অগ্রদৃষ্টি ডেস্ক: বাংলাদেশে চলতি বছরের এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফলের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এবার ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে, যাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৬১ জন। গত বছর এই পরীক্ষায় ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ জন।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফল তুলে দেন। এ সময় শিক্ষা বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফলাফল গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পরীক্ষার খাতা দেখার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে, এটা খুবই সময়োপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ বিষয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা সতর্ক হবেন বলে আমার বিশ্বাস। শিক্ষা আমাদের জাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা হচ্ছে মূল হাতিয়ার। আমাদের মেয়েরা সব সময় ভালো করছে। ছেলেদের পড়ালেখায় আরো মনেযোগী হতে হবে। সব সময় সমানে সমান থাকতে হবে। একটু মনোযোগ দিলেই তা সম্ভব।
ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণে মন খারাপ না করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ফলাফল খারাপ করলে মন খারাপ করার কিছু নেই। মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। আগামীতে পড়াশোনা ভালো করে পরীক্ষা দিবে। আবারও পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ছেলে মেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী। তাদের ফেল করার প্রশ্নই উঠে না। আমি চাই আমাদের ছেলে-মেয়েরা শতভাগ পাস করুক। শতভাগ পাস করার কথা আমি মুখে বললেও বাস্তবে তো আর শতভাগ পাস করবে না।
পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে
ফলাফলের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এবার ১০ বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৬১ জন পরীক্ষার্থী। এই সংখ্যা গতবারের চেয়ে পাঁচ হাজার কম। তবে এবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ কিছুটা বেড়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, গত তিন বছর ধরে পরীক্ষার খাতা মুল্যায়নের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় এবার সঠিকভাবে খাতা মু্ল্যায়ন হয়েছে। ১২ শতাংশ খাতা পুনঃমূল্যায়নের প্রেক্ষিতে এবার পাসের হার কমেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় শিক্ষামন্ত্রী সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফলের বিস্তারিত তুলে ধরার জন্য। ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবার শতভাগ পাস করেছে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই হাজার ২৬৬টি। অথচ গত বছর চার হাজার ৭৩৪টি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। এবার সেই সংখ্যা কমেছে দুই হাজার ৪৬৮টি।
অন্যদিকে, কেউ পাস করেনি এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এবার ৯৩টি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৫৩। ফলে এবার কেউ পাস না করা প্রতিষ্ঠান আরো ৪০টি বেড়েছে।গতবারের চেয়ে এ বছর ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পাসের হার বেশি।ফলাফলে আরো দেখা যায়, এ বছর মোট পাস করেছে ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৭২২ জন।এবার সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ২১ ভাগ, মাদ্রাসায় ৭৬ দশমিক ২০ ভাগ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৯ ভাগ।
গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত এসএসসির তত্ত্বীয় এবং ৪ থেকে ১১ মার্চ ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়। এসব পরীক্ষায় প্রায় ১৭ লাখ ৮৬ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নেয়।
সূত্র: পার্সটুডে
অগ্রদৃষ্টি.কম // এমএসআই