ডেস্ক নিউজ : সরকারী বিধিনিষেধের কারণে আজ ৭ নভেম্বর ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবসে’ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি স্থগিত করেছে বিএনপি।
সংসদ ভবন এলাকায় কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সের কারণে জিয়াউর রহমানের সমাধি প্রাঙ্গণে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এছাড়া, বিভিন্ন জেলায়ও মিছিল-সমাবেশ করতে গিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বাঁধার শিকার হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে জাতীয় সংহতি অর্জিত হয়েছিল দাবি করে বিএনপি এ দিবসটিকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। তবে, আওয়ামী লীগ দিবসটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে।
আজকেও আওয়ামীলীগ সমর্থক জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ ও জয়বাংলা মঞ্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের অয়োজন করে ৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যার সাথে জেনারেল জিয়াউর রহমান জড়িত বলে দাবি করে তার মরণোত্তর বিচারের দাবি জানিয়েছে।
এদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, ৭ নভেম্বর উপলক্ষে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা নিবেদনে বাধা দিতে সরকার ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এটা সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ ।
মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আমাদেরকে নতুন করে শপথ নিতে হবে। জনতা আজ যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তাতে অপশক্তির পরাজয় হবেই। আগামী দিনে জনতার বিজয় হবে।
ওদিকে, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশ কর্মসূচি পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। পূর্বঘোষিত ৮ নভেম্বরের পরিবর্তে এবার ১১ নভেম্বর সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে নতুন করে প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। ঢাকায় কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) সম্মেলন চলার কারণে সমাবেশের তারিখ পেছানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি।
অপরদিকে, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ৭ নভেম্বরের চেতনায় সব জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
দিবসটি পালন উপলক্ষে আজ দেশের বিভিন্ন জেলায় মিছিল- সমাবেশ করতে গিয়ে পুলিশ ও সরকারী দলের বাধার মুখে পড়েছে বিএনপি নেতা-কর্মিরা।
সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পরেও পুলিশের বাধার কারণে ফরিদপুরে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে র্যালি বের করতে পারেনি জেলা বিএনপি। তবে বেলা ১১টার দিকে জেলা বিএনপির একাংশ ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে একটি ঝটিকা মিছিল বের করে।
জেলা বিএনপির সাংগঠনকি সম্পাদক রশিদুল ইসলাম লিটন জানান, বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জেলা বিএনপির পক্ষ হতে দেড় হাজার ক্যাপসহ ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও ব্যানার ছাপানো হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের জন্য একাধিকবার প্রশাসনের নিকট আবেদন করেছি। কিন্তু আমাদের কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হয়নি।
দক্ষিনের সমুদ্র উপকূলীয় জেলা বরগুনার বামনা উপজেলায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিএনপির শেআভাযাত্রায় হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার সকাল ৯ টার দিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আযাদ রানা ও সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলীর নেতৃত্বে মিছিলটি উপজেলা সদর প্রদক্ষিণকালে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা অতর্কিত এ হামলা চালালে ১৫/২০ জন আহত হয়। এর মধ্যে থানা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আযাদ রানাসহ ৪জন গুরুতর আহত হয়েছেন। (পার্সটুডে)