মিলান থেকে তুহিন মাহামুদ: আমাদের সমাজে একটি কথা প্রচলিত আছে যে,”ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়” বাস্তব জীবনে সত্যিই তাই!দেশপ্রেম, মমত্ববোধ, একাগ্রচিত্ত, ধৈর্যশীলতা আর কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসয়ই পারে একজন মানুষকে তার লক্ষে পৌঁছে দিতে।
হৃদিতা খান তার ব্যতিক্রম নন! ২০০১ সালের ১৯ফেব্রুয়ারি ইতালির রোম শহরে জন্মগ্রহন করেন। বাবা আমিন খান এবং মা এসমোত আরার স্বপ্ন এই ছোট শিশু একদিন বাঙ্গলি জাতিস্বত্ত্বা বিকাশে অসাধারণ ভূমিকা রাখবে ইউরোপের বুকে। তাদের সেই স্বপ্ন যেন ধীরে ধীরে লতা-পাতার মত বিস্তৃত হয়ে আলোর মুখ দেখতে শুরু করলো। হাটি হাটি পা পা করে বড় হতে লাগলো আর সংগীতের জগতে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত আলো ছঁড়াতে লাগলো সময়ের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে। বাবা আমিন খান একজন জাত শিল্পি এক সময় বাংলা বেতারে গান করতেন। জীবনও জীবিকার তাগিদে একদিন ইউরোপে আসেন কিন্তু এখানে এসে থেমে থাকেননি। ইউরোপের মাটিতে সংগীত ভূবনে হাজার হাজার প্রবাসীর হৃদয়ে স্হান করে নিয়েছেন।
ইতালি প্রায় শহরেই পদচারণায় মূখরিত হয়েছে সংগীত জগত। তাই নতুন প্রজন্মর পথ পরিক্রমার অগ্রভাগে দেশপ্রেমের উজ্জ্বল স্বাক্ষর রাখার দৃপ্ত শপথে দ্বায়িত্ববোধের জায়গা অনড় রয়েছেন তিনি। এবং মেয়েকে একজন সত্যিকারের শিল্পি করে গড়ে তোলার চেস্টায় অব্যহত রয়েছেন। আর সেই ইচ্ছে টুকু যেন পূরণে সচেষ্ট গুণি কন্যা হৃদিতা খান। হাটি হাটি পা পা করে আজ সাফল্যের চূড়ায় এসে পৌঁছেছেন! হাতে খড়ি বাবার কাছ থেকেই আর মায়ের প্রাণপন চেস্টায় একের পর এক সাফল্যের ধাঁপ পেরিয়ে বিজয়ের তিঁলক ললাটে এঁকেছেন।
সংগীত জগতের প্রতি শাখা দক্ষতার সাথে অতিক্রম করেছেন। আধুনিক, ফোক, গজন প্রায় প্রতিটি শাখায় যেন তাকে ছুঁয়েছে পরম মমতায়। শিশু থেকে কৈশরে পা রেখে জয় করেছেন লক্ষ মানুষের ভালোবাসা সংগীতের মাধ্যমে। এ যেন সৃস্টি কর্তার দান!এত অল্প বয়সে প্রবাসের এই বৈরী পরিবেশে বাঙ্গালীত্বকে বুকে ধারণ করে এতটা সাফল্য অর্জন করা কল্পনাতীত।
সংগীতের পথ ও মসৃন নয় এখানেও আছে নানা প্রতিবন্ধকতা, বাঁধা-বিপত্তি! আছে প্রতিযোগীতার বিভিন্ন স্তর আর সেই সব স্তর ডিঙ্গিয়ে এবার সাফল্যের মুকুট পরেছেন “চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ ২০১৭ ইউকে” প্রথম রানার্স আপ লাভের মাধ্যমে।
এ বিজয় হৃদিতার সংগীতের ভূবন সমাদৃত হবে বিশ্বব্যাপী। একদিন হৃদিতা খান সারা বিশ্ব জয় করবে সেই দিকই যেন ইঈিত করে সাফল্যের প্রতিটি স্তর। শুধু সংগীত জগতই নয় ক্রীড়া জগতেও রয়েছে সাফল্যের পদছাঁপ। সাঁতার প্রতিযোগিতায় প্রথম স্হান অধিকার লাভ করেছেন স্কুল প্রতিযোগীতায়।
এছাড়া বেশ কয়েক বার সংগীতের ওপর পুরুষ্কারে ভূষিত হন রোম শহর থাকা কালীন অবস্হায়। অসংখ্য স্টেজ প্রোগ্রাম, টেলিভিশনে লাইভ শো সহ গান গেয়ে সংগীত প্রিয় মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে স্হায়ী ভাবে ইংল্যান্ডে বাস করছেন! ইংল্যান্ডেও খ্যাতি ছঁড়িয়ে পড়ছে।
তার এই সাফল্য,কৃতিত্ব বাঙ্গালী সমাজের অহংকার। ষোলআনা বাঙ্গালি মননশীলতায় প্রবাসের মাটিতে বেড়ে ওঠা হৃদিতা একটি দৃস্টান্ত হয়ে থাকবে। প্রবাস প্রজন্মের কোমল মতি শিশু অন্তর হয়ে উঠবে সরব বাঙ্গালি চিন্তা চেতনায়। হৃদিতা অনেকদূর এগিয়ে যাক এই প্রত্যাশা আমাদের সকলের।
অগ্রদৃষ্টি.কম // এমএসআই