এম এস ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধঃ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারীর সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহিষ্কৃত ৫ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহারের আন্দোলনে পুরো স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। গত ১০ দিন যাবত ক্লাশ ও পরীক্ষা বর্জন করে ৫ জন শিক্ষার্থীর অন্যায়ভাবে বহিষ্কারের প্রতিবাদে আন্দোলন করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনুষদ ভবনের সামনে অবস্থান করে আন্দোলন শুরু করেছে।
জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে এক ছাত্রীকে লাঞ্চিত করার প্রতিবাদ করতে যেয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী বদিউজ্জামান বাদলের মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। সর্বশেষ গত শনিবার রিজেন্ট বোর্ডের ৩৩তম সভায় ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে জিন প্রকৌশলী ও জৈবপ্রযুক্তি (জিইবিটি) বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের একজন ছাত্রকে আজীবন, দুজনকে এক বছর করে ও অপর দুজনকে আবাসিক হল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া একজন নিরাপত্তাকর্মী বদিউজ্জামান বাদলকেও চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। পরের দিন রোববার বিষয়টি জানার পর শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আর ক্লাসে ফিরেনি। এই সময়ের মধ্যে ১৬ এপ্রিল ক্যাম্পাসের একটি সেমিনারে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী আসার কথা থাকায় ৫ দিনের জন্যে আন্দোলন স্থগিত রেখেছিল শিক্ষার্থীরা।
আজীবন বহিষ্কৃত ও আন্দোলনকারীদের নেতা জেনেটিক ইঞ্জিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের মো. নাসির উদ্দীন বাদল বলেন, আমি ন্যায়ের পথে থেকে একটি নৈতিক আন্দোলন করে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একজন সন্ত্রাসীকে বাঁচানোর জন্যে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ৫ জন ছাত্রের জীবন নিয়ে খেলছে। আমরা আবার ক্লাসে ফিরে পরীক্ষায় বসতে চাই। দ্রুত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, বদিউজ্জামান বাদল যবিপ্রবির উপাচার্যের ছত্রছায়ায় থেকে একের পর এক অন্যায়ের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলছেন। সে এ পর্যন্ত ৩ বার পতিতাসহ ধরা পড়েছে। তার বিরুদ্ধে নারীর সাথে অশ্লীল কাজ, মাদক চালনসহ ৪টি মামলা রয়েছে। সে ক্যাম্পাসে সকল ধরণে অন্যায় কাজ করে যাচ্ছে। তারস্থায়ী বহিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা আজ সকাল থেকে অনশন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করছি।
বাদল আরও বলেন, কিছুক্ষণ আগে কর্মচারীদের নিয়ে বাদল ক্যাম্পাসের ভিতরে মিছিল করেছে। তাকে পুরোপুরিভাবে উপাচার্য সহযোগিতা করছে।
সাধারন শিক্ষার্থীরা জানান, যবিপ্রবিতে কোন ধরনের সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। কোন সাংবাদিক ক্যামেরা নিয়ে সেখানে প্রবেশ করলে তাদের লাঞ্ছিত করে ক্যামেরাসহ সব কিছু ছিনিয়ে নেয়া হয়। আর এটি নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা কোন ধরনের নিউজ করছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পরিষদের সেক্রেটারি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কোন ধরনের লিখিত অভিযোগ নেই। মৃত মানুষের বিরুদ্ধে যেমন কোন অভিযোগ থাকে না আমার ক্ষেত্রে তাই হয়েছে।
যবিপ্রবির উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তারের মোবাইল নম্বরে কয়েক দফা ফোন দিয়ে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
অগ্রদৃষ্টি.কম // এমএসআই