বিশেষ প্রতিনিধিঃ- আজ ২৩ ডিসেম্বর বুধবার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, রাজনীতিক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য, জাতীয় নেতা প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজ্জাক শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
আব্দুর রাজ্জাক স্কুল জীবনে ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন। তখন থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহচর্যে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধের সাংগঠনিক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক, সভাপতিমন্ডলীর সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুজিব নগর সরকারের কর্মকাণ্ড অসামান্য অবদান রাখেন। আব্দুর রাজ্জাক ১৯৭০ সালের নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৭৩, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর নির্বাচনী এলাকা ছিল শরীয়তপুর-৩ (ডামুড্যা-গোসাইরহাট)। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আব্দুর রাজ্জাক সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রী থাকাকালেই ১৯৯৭ সালে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর আগে পঞ্চম জাতীয় সংসদে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। গত জোট সরকারের সময় অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। নবম জাতীয় সংসদে তিনি ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। সংগ্রামমুখর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী আব্দুর রাজ্জাক তাঁর সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বাঙালির স্বাধিকার, স্বাধীনতা, শান্তি ও সামাজিক মুক্তির আন্দোলনে। ছাত্রজীবন থেকে আমৃত্যু তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রথমসারির সংগঠক ও নেতা। তিনি ছিলেন ’৭১-এর ঘাতক দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। একটি উন্নত সমৃদ্ধ সুখী সুন্দর অসা¤প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংগ্রামে প্রয়াত জননেতা আব্দুর রাজ্জাকের অনন্য অবদান বাঙালি জাতি কোনদিন বিস্মৃত হবে না। আব্দুর রাজ্জাকের ৪র্থ মৃত্যবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীতে এক স্মরণ সভার আয়োজন করেছে। সভায় খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম প্রধান অতিথির হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এদিকে শরীয়তপুর ফাউন্ডেশন সকাল সাড়ে ৮ টায় বনানী কবরস্থানে মরহুমের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং সকাল ১১ টায় লালমাটিয়াস্থ শেখ কামাল উচ্চ বিদ্যালয়ে স্মরণ সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। অন্যদিকে মরহুমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগ ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে র্যালি, কাঙ্গালিভোজ ও আলোচনা সভা। এতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।