নিজস্ব প্রতিবেধকঃ- বাংলাদেশে অষ্টম বেতন কাঠামোতে বৈষম্য নিরসনের দাবিতে দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচির আজ সাতদিন পার হয়েছে।কিন্তু এই সংকটের সমাধান কবে আসবে তা নিয়ে সাধারণ শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার গণভবনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক প্রতিনিধিদের সাথে এক বৈঠক করেছেন। সে বৈঠকে শিক্ষকদের সমস্যা নিরসনের জন্য আশ্বস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। শিক্ষক নেতারা বলেছেন, মঙ্গলবার সাধারণ সভার পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত জানাবেন। তবে ধর্মঘট প্রত্যাহার করার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, দ্রুত এই সংকটের সমাধান না হলে শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কর্মসূচির প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাবার আহ্বানের পাশাপাশি সমালোচনাও করেছেন। এরপর শিক্ষামন্ত্রীর সাথে শিক্ষক নেতাদের কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোন সমাধান আসেনি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বিষয়টিকে ‘জটিল’ হিসেবে বর্ণনা করছেন।তিনি বলেন, “মর্যাদাটা যে অর্থ নির্ভর সেটা আমি মনে করি না। কিন্তু কখনো-কখনো অর্থের সাথে মর্যাদার একটি সম্পর্ক জড়িয়ে থাকে।”
শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। যার পধ্যে রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট অধ্যাপকদের পাঁচ শতাংশকে সিনিয়র সচিবদের সমান মর্যাদা দেয়া হোক। তখন ১৭০ থেকে ১৮০ জন অধ্যাপকের মূল বেতন হবে ৮২ হাজার টাকা। তার পাশাপাশি আগের নিয়ম অনুযায়ী অধ্যাপকদের ২৫ শতাংশকে সচিবদের সমান মর্যাদা ও বেতন দেয়ার দাবি তুলছেন শিক্ষকরা।দাবি পূরণে এখন ধর্মঘট চলছে তখন শিক্ষার্থীরা দ্রুত এর সমাধান চাইছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী সায়মা ফারহানা মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমে উভয় পক্ষের(শিক্ষক এবং সরকার)অবস্থান বিচার করা উচিত।আরেকজন শিক্ষার্থী নাসির উদ্দিন বলেন, “প্রত্যেকে একটা মধ্যবর্তী অবস্থানে এসে সমস্যার দ্রুত সমাধান করা উচিত বলে আমি মনে করি।”
বর্তমান বেতন কাঠামোতে বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা তৃতীয় গ্রেডের উপরে উঠতে পারবে না। এই বৈষম্যের নিরসন তারা চান।কিন্তু শিক্ষকদের দাবি উপেক্ষা করে উল্টো সরকারি মহল থেকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেয়া হয়েছে বলে শিক্ষকদের অভিযোগ।বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র বলছিলেন, সবার এজন্যই পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের একজন শিক্ষক আবুল খায়ের মো. ইউনুস ধর্মঘটে শিক্ষার্থীদের ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন।সংকট নিরসনের জন্য সরকারের দিকেই তাকিয়ে আছেন বলে উল্লেখ করেন মি: ইউনুস।
৮ম জাতীয় বেতন কাঠামো নিয়ে পুলিশ এবং প্রশাসন ছাড়া বাকি অনেকের মধ্যেই অসন্তোষ রয়েছে।এমন প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই অসন্তোষের কারণ এবং সেটি সমাধানের উপায় কি হতে পারে তা নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।