গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় বিষয়ে পণ্ডিত ও গ্রামের মুরব্বিরা যে সমস্যার সমাধান দিতে পারলেন না, রাস্তায় শুয়ে থাকা এক গৃহহীন ব্যক্তি তাঁর সাধারণ প্রজ্ঞার মাধ্যমে সেই জটিল বিবাহ বিচ্ছেদ থেকে এক দম্পতিকে রক্ষা করলেন।
সম্প্রতি এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে তুমুল ঝগড়ার পর রাগের মাথায় বলে বসেন, “আমি তোমাকে তালাক দিলাম। তুমি কোনো অন্ধকার, অমঙ্গলময় ও আলোহীন দিন ছাড়া আমার কাছে আর ফিরতে পারবে না।” স্ত্রীর চলে যাওয়ার পর স্বামী অনুতপ্ত হন এবং এই চরম বাক্যটির প্রতিকার খুঁজতে যান।
প্রথমে তিনি গ্রামের এক প্রবীণ ব্যক্তির কাছে যান, কিন্তু তিনি এমন অমঙ্গলময় দিন খুঁজে না পেয়ে সমাধান দিতে পারলেন না। এরপর তিনি শহরের বড় মসজিদে গিয়ে এক প্রখ্যাত পণ্ডিতের পরামর্শ চান। পণ্ডিতও সমস্যার জটিলতা স্বীকার করে তাঁকে কোনো পথ দেখাতে পারলেন না।
হতাশ হয়ে স্বামী যখন বাজারের ভিড়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে বসেছিলেন, তখন এক ছিন্নবস্ত্র পরিহিত, এলোমেলো চুলওয়ালা ব্যক্তিকে দেখতে পান। কাছে বসে সব কথা বলার পর সেই গৃহহীন ব্যক্তি অদ্ভুত কিছু প্রশ্ন করেন। তিনি জানতে চান, “আজ ফজরের নামাজ পড়েছেন কি?” উত্তরে স্বামী জানান, তাড়াহুড়োয় তিনি ফজর নামাজ পড়তে পারেননি। এরপর গৃহহীন লোকটি জানতে চান, “আজ আপনার মাকে দেখেছেন কি?” স্বামী জানান, তাড়াহুড়ো করে বের হওয়ার কারণে তিনি মা’র সঙ্গেও দেখা করেননি। সবশেষে জানতে চাওয়া হয়, “আজ আপনি কতটুকু কুরআন পড়েছেন?” স্বামী বিরক্ত হয়ে জানান, এসবের কোনো কিছুই করা হয়নি।
তখন গৃহহীন লোকটি হাসিমুখে বলেন, “আপনি গিয়ে আপনার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনুন। যখন আপনি ফজরের নামাজ পড়েননি, কুরআন তিলাওয়াত করেননি এবং এমনকি আপনার মায়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁর অনুমতিও নেননি, তখন এর চেয়ে বেশি দুঃখজনক ও অন্ধকার দিন আর কী হতে পারে?” প্রজ্ঞাপূর্ণ এই কথা শুনে স্বামী আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন। তিনি বুঝতে পারেন, এই গৃহহীন ব্যক্তি আসলে তাঁর জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার দিনটি চিহ্নিত করে দিয়েছেন – যখন মানুষ স্রষ্টা ও পরিবারের প্রতি তার মূল দায়িত্বগুলো ভুলে যায়। এভাবেই এক গৃহহীন ব্যক্তির অপ্রত্যাশিত প্রজ্ঞায় রক্ষা পেলো একটি সংসার।
আ হ জুবেদ (সম্পাদক অগ্রদৃষ্টি)












