নিজস্ব প্রতিবেধকঃ- বঙ্গবভনে রাষ্ট্রপতি এডভোকেট মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
পরবর্তীতে রাত ১০ টার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহর বঙ্গভবন থেকে বের হতে দেখা গেছে। তবে সেখানে কি নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি।
সম্প্রতি বিচারপতিদের অবসরের পর রায় লেখা নিয়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার দেওয়া এক মন্তব্যকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার মধ্যে রাষ্ট্রপ্রধানের বাড়িতে এক হলেন সরকার প্রধান ও বিচারাঙ্গন সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘নৈশভোজের আমন্ত্রণে আমরা বঙ্গভবনে গিয়েছিলাম। এতে অন্য কিছু ছিল না।’
বাংলাদেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছিলেন, ‘অবসরে যাওয়া বিচারপতিরা যে রায় লেখেন তা সংবিধান ও আইনপরিপন্থী। কোনো কোনো বিচারপতি রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন। আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পরও রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী।’ তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি এখন থেকে বিচারকগণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এমন বেআইনি কাজ থেকে বিরত থাকবেন।’
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার এমন বক্তব্যের বিরোধিতা করে গত মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘অবসরে যাওয়ার পর কোনো বিচারপতির রায় লেখা অসাংবিধানিক হতে পারে না। এমন কোন কথা আমাদের সংবিধানে লেখা নেই। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি ইচ্ছে করলেই যা তা বলতে পারেন না।’
অন্যদিকে প্রধান বিচারপতি বক্তব্যকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ দাবি করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত গত সোমবার রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা একটু বেশি কথা বলেন বলেন। প্রধান বিচারপতি পদ থেকে তিনি বর্তমানে এমন কিছু কথা বলেছেন, যা দেশের রাজনীতিতে উৎকণ্ঠা এবং বেশ উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। এভাবে কথা বলতে বলতে তিনি কোথায় চলে যাচ্ছেন, তারও একটা সীমা থাকা উচিত।’
অন্যদিকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি মনে করে প্রধান বিচারপতির সেই বক্তব্য ভূকম্পনের মতো সরকারকে নড়িয়ে দেবে।’
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘দেশের বিচার বিভাগের শীর্ষে বসে আছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি হলেন বিচারের মাথা। আমরা তার বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। কারণ তিনি সাহস করে তার ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে সেই দায়িত্বের কথা মনে করে এ সব কথা বলেছেন। আমি মনে করি প্রধান বিচারপতির বক্তব্য সরকারকে নাড়িয়ে দেবে।