ রানের ইনিংসে ভর করেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় কুমিল্লা। তার সঙ্গে ০ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন কুলাসেকারা।
বরিশালের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ ও কেভন কুপার। একটি উইকেটে নিয়েছেন মোহাম্মদ সামি।
এর আগে মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস করতে নেমে বরিশাল বুলসকে ব্যাটিংয়ে পাঠান কুমিল্লার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
ব্যাট করতে নেমে দেখেশুনেই এগোচ্ছিলেন বরিশালের দুই ওপেনার মেহেদী মারুফ ও সেক্কুুগে প্রসন্ন। তবে দলীয় ১৯ রানে আশহার জাইদির এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন মেহেদী। প্যাভিলিয়নে ফেরার সময় তিনি সংগ্রহ করেন ১১ রান।
অন্যপ্রান্তে সাব্বির রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করেন আরেক ওপেনার প্রসন্ন। ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারের সময় আবু হায়দারের বলে একটি ক্যাচ তুললে অলক কাপালী ব্যর্থ হন তা মুঠোবন্দী করতে। প্রসন্ন তখন ক্রিজে ছিলেন ২২ রান নিয়ে।
তবে অষ্টম ওভারের শেষ বলে আর শেষরক্ষা হয়নি প্রসন্নের। ড্যারেন স্টিভেন্সের বলে সরাসরি বোল্ড আউট হয়ে যান তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে করেন ১৯ বলে ৩৩ রান।
১১তম ওভারে বল করতে এসে মাশরাফি তুলে নেন গত ম্যাচের জয়ের নায়ক সাব্বির রহমানের উইকেট। ১৯ বল খেলে তিনি করেন ৯ রান। দলীয় স্কোর তখন ৩ উইকেট হারিয়ে ৬৮ রান। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ব্যাট করতে নেমে দলকে দারুণভাবে এগিয়ে নেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও শাহরিয়ার নাফীস। ৫৬ বলে ৮১ রান যোগ করে এই জুটি। তবে ১৯.৪ ওভারে কুলাসেকারার বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। আউট হওয়ার আগে তিনি খেলেন ৩৬ বলে ৪৮ রানের একটি ইনিংস। ৬টি চার ও ১টি ছয়ের মারে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি।
অন্যদিকে ৩১ বল খেলে ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন নাফীস। তার ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছিলেন ২টি চার ও ৩টি ছয়ের সাহায্যে। আর ২ বলে ৭ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন কেভন কুপার।
কুমিল্লার হয়ে একটি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন মাশরাফি, জাইদি, কুলাসেকারা ও স্টিভেন্স।