এম এস ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ না ফেরার জগতে চলে গেলেন কন্ঠশিল্পী ফরিদা ইয়াসমিন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সাবিনা ইয়াসমিনের বড় বোন ফরিদা ইয়াসমিন ষাটের দশকে গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পান।
শনিবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুর খবরে সংগীতাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ফরিদা ইয়াসমিনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তার মৃত্যুতে অগ্রদৃষ্টি পরিবারও শোকাহত।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যার কারণে দুই সপ্তাহ আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ফরিদা। তিনি স্বামী, দুই ছেলে-সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বড় ছেলে কাজী শাহনূর হোসেন অগ্রদৃষ্টি ডটকমকে বলেন, “মা গত ১৮দিন ধরে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সন্ধ্যা ৬টায় তিনি আমাদেরকে ছেড়ে চলে যান।”
ফরিদা ইয়াসমিনের পৈতৃক বাড়ি সাতক্ষীরায়। নানার বাড়ি মুরশিদাবাদে তিনি জন্ম গ্রহন করেন। এক সময় মা-বাবার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে চলে আসেন। সেখানেই তার গান শেখা শুরু। মায়ের কাছ থেকেও গান শিখেছিলেন। ১৯৫৯ সালে ওস্তাদ মতি মিয়ার কাছে গান শিখতেন ফরিদা। সে বছর তিনি ফরিদাকে ‘এ দেশ তোমার আমার’ ছবিতে গান গাওয়ার জন্য সুযোগ করে দেন। ‘জানি না ফুরায় যদি এই মধুরাতি’ গানটি ছিল ‘রাজা এলো শহরে’ ছবিতে। ফরিদা ইয়াসমিনের গাওয়া এ গানটি তাকে অসম্ভব খ্যাতি এনে দিয়েছিল।
ফরিদা ইয়াসমিনের পাঁচ বোনের মাঝে চার বোনই গান করেছেন। তারা হলেন ফরিদা ইয়াসমিন, ফওজিয়া খান, নীলুফার ইয়াসমিন এবং সাবিনা ইয়াসমিন। ফরিদা যখন দুর্গাপ্রসাদ রায়ের কাছে গান শিখতেন, তখন ছোট্ট সাবিনাও উপস্থিত থাকতেন। ছোট বোনকে গানের ব্যাপারে সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগে সর্বশেষ ফরিদার গাওয়া গান নিয়ে বাজারে আসে একটি অ্যালবাম।
সাবিনার মেয়ে ফাইরুজ ইয়াসমিন অগ্রদৃষ্টি.কম কে জানান, ফরিদার মরদেহ আজ বারডেমে হিমঘরে রাখা হবে। আগামীকাল তার সেগুনবাগিচার বাসায় নেওয়ার পর দাফনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
১৯৬৮ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্র ও রেডিওর গানে ফরিদা ইয়াসমিন ছিলেন জনপ্রিয় নাম। সে সময় আধুনিক বাংলা, উর্দু গান ও গজলে পারদর্শী ছিলেন তিনি। তার জনপ্রিয় গানের তালিকায় উল্লেখযোগ্য- ‘তুমি জীবনে মরণে আমায় আপন করেছো’, ‘জানি না ফুরায় যদি এই মধুরাতি’, ‘তোমার পথে কুসুম ছড়াতে এসেছি’, ‘খুশির নেশায় আজকে বুঝি মাতাল হলাম’ প্রভৃতি।
সেবা প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী ও থ্রিলার সিরিজ ‘মাসুদ রানা’র লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন তার স্বামী। লেখক কাজী মোতাহার হোসেন তার শ্বশুর।
কাজী আনোয়ার হোসেন ও ফরিদা ইয়াসমিনের দুই ছেলে কাজী শাহনূর হোসেন ও কাজী মায়মুর হোসেন লেখালেখি ও সেবা প্রকাশনীর সঙ্গে রয়েছেন।
অগ্রদ্রষ্টি.কম // এমএসআই